Sylhet View 24 PRINT

বলিউডের ‘ব্যাড ম্যান’কে ডিভোর্স দিয়ে তারই সেক্রেটারিকে বিয়ে করেন স্ত্রী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১১-২১ ১৯:০৯:১৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: চ্যালেঞ্জ নিয়ে মা-বাবার কাছ থেকে দুই মাসের সময় নিয়েছিলেন। এ দুই মাসে হয় তারকা হবেন, না হলে বাড়ি ফিরে কোনো চাকরি করবেন। কিন্তু দুই মাস তো দূর, মাসের পর মাস দরজায় দরজায় ঘুরেও কিছু করে উঠতে পারেননি।

বরং অসুস্থ শরীরে বাড়িই ফিরে যেতে হযেছিল তাকে। তারকা হওয়ার বদলে বাড়ি বাড়ি সাবান-ফিনাইল বেচতে শুরু করলেন। কিন্তু সেখান থেকেই ফের ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। বলিউডের সীমা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেলেন হলিউডেও।

তিনি বলিউডের ‘ব্যাড ম্যান’ গুলশন গ্রোভার। দ্বিতীয় বারের জন্য মুম্বাই আসার পর আর বাড়ি ফিরে যেতে হয়নি তাকে। ৪০ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে চলেছেন তিনি। গুলশনের জন্ম রাওয়ালপিন্ডিতে। স্বাধীনতার পর পরিবারের সঙ্গে দিল্লিতে এসে পৌঁছান গুলশন। দিল্লিরই একটি সরকারি স্কুলে পড়াশোনা তারা। বাবার কাপড়ের দোকান ছিলো।

পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না তাদের। পড়াশোনার ফাঁকে বাবার কাপড়ের দোকানেও টুকটাক কাজ করতেন গুলশন। অবসর সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাবান এবং ফিনাইলও বেচতেন তিনি। পড়াশোনাতে বরাবরই ভালো ছিলেন তিনি। দ্বাদশের পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করেছিলেন। এর পর তিনি দিল্লির শ্রীরাম কলেজে ভর্তি হয়ে যান।

বরাবর অভিনয়ে ঝোঁক ছিলো তার। কলেজের নাটকে তিনি অভিনয় করতে শুরু করেন। এমনকি কলেজের সাংস্কৃতিক সম্পাদকও হয়ে যান। স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনার সময় গুলশন ঠিক করে ফেলেন মুম্বাই আসার। মা-বাবার আপত্তি সত্ত্বেও তিনি দিল্লি থেকে মুম্বাই পাড়ি দেন। শর্ত ছিল দুই মাস চেষ্টা করবেন। যদি এর মধ্যে কিছু করে উঠতে না পারেন তা হলে বাড়ি ফিরে কোনো না কোনো চাকরিতে যোগ দেবেন।

কিন্তু মুম্বাইয়ে গিয়ে শরীর খুবই খারাপ হয়ে যায় তার। দিনের পর দিন মুম্বাইয়ে ঘুরে বেড়িয়েও কোনো কাজ পাননি। সঙ্গে আনা টাকাও ফুরিয়ে গিয়েছিল। ফলে দিনের পর দিন না খেয়েই কাটাতে হয়েছে তাকে। বাধ্য হয়েই দিল্লিতে ফিরে আসেন তিনি।

কিন্তু অভিনয় যার রক্তে রয়েছে, অর্থাভাব তাকে রুখতে পারে কি! দিল্লিতে কিছুতেই তাই মন বসছিলো না তার। তিনি ফের মুম্বাই চলে আসেন। তবে এবারে আর ফিরতে হয়নি। মুম্বাইয়ে এসেই গুলশন প্রথমে একটি অভিনয় স্কুলে ভর্তি হয়ে যান। ক্লাসে গুলশন সবচেয়ে আগে আসতেন এবং সবচেয়ে শেষে ক্লাস থেকে বেরতেন। পরবর্তীকালে ওই স্কুলেরই শিক্ষকতা শুরু করেন গুলশন। সেখান থেকেই তার কেরিয়ার শুরু।

গোবিন্দ, সঞ্জয় দত্তের মতো অভিনেতারাও এই স্কুলে গুলশনের কাছ থেকেই অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এ রকমই এক দিন স্কুলে ছেলের অভিনয় দেখতে এসেছিলেন সুনীল দত্ত। গুলশনের কাজ দেখে তার এতোটাই পছন্দ হয়ে গিয়েছিলো যে ফিল্ম ‘রকি’তে সঞ্জয়ের সঙ্গে গুলশনকেও কাস্ট করেন তিনি।

এর আগে ‘বুলন্দি’ এবং ‘হম পঞ্চ’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন গুলশন। ধীরে ধীরে তার অভিনয় দর্শকদের এতোটাই পছন্দ হয় যে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাকে হয়নি। বলিউডে ৪ শতাধিক ফিল্মে অভিনয় করেছেন গুলশন। তিনিই প্রথম কমার্শিয়াল ফিল্ম অভিনেতা যিনি হলিউডে সুযোগ পান।

কেরিয়ারের মতো গুলশনের ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক ওঠাপড়া রয়েছে। গুলশনের প্রথম স্ত্রী ফিলোমিনা বিয়ের ৩ বছর পরই তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন। সে সময় গুলশনের সেক্রেটারি ছিলেন অভিনেত্রী মন্দাকিনীর ভাই। গুলশনের সেক্রেটারির সঙ্গেই ফিলোমিনা বিয়ে করে লন্ডনে রয়েছেন এখন। তবে প্রথম পক্ষের এক ছেলে সঞ্জয় বাবা গুলশনের কাছেই থাকেন।

২০০১ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন গুলশন। সেই বিয়েও টেকেনি। এক বছরের মধ্যে ফের ডিভোর্স হয় তাদের। তার পর আর বিয়ে করেননি গুলশন।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/২১ নভেম্বর ২০২০ /আনন্দবাজার পত্রিকা /জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.