আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

নতুন বইয়ের আনন্দে পুরাতন কষ্ট

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০১-০৯ ২২:১৯:৩৮

ফরিদ উদ্দিন, ফেঞ্চুগঞ্জ প্রতিনিধি ::  জীবন তাদের বরাবরই একরকম। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থায় প্রতিদিন জীবন যুদ্ধ চলে। স্কুলে যাওয়া লেখাপড়ার চেয়ে পেটের ক্ষুধা সামাল দেওয়াই কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

ঈদ পূজা সবই এক, আলাদা কিছু নাই। আনন্দ বলতে বছরে স্কুলে নতুন বই পাওয়া। এই নতুন বইয়ের ঘ্রান ঝকঝকে পাতার ঘ্রানে এরা অসীম আনন্দে এরা বছরে এই একবারই হাসে। সেই হাসির সাথে হাসে অক্ষম বাবা ও পরিবার।

কিন্তু আবার নতুন স্কুল, নতুন জামা আর খাতাকলম? এ ভাবনায় অসহায় বাবারা মুখ লুকান লজ্জায় আর ব্যর্থতায়। সুবিধাবঞ্চিত  ছোট ছোট শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে দল বেধে পুকুর পাড়ে জড়ো হয়ে দেখে নতুন বই। বইয়ের পাতায় দেখে নতুন স্বপ্ন। বইয়ের পাতা ছুঁয়ে দিয়ে সেও স্বপ্ন দেখে একদিন এরকম বই লিখবে। এমন দৃশ্যে আড়াল থেকে চোখের জল ফেলেন মা। তিনি জানেন শিশুটি ঘরে ফিরে খাবার চাইবে কিন্তু চুলা ধরানোও অনিশ্চিত!!

এরকম স্বপ্ন আর স্বপ্নভাঙ্গার অবস্থা সারা দেশেই বিদ্যমান। কিন্তু কোমলমতি দেশের ভবিষ্যৎরা কি করবে,  বারবার কি ঝরে যাবে মেধা? প্রত্যয়? বই বিনামূল্যে পাওয়া গেল বটে কিন্তু অন্যান্য খরচের ভার পঙ্গু বাবা নেবে কিভাবে? এই মেধাবীদের সম্পুর্ন দায়িত্ব কি সরকার নিতে পারে না?

রাজনৈতিক মিছিল আয়োজনের খরচের একটা অংশ বা সরকারি মিটিংয়ের মিনারেল ওয়াটারের খালি বোতল বিক্রি করলেও বিনামূল্যে পাওয়া বইগুলো মূল্যবান হয়ে উঠে। আছে সামাজিক দায়িত্ব, লক্ষ লক্ষ টাকার ভোজে আয়োজনের খুচরো টাকাটা দিয়ে এরকম সুবিধাবঞ্চিত শিশু শিক্ষার্থীরা মেধা বিকাশ করতে পারে। আমরা যারা বিলাসী। আমাদের বিলাসী একটা গ্রীলড মোরগের দামে একটা শিক্ষার্থীর দুই মাসের খাতা কলম হয়ে যায়। শুধু তাই নয় সেই সাথে দুশ্চিন্তা লজ্জা থেকে বেঁচে যাবে পঙ্গু অসহায় বাবা। নিরুপায় গর্ভধারিণী আর কিংকর্তব্যবিমূঢ় ভাইটি ।

আসুন দেখি আর খুঁজি সেই আনন্দিত পুকুর পাড়ে তাদের আনন্দে শরিক হই। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলি- এই যে তোমার খাতা কলম।

এ আনন্দঘন ছবি তুলেছেন-
মো. শহিদুর রহমান রুমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও
প্যানেল চেয়ারম্যান (০১)
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন