আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং
মুনজের আহমদ চৌধুরী :: গভীর অাদরের জায়গাগুলো ঢাকা পড়ে যাচ্ছে স্থুল যৌনতায়। লাভ,ডার্লিং থেকে বেবী। প্রেমিকা শুধুমাত্র যৌনতার খেলনা বা টয় হয়ে যাচ্ছে। অাবার চেতনে বা অবচেতনে প্রেমিকাকে সল্প বয়সের দামে মাপবার অনুসঙ্গ থাকছে। প্রেমিকা খেলনা হবার মধ্য দিয়ে বন্ধনগুলো খেলো হচ্ছে,সম্পর্কগুলি পবিত্রতা অার পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ হারাচ্ছে। অামরা এখন কেবল সস্তার মধ্যে সুন্দরের উজ্জলতা উপভোগ করতে উৎগ্রীব।
মানিক বন্দ্যোপধ্যায় তাঁর এক লেখায় লিখেছিলেন,\\\\\\\" কবিতার মজুরীতে কবি বাচেঁ না\\\\\\\" । এখনও এখানকার শিল্পস্রষ্টাদের অনেককে শিল্পের মজুরী বাচাঁতে পারে না। বাচঁবার মজুরীর জন্য তাকেঁ অন্যত্র জীবিকা খুঁজতে হয়। এখানেই শিল্পবোধ সম্পন্ন অন্য পেশায় জীবিকা খুজঁতে যাওয়া জীবনের মূল ব্যার্থতা। অামার ব্যার্থতাও একই জায়গায়। ব্যর্থতা থেকে যায় সামাজিক অসঙ্গতির বেদনাবহ দৃশ্যপট একের পর এক দেখতে থাকায়।
সহজ চলা অার বলার দিন গেছে বাড়ি,এখন অামরা কেবল কাটা-কাটি খেলি।
নামাজের জন্য এসিওয়ালা মসজিদ, বাচ্চার লেখাপড়ার জন্য ফাইভ ষ্টার হোটেলের সুবিধাসম্পন্ন ক্লাসরুম দরকার এখনকার মধ্যবিত্তের। সন্তানকে রিসোর্টসম স্কুলে পাঠিয়ে শ্রেনীকক্ষে পড়ার চেয়েও ষ্টাটাস অার সোসাইটির ক্লাস সেন্সের শিক্ষা দিতে চাই এ সময়ের অাধুনিক মানুষেরা।
সংকটের শুরু এখানেই। অদ্ভুত সব বৈপরীত্য কী অবলীলায় ধারন করি অামরা।
অাবার সম্পর্কের ক্ষেত্রে অাত্মিক গভীরতার জায়গার খাদঁগুলোতে ঢুকে যাচ্ছে স্বার্থপরতা। অথচ যেখানে থাকবার কথা নিটোল মমতার দায় অার প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা। সম্পর্কগুলোর ভেতরের রসায়ন যাই থাক,কেমিষ্ট্রির ঝরে পড়বার বাহুল্য ঝরানোর সর্বাত্বক চেষ্টা থাকছে স্যোশাল মিডিয়ায়,ফেসবুকের ছবির গল্পে। প্রেমকে কর্পোরেট করে তোলবার চেষ্টা চলছে,নাকি হচ্ছে সে বিতর্ক লেখার গন্তব্য নয় কোনভাবেই। বাস্তবের সম্পর্কগুলো অাকাশচারী নয়,সম্পর্কগুলো ফুটপাতে হাত ধরে হাটবার ছন্দে বসবাস করে। সম্পর্কের চাষ করা অার সম্পর্কে বাস করার মাঝখানে দুরত্ব নিরন্তর।
অাবার দেখছি, মৌনতার মাধুর্য হারছে শব্দের অপচয়ের হাটে। সাফল্যের বৃত্তে নিজেকে অাটকে রাখা, অাসলে খুব কঠিন কাজ। একজন লেখককে সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকা সমীচীন অামি মনে করি,তার পাঠকের মূল্যবান সময় যাতে অপচয় না হয় তার লেখাটি পড়ে,সেই ব্যাপারে।
লেখক: মুনজের আহমদ চৌধুরী, সাংবাদিক ও লেখক।