আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

স্বপ্নের রাজনীতি, রাজনীতির স্বপ্ন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০১-০৭ ১১:৪৮:৫২

অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ :: অনেক স্বপ্ন নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলাম। অন্য ৮/১০টা ছেলের মতো স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারি নাই। অন্যরা যখন ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো আমি তখন তৎকালীন বিএনপি -জামাত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম।

রাজনীতি করার কারনে সাথের বন্ধুরা এমনকি শিক্ষকরাও ভালো করে কথা বলতে চাইতো না। প্রখর রোদে কিংবা বৃষ্টিতে ঘরে বসে না থেকে রাস্তায় পিকেটিং করতে হয়েছে। বিকেল বেলায় অন্যরা যখন খেলা বা আড্ডায় ব্যস্ত থাকতো তখন কোর্ট পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে হতো। যেখানে জন্মের পর থেকে আজ অবধি বাবা মায়ের হাতে একবারও মার খাইনি সেখানে পিকেটিং কিংবা বিক্ষোভ করা কালীন কতোবার পুলিশের মার খেয়েছি তার হিসেব নেই।

সাথের বন্ধুরা যখন দলবেঁধে ঘুরে বেড়াতো আমি তখন সিনিয়র নেতাদের সাথে মিছিলে যেতাম। একবারও খারাপ লাগে নাই। গর্ব হতো, যে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনের সাথে জড়িত হতে পেরেছিলাম। বাবার পাঠানো খরচের টাকা জমিয়ে সংগঠনের জুনিয়র ভাইদেরকে নিয়ে খরচ করতাম। ২০০৬-২০০৯ পুরোটা সময়ই মূলত বিরোধী দলের স্বাদ  নিতে হয়েছে। ছাত্রদল -শিবির এর অনেক নির্যাতন এবং হুমকি সহ্য করতে হয়েছে। এমন অনেক সময় গিয়েছে যখন পরিক্ষা মিস করেও দলীয় কাজে যোগ দিয়েছি। ২০১৩/১৪ সালে যখন সারাদেশে বিএনপি-জামাত একযোগে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছি। আজও মনে হয় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পরিক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরিক্ষা দিতে হয়েছিলো। নিজ বাড়িতে জামাত শিবির হামলা করেছিলো। প্রাণভয়ে সেদিন মা আর বোন দরজা বন্ধ করে কোনরকম জীবন রক্ষা করেছিলেন।

আজ যেখানে সাথের বন্ধুরা চাকরি করে পরিবারের হাল ধরেছে, আমি সেখানে আজও বাবার হাতের দিকেই চেয়ে থাকি। কষ্টগুলো বলে শেষ করার মতো না ।অন্য বাবা মায়েরা যেখানে সন্তানদের সাফল্য নিয়ে গর্ব করে, আমার বাবা মা সেখানে নিজ সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে চোখের জল মুছে।তারপরও স্বপ্ন দেখি। হয়তো বাকি জীবনটাও দেখবো।

লেখক : জেলা ছাত্রলীগ নেতা

(লেখাটি অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশের ফেসবুক থেকে নেয়া।)

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন