আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কীভাবে তৈরি হয় জাল টাকা, কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে বাজারে?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৬-১১-২৯ ০০:১৪:৩৭

জাল নোটের সমস্যা এই দেশে আজকের নয়। ইন্টালিজেন্স ব্যুরো এবং র’-এর প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে প্রতি বছর ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রবেশ করত জাল নোটে। গড়ে প্রতি ১০ লাখ নোটে ২৫০টি জাল নোট থাকত। মোট জাল নোটের মধ্যে ৫০ শতাংশ হত ১০০০ টাকার নোট।

প্রশ্ন হল, এই সমস্ত জাল নোট কোথায় কীভাবে তৈরি হত, এবং কীভাবেই বা সেগুলি ভারতীয় অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়ত? সেই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছে আইবি এবং র’। জানা যাচ্ছে, জাল নোট তৈরি ও ছড়ানোর কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করত পাকিস্তান। পাকিস্তানের মিলিটারি স্পাই এজেন্সি, এবং আইএস পরিচালনা করত জাল নোট চক্র।

জাল নোট তৈরির ক্ষেত্রে তারা যে ধরনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করত, তা অবিশ্বাস্য।

বিশ্বমানের কাগজ, ছাপার কালি, জলছাপ তৈরির যন্ত্র এবং ছাপার মেশিনকে কাজে লাগানো হত। এই সমস্ত প্রযুক্তির সহায়তায় যে নোটগুলি তৈরি করা হত, সেগুলির সঙ্গে আসল নোটের পার্থক্য অতি সামান্য।

একমাত্র বিশেষজ্ঞরা বিশেষ গোলাপি আলোর নীচে নোটগুলিকে ধরলে বুঝতে পারতেন যে, নোটগুলি জাল।এক একটি ১০০০ টাকার নোট ছাপতে খরচ হত ভারতীয় মুদ্রায় ৩৯ টাকার মতো। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একটি ১০০০ টাকার নোট ছাপতে আরবিআই-এর খরচ হত ২৯ টাকা। তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে ১০০০ টাকার একটি জাল নোট বিক্রি হত ৩৫০-৪০০ টাকায়।

নেপাল ও বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে সেই নোট ঢুকত ভারতের বাজারে।জাল টাকা রোধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে তৈরি করা হয়েছিল ফেক নোটস কোঅর্ডিনেশন (এফকর্ড), এবং টেরর ফান্ডিং অ্যান্ড ফেক কারেন্সি সেল (টিএফএসসি)-র মতো সংস্থা। এছাড়া এই বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের মৌ স্বাক্ষরও হয়েছিল।

বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জাল নোট যাতে ভারতে প্রবেশ না করে, সেই ব্যাপারে তারা উদ্যোগী হবে। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভারতে প্রচলিত জাল নোটের মাত্র এক তৃতীয়াংশই গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত করতে পারতেন।জাল নোটের বাড়বাড়ন্ত রোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতিপূর্বে সফল হয়নি দেখেই এবার চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বাতিল করে দিলেন পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের পরে একেবারে পথে বসেছে পাকিস্তানে স্থিত ভারতীয় জাল নোট তৈরির কেন্দ্রগুলি।

-এবেলা

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন