আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং
মুনজের আহমদ চৌধুরী :: বাংলাদেশী কোন এয়ারলাইনের ইতিহাসে এটিই ভয়াবহতম বিমান দুর্ঘটনা। ফ্লাইটটিতে সিলেটের রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজের অন্তত ১১ নেপালী শিক্ষার্থী ছিলেন। যারা ছুটি কাটাতে নেপাল যাচ্ছিলেন। এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৫ যাত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে অার্ন্তজাতিক গনমাধ্যমগুলো। অবস্থান ও অাবহাওয়াগত কারনে নেপালের একমাত্র অার্ন্তজাতিক বিমানবন্দর ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট বহু প্রানহানি অার দুর্ঘটনার করুন সাক্ষী। ইউএস বাংলার ড্যাস একটি এয়ারক্রাফট এর আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তবে তখন প্রানহানির ঘটনা ঘটেনি।
এর অাগে ১৯৮৪ সালের ৫ই আগষ্ট বাংলাদেশ বিমানের ফকার এফ২৭-৬০০ মডেলের ছোট বিমানটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌছানর পথে শাহজালাল বিমান বন্দরের খুব কাছেই বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানের আভ্যন্তরীন সে ফ্লাইটের ৪৫ জন যাত্রী এবং ৪জন ক্রুর সকলেই নিহত হন। প্লেনটি চালাচ্ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পাইলট কানিজ ফাতেমা রোকসানা। অার অাজকের দুর্ঘটনায় যাত্রীদের সাথে মারা গেছেন ইউএস বাংলার এ ফ্লাইটটির ফাষ্ট অফিসার বাংলাদেশের অারেক নারী পাইলট পৃথূলা রশীদ।
অাজকের নেপালের দুর্ঘটনার ধরন অার ১৯৮৪ সালের সে দুর্ঘটনার অনেক দুঃখজনক মিল।
ধারনা করি, ইউএস বাংলার বিমানটি যান্ত্রিক বা এয়ারপোর্ট কতৃপক্ষের সিগন্যালের কোন ত্রুটি বা সমন্বয়হীনতার কারনে অবতরনের অাগমুহুর্তে পাইলটের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। কারন ত্রিভূবন এয়ারপোর্টের কন্ট্রোল রুম থেকে এয়ারক্রাফটিকে রানওয়ের দক্ষিন দিক থেকে অবতরনের ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়। এখনো সেটাই বলছেন ত্রিভূবন বিমানবন্দর কতৃপক্ষ।
কিন্তু সে সিগন্যাল উপেক্ষা করে রানওয়ের উত্তর অংশে জরুরী অবতরনের চেষ্টা করেন পাইলট পৃথূলা রশীদ। হয়ত এয়ারক্রাফটির গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকা, নোজ হুইল কাজ না করা বা অন্য কোন কারনে এয়ারক্রাফটটি অাছড়ে পড়ে পাশের ফুটবল মাঠে। সঙ্গে সঙ্গে অাগুন লাগে। ভয়াল অাগুন মুহূর্তেই পুড়িয়ে দেয় জীবনগুলির সব সপ্ন।
কেন পাইলটকে উল্টো দিক থেকে জরুরী অবতরনের চেষ্টা করতে হল সে প্রশ্নের উত্তর মিললে জানা যাবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারন। ব্লাকবক্সটি উদ্ধার হয়েছে।
পৃথূলার খুব সপ্ন ছিল অাকাশে উড়বার। উড়েছিলও অাদুরে মেয়েটা। শুধু অাকাশ পাখিটার অার মায়ের কাছে ফেরা হল না...
(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)