আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

ফাহমির সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেন মিথিলা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১১-০৮ ১৮:৪৩:৩৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: অভিনয় শিল্পী এবং উন্নয়নকর্মী রাফিয়াথ রশীদ মিথিলা ও পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির ব্যক্তিগত মুহূর্তের কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়া ও বিনোদন পাড়ায় তোলপাড় চলছে কয়েকদিন ধরে।

ফাহমি-মিথিলার মোট ১৮টি ব্যক্তিগত ছবি অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইউটিউবে। এসব নিয়ে বিব্রত মিথিলা প্রথমে চুপ থাকলেও পরে সরব হয়েছেন। ফাহমির সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুক থেকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে মিথিলা জানিয়েছেন, ২০১৭-২০১৮ সালের দিকে পরিচালক ফাহমির সঙ্গে তার ‘প্রণয়ের সম্পর্ক’ গড়ে উঠে। তখনই এই ছবি বা ভিডিও করা হয়।

তিনি এটাও স্বীকার করেছেন, ব্যক্তিগত নথি নিজে সংরক্ষণ না করতে পারাও তার ব্যর্থতা।

ফাহমির ফেসবুক হ্যাকড হওয়ার কারণে মেসেঞ্জার থেকে এসব ছবি চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিথিলা।

এদিকে ব্যক্তিগত ছবিগুলো ফাঁস হওয়ায় আইনি পদক্ষেপও নিয়েছেন সুদর্শনী এ অভিনেত্রী। সাইবার অপরাধ বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করেছেন তিনি।

ফেসবুকে পোস্টে মিথিলা লিখেছেন, ‘কী ঘটেছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে আসিনি। বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার কিছু ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে যা হয়েছে, সেই সম্পর্কে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাই। এসব ছবির কিছু বাস্তব, কিছু মনগড়া। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কিছু অপরাধী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এগুলো অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।’

২০১৭-১৮ সালে ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে মিথিলার সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক থাকাকালের কিছু ছবি ফাঁস হয়েছে। সম্পর্কের কথা স্বীকার করে মিথিলা লেখেন- ‘ফাহমির ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক হয়েছিল। তখনই অপরাধীরা খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এগুলো খুঁজে নিয়েছে। এখানে ডেটিং শব্দটির ওপর জোর দিতে চাই, যার অর্থ আমরা একটি সম্পর্কে ছিলাম। সহজভাবে বললে- দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে জড়ালে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটায়, ছবি তোলে। প্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এগুলো ভাগ করে নেয়। তবে নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারার দায় আমারই।’

তবে এসব ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মোটেও বিব্রত নন মিথিলা। পোস্টে তা সাফ জানিয়ে দিয়ে লিখেছেন- ‘আমার লজ্জা লাগছে এই ভেবে, দেশের কিছু কুৎসিত লোক আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইচ্ছেমতো পোস্ট, শেয়ার ও ব্যবহারের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে। আমার খ্যাতি ও ভাবমূর্তিকে অসম্মান করে তারা সাবস্ক্রিপশন বাড়াচ্ছে ও নানান খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

মিডিয়াকে দোষারোপ করে এই অভিনেত্রী লেখেন- ‘আমাকে কার্যত ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমার লজ্জা হয় সেসব মিডিয়ার জন্য, বিশেষ করে কয়েকটি নিউজ পোর্টাল আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে উদ্ধৃত করে এই খবর প্রকাশ করেছে। অথচ আমি এ নিয়ে কখনই কথা বলিনি বা কোনো বক্তব্য দিইনি। ঘরে-বাইরে, ভার্চুয়াল জগতসহ সর্বত্র যেকোনো জায়গায় নারীদের যৌন হেনস্তা করা হলে একইভাবে লজ্জিত ও ক্ষিপ্ত হই।’

নিজের অর্জনগুলো সামনে এনে মিথিলা লেখেন- ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার সম্মান ও মর্যাদা শুধু আমার আকার আর পোশাকের কিংবা ব্যক্তিগত ছবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনে কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শিক্ষার মাধ্যমে সব অর্জন করেছি। আমার অতীতের ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো চুরি করে কিছু অপরাধীর কুকর্মের কারণে এসব ভেঙে যাওয়ার মতো ঠুনকো নয়।’

নিজেকে শান্ত রাখতে ও ইতিবাচক মনোভাবের ওপর জোর দিতেই গত ২৪ ঘণ্টা ফাঁস হওয়া ছবি নিয়ে মুখ খোলেননি বলে জানান মিথিলা। তার আশা ছিল, এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারবেন। তবে যেসব ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও অনলাইন পোর্টাল অনুমতি ছাড়া ফাঁস হওয়া ছবিসহ খবর প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ জানানোর তথ্য দিয়ে মিথিলা হুশিয়ার করেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় যারা আমার মান-সম্মান নিয়ে খেলেছে, সেই দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে ছাড়ব। শপথ করছি, নিজের জন্য এবং হ্যাকার ও সাইবার অপরাধীদের শিকার হওয়া সবার জন্য লড়ব।’

সবশেষে দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মিথিলা। যদিও মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত সোমবার রাতে ফেসবুকের একটি গ্রুপ থেকে নির্মাতা ও পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে মিথিলার অন্তরঙ্গ ছবি পোস্ট করা হয়। এর পর রাতেই ছবিটি ভাইরাল হয়ে পড়ে।

সকালে এ দুই শোবিজ তারকার একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট হতে থাকে। ছবিগুলো নিয়ে দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে বিনোদন অঙ্গনকে নাড়া দেয়। এ নিয়ে শোবিজের অনেক তারকাই তাদের মত ব্যক্ত করেছেন। অনেকে মিথিলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকে প্রতিবাদ করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট ভালোবেসে সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসানকে বিয়ে করেন মিথিলা। তাদের সংসারে আইরা তেহরীম খান নামে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে দুজনের বনিবনা না হওয়ায় ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিচ্ছেদে যান তারা।

পরে কলকাতার পরিচালক সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে একাধিকবার মিথিলাকে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। তবে বিষয়টি নিছক গুঞ্জন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মিথিলা।


সৌজন্যে : যুগান্তর
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৮ নভেম্বর ২০১৯/জিএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন