Sylhet View 24 PRINT

একটি বাড়ি, চেতনার বাতিঘর...

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০২-২২ ১৪:৫৩:৫৬

আব্দুল করিম কিম :: হাউজিং এস্টেট। সিলেট নগরীর প্রথম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা। এ যেন অন্য রকম এক আভিজাত্য। তাই অভিজাত এলাকা বলেও পরিচিতি হাউজিং এস্টেট। সেই অভিজাত আবাসিক এলাকা প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে। এলাকায় চলছে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব আয়োজনের নানা প্রস্তুতি । আজ ২২শে ফেব্রুয়ারী দিনব্যাপী নানা আনুষ্ঠানিকতায় এলাকাবাসী হাউজিং এস্টেট প্রতিষ্ঠার গৌরবের ৫০ বছর উদযাপন করছে। এলাকা জুড়ে হয়েছে আলোক সজ্জা।

এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আলপনা অংকন। স্থানে স্থানে বসেছে সুসজ্জিত তোরণ । এলাকার সর্বস্তরের নাগরিকদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উদ্দিপনা।

সিলেট শহরের উত্তরপ্রান্তে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক থেকে দক্ষিণ দিকে চলে গেছে দরগাহ ই হযরত শাহজালাল (রহ) মুখী দর্শন দেউড়ি সড়ক আর উত্তর দিকে প্রবেশ করেছে জেলা পরিষদ বাসিক এলাকা বা হাউজিং এস্টেট সড়ক। হাউজিং এস্টেট প্রতিষ্ঠাকালে উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ছিল টলমলে পানির প্রবহমান মালনীছড়া। উত্তরপ্রান্তে মালনীছড়া পাড়ি দিলেই বাদাম বাগিচা অতিক্রম করেই লাক্কাতোড়া চা বাগানের ছোটবড় টিলা । হাউজিং এস্টেটের পূর্বপাশে ঐতিহ্যবাহী মজুমদার বাড়ি ও হযরত শাহ জালাল (রহঃ)-এর স্মৃতিধন্য পীর মহল্লা। এখানেই কিংবদন্তির 'আকল কুয়া'।

এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও ঐতিহাসিক এলাকার পাশেই গড়ে ওঠা ষাটের দশকের এই আবাসিক এলাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেই শুধু নয়, সিলেটবাসীর কাছেই গর্বের।

হাউজিং এস্টেটে আসা যে কোন আগন্তক এখানকার পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন বাড়িঘর দেখে মুগ্ধ হতে বাধ্য। তবে প্রধান ফটক পেরিয়ে কিছু দূর এগুলেই একটি দৃষ্টিনন্দন নির্জন বাড়ি সবার দৃষ্টি আলাদা ভাবে আকর্ষন করে। চোখ থমকে যায়। বাড়িটির কাঠােমোতে ঐতিহ্যের ছাপ। আসাম কাঠামোর বাংলাবাড়ির আদল। বাড়ির সামনে নাম না জানা বৃক্ষশোভায় কেমন জানি একটা দুঃখ-দুঃখভাব। মনে হয় এই বাড়িতে পাখিদের শোকসভা চলছে। জনারণ্যে জনশুন্য এই বাড়িটি হাউজিং এস্টেটের নতুন প্রজন্মেরো দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনেকেই জানে না এই বাড়ির বাসিন্দাদের গল্প। যে গল্প প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য গর্বের। আজকের এই বিশেষ দিনে সেই বাড়ির মানুষদের গল্প আপনাদের শোনাতে চাই।

আহমেদ আমাদের গর্বের ধন এই বাড়িটি মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসা সেবায় অবিচল থাকা শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমদের। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বর্তমানে শহীদ ডা. শামসুদ্দীন আহমদ সদর হাসপাতাল) শল্য বিভাগের প্রধান ছিলেন ডা. শামসুদ্দীন আহমদ। সুদর্শন, নীতিপরায়ণ, মিষ্টভাষী হলেও কিছুটা গুরুগম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন। প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী শামসুদ্দীন আহমদের পেশাগত দায়িত্ববোধ, কর্তব্যনিষ্ঠতা, সততা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছিল অসীম। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নিরাপত্তা নেই বলে মেডিকেল কলেজের অনেক অধ্যাপক, ছাত্র, নার্সরা হোস্টেল ও হাসপাতাল ছেড়ে যেতে থাকেন। এ সময় বয়োকনিষ্ঠ চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকেল কর্মীদের প্রতি শামসুদ্দীন আহমদ অনুরোধ করেন আহত ব্যক্তিদের সেবা করতে। সবার হাতে ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম তুলে দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাইরে গিয়ে মানবতার সেবা করো।’ যাঁদের সেবা করতে বলেছিলেন, তাঁরা আহত, আমাদেরই প্রতিবেশী, পরিবার-পরিজনের পরম আত্মীয় সর্বোপুরি বাংলাদেশের মানুষ। সিলেটে পাকসেনাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে কিংবা পাকিস্তানিদের অতর্কিত হামলায় আহতরা। চারপাশে হত্যা ও ধ্বংস দেখেও শুধু পেশার প্রতি অঙ্গীকার ও মানবতার কারণে কর্মস্থল ছেড়ে যাননি শামসুদ্দীন আহমদ। তাঁকে অনেকেই বলেছিলেন হাসপাতাল থেকে চলে যেতে। কিন্তু চিকিৎসাসেবাব্রতী শামসুদ্দীন আহমদের সারল্য ভরা এক কথা—চলে গেলে আহতদের চিকিৎসা দেবে কে?

৮ এপ্রিল, ১৯৭১। ইতালীয় সাংবাদিক ও সাহায্যকর্মী সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ভারত থেকে তামাবিল দিয়ে সিলেট শহরে আসে। শামসুদ্দীন আহমদ তাঁদের গোটা হাসপাতাল ঘুরিয়ে নিরীহ নাগরিকের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নগ্ন হামলার প্রত্যক্ষ প্রমাণ তুলে ধরেন। এই ঘৃণ্য আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বক্তব্যও দেন। তাঁর বক্তব্য দলটি রেকর্ড করে (যা পরে ইতালিতে প্রচারিত হয়)।

পরদিন ৯ এপ্রিল মেডিকেল কলেজের পাশে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যুদ্ধ হয়। হাসপাতালের অদূরবর্তী টিলা থেকে প্রতিরোধ যোদ্ধারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি কনভয়ে আক্রমণ করে। এতে কনভয়ের সামনের জিপ উল্টে যায় এবং তিনজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। এর পরই পাকিস্তান সেনাবাহিনী হাসপাতাল এলাকা ঘিরে ফেলে। কিছুক্ষণ পর মেজর রিয়াজের নেতৃত্বে একদল পাকিস্তানি সেনা হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে।

আন্তর্জাতিক আইনে চিকিৎসক ও নার্স হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ। কিন্তু ন্যূরেমবার্গ বিচারনীতি ও জেনেভা কনভেনশই গ্রাহ্য করেনি পাকসেনারা। হাসপাতালে কোনো প্রতিরোধ যোদ্ধার সন্ধান না পেয়ে তারা যাঁকেই সামনে পেয়েছে তাঁকেই বাইরে এনে দাঁড় করাতে থাকে।

শামসুদ্দীন আহমদ ও তাঁর সহকারী ডা. শ্যামল কান্তি লালাকেও টেনেহিঁচড়ে সীমানা প্রাচীরের কাছে দাঁড় করায়। এ সময় শামসুদ্দীন আহমদ নিজের পরিচয় দিয়ে তাদের ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেন। পাকিস্তানি সেনারা প্রথমেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে। তিনটি গুলি লাগে তাঁর শরীরে। একটি বাঁ ঊরুতে, দ্বিতীয়টি পেটে ও তৃতীয়টি বুকে।

১৩ এপ্রিল কিছুক্ষণের জন্য কারফিউ শিথিল হলে কয়েকজন নিকটাত্মীয় এসে তাঁর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ছোট গর্ত করে দ্রুততার সঙ্গে সমাহিত করেন। অন্যদের মরদেহও পাশে সমাহিত করা হয়। বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে এখানেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

শামসুদ্দীন আহমদ-এর জন্ম ১৯২০ সালের ১লা সেপ্টেম্বর ভারতের আসাম প্রদেশের করিমগঞ্জ শহরের বৃন্দাশীল গ্রামে। বাবা ইমাম উদ্দিন আহমদ, মা রাশেদা বেগম। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয় । ১৯৩৯ সালে সিলেট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে বৃত্তি ও লেটার পেয়ে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক, ১৯৪১ সালে সিলেট মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করে ভর্তি হন কলকাতা মেডিকেল কলেজে । ১৯৪৬ সালে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৬২ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জন থেকে এফআরসিএস করেন। তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে । উনসত্তরের গণ-আন্দোলন চলাকালে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে কর্মরত ছিলেন। তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা হত্যার মিথ্যা সার্টিফিকেট দিতে তিনি রাজি হননি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে উনার অপারেশন করেছিলেন শামসুদ্দিন আহমদ। বাঁচাতে পারেননি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলেছিলেন, শামসুজ্জোহাকে প্রথমে কাছ থেকে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে জখম করার পরে গুলি করা হয়। যদিও পাকিস্তান সরকার এটাকে ক্রসফায়ার বলে চালাতে চেষ্টা করেছিল। শামসুদ্দীন আহমদ সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সব পত্রিকাতে পাঠিয়েছিলেন। শহীদ শামসুজ্জোহার মৃত্যুর পরে অনুষ্ঠিত প্রথম শোকসভায় তিনি সভাপতিত্ব করেছিলেন। যে সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক সরকারি রোষানলের ভয়ে আসেনি । ১৯৬৯ সালেই তিনি সিলেট ফিরে আসেন ।

১৯৬৭ সালে গঠিত সিলেট জেলা পরিষদ আবাসিক এলাকা বা হাউজিং এস্টেটের তিনি প্রথম পর্যায়ের বসতি স্থাপনকারী । তাঁর ছায়াঘেরা মায়াময় বাসাটির হোল্ডিং নাম্বার '৬৯' । ১৯৬৯ সালে ডাঃ শামসুদ্দীন আহমেদ "হাউজিং এস্টেট এসোসিয়েশন" পূর্তি প্রতিষ্ঠাকালে প্রথম সভাপতি মনোনীত হন।  তিনি আম্বরখানা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাঁর কথাতেই সিলেটের তৎকালীন বরেণ্য দানবীর ছুন্নত চৌধুরী স্কুলের জন্য ভূমিদান করেছিলেন।

শহীদ চিকিৎসক শামসুদ্দীন আহমেদ-এর সহধর্মীনি অধ্যক্ষ হোসনে আরা আহমদছিলেন সিলেটের নারী শিক্ষার অগ্রদূত। সিলেটের নারীশিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে ১৯৫০ সালের দিকে কাজ শুরু করেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে সিলেট মহিলা কলেজ ক্ষুদ্র অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। দীর্ঘ ৩২ বছর তিনি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠকে এগিয়ে নিতে মেধা, শ্রম দিয়ে কাজ করেছেন । সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ এই অঞ্চলে তথা সমগ্র নারী প্রগতিতে ধারাবাহিক অবদান রেখে চলেছে।

বিদ্যায়তনিক শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নের পাশাপাশি নীতিবোধ ও মূল্যবোধের উৎকর্ষ সাধনে অধ্যক্ষ হুসনে আরা আহমেদের অবদান অনন্য। পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকজুড়ে সিলেট অঞ্চলে বিভিন্ন সামাজিক-সাংগঠনিক উদ্যোগের আয়োজন ও নেতৃত্বদানে তিনি রেখেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা। ২০১৮ সালের ১৬ই জুলাই অধ্যক্ষ হুসনে আরা আহমেদ নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। অধ্যক্ষ হোসনে আরা ম্যাডামের উদ্যোগে ও সহযোগীতায় আম্বরখানা শিশু স্কুল যাত্রা করে। শহীদ ডঃ শামসুদ্দীন আহমেদ ও অধ্যক্ষ হোসনে আরা পরিবার শুধু হাউজিং এস্টেট নয়, সমগ্র সিলেটবাসীর গর্ব । তাঁদের কাছে আমাদের ঋণের কোন শেষ নেই।

শহীদ চিকিৎসক শামসুদ্দীন আহমেদ-এর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে । ছেলে সালাহউদ্দীন আহমদ (প্রকৌশলী) ও জিয়াউদ্দীন আহমদ (চিকিৎসক)। মেয়ে ফরহাত জামান, রাহাত হোসেইন ও মালেকা আহমদ। এরা দীর্ঘ কয়েক দশক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। সেখানে স্থায়ী ভাবে বাস করলেও দেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলেছেন । পাঁচ ভাই বোনই দেশে বিভিন্ন জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত । সম্প্রতি উপশহরে অস্থায়ী ভাবে যাত্রা শুরু করা সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন ও হাসপাতাল গঠনের সাহসী উদ্যোগে তাঁদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে । প্রচার বিমুখ এই পরিবারের সন্তানদের গৌরবের কথা তাঁদের অনিচ্ছা সত্বেও প্রকাশিত হয় । ফুলের সৌরভ যেমন লুকিয়ে রাখা যায় না, তেমনি বরেণ্য মানুষদের  অবদান লুকানো যায় না । ২০১৮ সালের ১৩ই মে শহীদ শামসুদ্দীন আহমেদ ও অধ্যক্ষ হোসনে আরা পরিবারের কনিষ্ঠপুত্র ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমদ যুক্তরাষ্ট্রে এমন এক সম্মাননা লাভ করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীদের মুখ উজ্জ্বল করে । মূলধারার সংবাদপত্রে সে সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয় । জিয়াউদ্দিন আহমেদ ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক এলিস আইল্যান্ড মেডেল অব অনার পদক লাভ করেন । যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটকদের রক তীর্থস্থান এলিস আইল্যান্ড অনার সোসাইটি ১৯৮৬ সাল থেকে মেডেল অব অনার চালু করেছে। অভিবাসী বা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সমাজ তাঁদের কর্মের জন্য এই সম্মাননা পেয়ে থাকেন।

সম্মান পাওয়ার তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সাতজন প্রেসিডেন্টের নাম রয়েছে। অন্যদের মধ্যে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সান্দ্রা ওকানোর, নোবেল পদক পাওয়া ইলাই ওয়াসেল, মালালা ইউসুফজাই, করেটা স্কট কিং, জন সচুলেই, মোহাম্মদ আলী, রোজা পার্ক রয়েছেন।

পদকপ্রাপ্তদের সামরিক বিভাগের যৌথ দল গার্ড অব অনার দেয়। ভাবগম্ভীর এক অনুষ্ঠানে পরিবার-পরিজনের সামনে সম্মাননা নেন পদকপ্রাপ্তরা। মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন করা এই সম্মাননা যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার একটি সম্মাননা স্মারক হিসেবে রেকর্ড করা হয়ে থাকে।

ডাঃ জিয়াউদ্দীন আহমদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর দেশপ্রেম পরিবারের কাছ থেকে অর্জন করেছিলেন । তাই তো ১৯৭০ সালে সাইক্লোন দুর্গত মানুষদের কাছে সেই দুর্গম চর জব্বারে তিনি চলে যান ।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে সিলেটী কমিউনিটির অন্যতম অভিভাবক । ২০১৭ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সিলেট সম্মেলনের তিনি ছিলেন আহবায়ক । বর্তমানে তিনি ফিলাডেলফিয়ার ডেক্সসেল ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিনের প্রফেসর।

 শহীদ ডাঃ শামসুদ্দীন আহমেদ পরিবারের স্মৃতিধন্য হাউজিং এস্টেট। সামাজিক কর্মকান্ডে উৎসাহী মানবহিতৈষী শহীদ ডাঃ শামসুদ্দীন আহমেদ হাউজিং এস্টেট এ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি ছিলেন । এই অসাধারণ মানুষের উত্তরসূরি হিসাবে 'হাউজিং এস্টেট এ্যাসোসিয়েশন'-এর নেতৃবৃন্দকে সাধারণ হলে চলবে না ।
এলাকার মানুষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠায়, ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টিতে ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁদেরকেও অসাধারণ ভূমিকা রাখতে হবে । সুরম্য বাসা-বাড়ি, উন্নত সড়ক ও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা প্রহরী এলাকার গৌরব বৃদ্ধি করে না । এলাকার মানুষের মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হলে, নেতৃত্ব স্বার্থহীন হলেই গৌরব অর্জন সম্ভব । তাইতো হাউজিং এস্টেটে শহীদ  শামসুদ্দীন আহমেদের নির্জন বাড়িটি যেন এক টুকরা বাংলাদেশ, চেতনার বাতিঘর। এই পরিবার আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণার, আমাদের গর্বের ধন।


লেখক: বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.