আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

আবহাওয়ার পরিবর্তনে বায়ুবাহিত রোগ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১১-০৬ ০১:০৪:৪১

আবহাওয়ায় শুরু হয়েছে ঋতু পরিবর্তনের খেলা। দিনের বেলা গরম থাকলেও রাতের শেষে আবহাওয়ায় অনুভূত হচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।

তাই এ পরিবর্তনে সবাইকে একটু সতর্ক হতে হবে। নিতে হবে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন। এ ছাড়া এ সময়টাতে বায়ুবাহিত বা ফুসফুসের রোগই বেশি পরিলক্ষিত। যেমন— শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বা এআরআই, সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা। এ ছাড়া  শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অ্যালার্জিক রোগ। যেমন : অ্যাজমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস।
জলবসন্ত : এক ধরনের ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি করে। এটি একটি সংক্রমক রোগ। এ রোগের আক্রমণের ফলে রোগী কষ্ট পায় কিন্তু এতে খুব একটা মৃত্যুঝুঁকি নেই।

লক্ষণসমূহ : গায়ে অল্প অল্প জ্বর ও প্রচণ্ড ব্যথা।

২-৩ দিন পর প্রথমে বুকে ও পিঠে গুটি বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়। আস্তে আস্তে সারা দেহে গুটি বের হয়, গুটি নরম ও এর ভিতর পানির মতো এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে। কয়েক দিনের মধ্যে গুটি বা ফুসকুড়িগুলো বেশ চুলকায়। এ সময় নখ দিয়ে ফুসকুড়ি চুলকানো উচিত নয়। এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

প্রতিরোধ : রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে। রোগীর ব্যবহার করা থালাবাসন, বিছানাপত্র অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। রোগীর ব্যবহার করা বিছানাপত্র সোডামিশ্রিত পানিতে সিদ্ধ করে জীবাণুমুক্ত  করতে হবে। সুস্থ হওয়ার  পরও দু-তিন সপ্তাহ  বাইরে যাওয়া  উচিত নয়।

যক্ষ্মা : একে টিবি বা যক্ষ্মা বলা হয়। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এ রোগ সৃষ্টি করে।

লক্ষণ : তিন সপ্তাহের বেশি সময় পর্যন্ত কাশি হয়, বিকালের দিকে অল্প অল্প জ্বর ও রাতে ঘাম হয়, ক্রমাগত ওজন কমে যায় ও শরীর দুর্বল হতে থাকে, বুকে ও পিঠের উপরের দিকে ব্যথা হয়, রোগ বেড়ে গেলে কাশির সঙ্গে রক্ত বের হয়।

প্রতিকার : উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যক্ষ্মা রোগীর প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করালে ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। আক্রান্ত রোগীকে আলো-বাতাসপূর্ণ আলাদা ঘরে রাখতে  হবে। যেখানে সেখানে কফ বা থুথু ফেলা যাবে না। রোগীর  কফ বা থুথু মুখবন্ধ কৌটায় ফেলতে হবে এবং এগুলো মাটিচাপা দিতে হবে। এ রোগে ৬ মাস বা তারও বেশি সময় পর্যন্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ওষুধ ছাড়া যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা নিয়মিতভাবে চেকআপ করাতে হবে এবং ধৈর্যসহকারে চিকিৎসা নিতে হবে। প্রতিকার নয়, প্রতিরোধ সর্বদাই উত্তম।

অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা মালিবাগ, ঢাকা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন