Sylhet View 24 PRINT

রাবি শিক্ষক হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসির আদেশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-১৬ ০১:১২:৪৭

রাবি প্রতিনিধি :: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর আট আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
 
সোমবার দুপুরে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বিচারক অনুপ কুমার রায় এ রায় ঘোষণা করেন।

দ-প্রাপ্তরা হলেন- আব্দুস সামাদ পিন্টু, আরিফুল ইসলাম মানিক ও লুৎফুর ইসলাম সবুজ। এর মধ্যে সবুজ পলাতক রয়েছেন। আর খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আক্তার রেশমা, সিরাজুল ইসলাম কালু, আল-মামুন, সাগর, জিন্নাত আলী, ইব্রাহীম খলীল ও আরিফ।

রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বলেন, ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর ররাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ড. শফিউল ইসলাম লিলনকে। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর ড. শফিউল ইসলামকে ধর্ম অবমাননাকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাকে হত্যার দায় স্বীকার করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২। ফেসবুক পেজে এই হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে বিবৃতিও দেয় সংগঠনটি। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়নি পুলিশ।

তদন্ত শেষে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এই মামলার চার্জশিটে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখায় কর্মরত নাসরিন আখতার রেশমার সঙ্গে শফিউল ইসলামের দ্বন্দের জের ধরেই তার স্বামী যুবদল নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু অন্যদের নিয়ে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছেন। পরে রেশমাও বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

হত্যাকা-ে জড়িত সন্দেহে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর যুবদল নেতা আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ছয়জনকে ঢাকা থেকে আটক করে র‌্যাব। পরে পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আখতার রেশমাকে আটক করে গোয়েন্দা শাখা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে রেশমা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ঘটনার এক বছর পর ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা শাখা পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক রেজাউস সাদিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এতে রাজশাহী জেলা যুবদলের তৎকালীন আহ্বায়ক জেলা বিএনপির বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জলসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার একজন ছাড়া বাকি ১০ আসামি জামিনে ছিলেন।

চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল, আব্দুস সামাদ পিন্টু, পিন্টুর স্ত্রী নাসরিন আক্তার রেশমা, যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম মানিক, লুৎফুল ইসলাম সবুজ, সিরাজুল ইসলাম কালু, আল-মামুন, সাগর, জিন্নাত আলী, ইব্রাহীম খলীল ও আরিফ।

গত ১৩ মার্চ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। মামলায় মোট ৩৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আদালতে যুক্তি উপস্থাপন করে হত্যাকা-ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানান। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, মামলায় আসামিরা জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

ফলে রায়ে আসামিরা বেকসুর খালাস পাওয়ার দাবি রাখে। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১৫ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন রাজশাহী দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. একরামুল হক, মিজানুল ইসলাম, আবু বাক্কার, রাইসুল ইসলাম ও আব্দুল মালেক রানা।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.