আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এরশাদ শিকদারের নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৬-১২-১৫ ০০:০১:৩০

খুলনার একসময়ের মূর্তিমান আতঙ্ক এরশাদ শিকদারের নামে এখনও চলছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এরশাদ শিকদারের ঘাট হিসেবে পরিচিত নগরীর ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে সে। রেলওয়ের ৪৯ শতক জমির ওপর নির্মিত বিদ্যালয়টির নাম দেওয়া হয় ‘এরশাদ আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়’। ২০০৪ সালের ১০ মে এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর হলেও বিদ্যালয়টি নাম পরিবর্তন করা হয়নি।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে নির্মিত বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি বেসরকারি রেজিস্টার্ড বিদ্যালয়ে অনুমোদন পায়। ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি সরকারীকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় আড়াইশ’ শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক রয়েছেন। তবে একজন কুখ্যাত ব্যক্তির নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে অভিভাবক ও নগরবাসীর মাঝে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুলের একতলা ভবনের গায়ে বড় বড় অক্ষরে ‘এরশাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নাম লেখা। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বা ইতিহাস জানতে চাইলে তারা কিছুই বলতে পারে না।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারভীন জাহান জানান, সরকারীকরণ হওয়ার আগে স্কুলের নাম পরিবর্তন করতে হলে সরকারি কোষাগারে আনুমানিক তিন লাখ টাকা জমা দেওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে আবেদন করতে হতো। সরকারি হওয়ায় পরে নাম পরিবর্তন করতে আইনি বিধান রয়েছে কি-না, তা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে হবে।

জানা গেছে, এরশাদ শিকদারের জন্ম ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। তার বাবার নাম বন্দে আলী। ১৯৬৬-৬৭ সালে সে তার জন্মস্থান নলছিটি থেকে খুলনায় চলে আসে। ১৯৭৬-৭৭ সালে সে ‘রামদা বাহিনী’ নামে একটি দল গঠন করে, যারা খুলনা রেলস্টেশন ও ঘাট এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকত। এই রামদা বাহিনী নিয়েই ১৯৮২ সালে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট এলাকা দখল করে এরশাদ শিকদার। ১৯৮২ সালে সে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে খুলনা সিটি করপোরেশনের তৎকালীন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (বর্তমান ২১ নম্বর ওয়ার্ড) কমিশনার নির্বাচিত হয়। ১৯৯১ সালে এরশাদ শিকদার বিএনপিতে যোগ দেয়। ১৯৯৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগে যোগদান করে। কিন্তু কিছুদিন পরই দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার হয় এরশাদ শিকদার। তখন তার নামে ৪৩টি মামলা বিচারাধীন ছিল। এর অধিকাংশই হত্যা মামলা। নিম্ন আদালতের বিচারে সাতটি হত্যা মামলায় তার ফাঁসি ও চারটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন