আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ভাটির মানুষের আশির্বাদ ' দিরাই ছাত্রকল্যাণ পরিষদ '

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৮-১৫ ০৯:৫৭:১৪

আশরাফ আহমেদ ::সুবিশাল ভরাম হাওরের আউলা  ঢেউয়ের পাশ কেটে এগিয়ে যাচ্ছে মাঝারি ধরনের এক সরু তরী। দানবরুপী ঢেউগুলোর তান্ডবে ছোট তরীটি  উপর-তল হয়ে প্রায় ডুবে যাওয়ার উপক্রম। ভরামের রাক্ষসী ঢেউয়ে  যেকোনো সময়ই তলিয়ে যেতে পারে সেটি। এমন অবস্থায় যদি দুর্বল হার্টের কোন রোগী  পরে তবে থাকে বাচাঁনোটাই মুশকিল হয়ে উঠবে।  কিন্তু অবাক করার বিষয়, ছোট তরীটির ভেতরে থাকা মানুষগুলোর চেহারায় বিন্দুমাত্র ও কোন চিন্তার চাপ দেখা যাচ্ছে না ।  মুত্যুর মুখে দাড়িয়েও ওরা কেমন জানি উল্লাসে মেতে উঠেছে। ওরা কারা মৃত্যুভয় যাদের আচঁ করতে পারে না?  বিষয়টা একরকম খামখেয়ালিই বলা যায়।

 যাইহোক কিছুক্ষণ পর ভরামের মৃত্যুপুরী  থেকে বের হওয়া ছোট তরীটি নিদিষ্ট একটা জায়গায় স্থির হলে,ভেতরে থেকে বেরিয়ে আসে একদল টগবগে যুবক। নৌকা থেকে ছেলেগুলোর বাহির হওয়ার দৃশ্যটি দেখতে ইতিমধ্যেই ঘাটের সামনে মানুষেরা টেশাটেশি লাগিয়ে দিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, ওদের জন্যই বোধহয়  অপেক্ষা করছিল গ্রামের  এই মানুষগুলো। কিন্তু ওরা কারা যাদের জন্য আবালবৃদ্ধ সবাই হ্যা করে অপেক্ষার প্রহর গুণছিল।

নৌকা থেকে ওঠা যুবকের সাড়িঁটা সোজা চলে গেল বাউল সম্রাটের স্মৃতিঘেরা ধল পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ে। ভেতরে ডোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই  সবাই ই যার যার মত ব্যস্থতায় লেগে যায়। কেউ  অগুছালো বেঞ্চগুলো ঠিক করছে, কেউ আবার ক্লাসভর্তি বাচ্চাদের কি সব বুঝাচ্ছে।  কেউ আবার পেপার -প্রশ্নগুলো এগিয়ে দিচ্ছে।  ছেলেগুলোর সিমসাম  কাজগুলো দেখে উপস্থিত  সবাই একদম  ত বনে গেছে। কিসের  এত আয়োজন প্রশ্নের উত্তরটি এবার পাওয়া গেল বোধহয়।

নগরে থাকা ভাটির এক সেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে  শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধাবৃত্তি পরিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। যেজন্য এত আয়োজন।  যাইহোক, কিছুক্ষণ পর  পরিক্ষা শেষ হলে, দেখা গেল আরেক চঁমক। স্কুলভর্তি শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে একটি খোলা মাঠে। এখানেও নাকি কুইজ প্রতিযোগিতা হবে। খানিকক্ষণের মধ্যেই  এলাকার শিক্ষার্থী, সাথে শ'কয়েক মানুষ আর সেচ্ছাসেবী সংগঠণের সদস্যদের মিলনমেলায় রুপ নিল আধ- একরের  মাঠটি।

খোলা মাঠেই  শুরু হল কুইজ প্রতিযোগিতা।  মজার  বিষয় হলো প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের  ফল ঘোষণার সাথে সাথেই তাদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। যেটি সচরাচর দেখা যায় না। সত্যিই চমৎকার একটি বিষয়।   আর তারই সাথে   মুল পরিক্ষার ফলাফল পরবর্তীতে দেওয়া হবে বলে জানায় আয়োজকেরা ।

কুইজ প্রতিযোগীতা শেষ হলে যুবকের দলটি গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালে এলাকার লোকজন  তাদের ঘিঁরে বসে। উদ্দেশ্য একটাই ছেলেগুলো কে কিছু আপ্যায়ন করিয়ে দেওয়া। সরলমনা মানুষগুলোর আবেগী পর্বটা শেষ করে  ছোট তরীটি ভরামের বুক ছিড়ে আবারো চলতে থাকে আপন মঞ্জিলের দিকে। হঠাৎই কোথা থেকে ছুটে আসা মানবপ্রেমীদের এই চলে যাওয়ার দৃশ্যটি  লোকেরা  অবাক বিস্ময়ে থাকিয়ে দেখছিল।

 ছেলেগুলোর তাকলাগানো এই  কাজগুলো  শুধু ধল পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়েই সীমাবদ্ধ নয়।  কখনও বিশাল হাওরের দানবরুপী ঢেউয়ের মাঝে নৌকা চালিয়ে,  কখনও বা টেকটিলার জরাজীর্ণ  সরু রাস্তার মধ্যে স্থানীয় গাড়ি দিয়ে,   কখনও আবার পায়ে হেটেই ভাটির প্রতিটা স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছুটে চলছে তারা । উদ্দেশ্য একটাই অবহেলিত এই জনপদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার প্রতি অনুপ্রেরণা দিয়ে যাওয়া। নিজেদের সাদ্যমত যতটুকু সম্ভব কাজ করে যাওয়া।


 স্বার্থের খেলায় মেতে উঠা আত্বস্বার্থবাদী এই দেশে সেচ্ছায় কাজ করে যাওয়া  যুবকগুলোর পরিচয় কি?  ওরা কারা? হাজার কষ্টের মাঝে ও যাদের মুখে রুপালি হাসি ফুটে? চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক একদল মানুষের ফিনিক্স হওয়ার গল্পটি।



ফিনিক্স শব্দটা আসলেই শান্তির হাওয়ার আবাস পাওয়া যায়। ইউরোপের  অনেক দেশেই এটাকে শান্তির প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রশ্ন হল মানুষ আবার ফিনিক্স হয় কি করে? ফিনিক্স শব্দটা এক প্রকারের পাখিদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে আমরা এটাকে শান্তির প্রতিক হিসেবেই মনে করে থাকি।  মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে যারা সংঘবদ্ধভাবে  নিজেদের ব্রত করছে সমাজের অসহায় দারিদ্র্য মানুষের পাশে, সেই সাথে লালন করছে নিজেদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে।

হ্যাঁ, তেমনি এক মানবতাবাদী সংগঠন আর তার সাথে যুক্ত থাকা একদল মানুষরূপী ফিনিক্সের কথাগুলোই বর্ণনা করছিলাম।

পরিবার পরিজন ছেড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে স্বপ্ন পুরণের দায় বহন করে একটা ছেলে যখন  কনক্রিটের শহরে পা রাখে, তখন অচেনা এই শহরটায় নিজেকে খুবই অসহায় মনে করে সে । হাজার চেষ্টা করেও  রঙ্গিন শহরটির সাথে সহজে  মানিয়ে নিতে পারে না তারা।

 যেকারণে পাড়াগাঁয়ের এসব ছেলেগুলো  অনেক সময়ই  কারণে অকারণে কঠিন শহরের মানুষগুলোর দ্বারা  হেনস্তা হয়েই চলতে হয়।


সকল বিপদে পাশে থেকে পিঠ থাবড়িয়ে" চিন্তা করিস না" বলার মত একটি মানুষ তার কাছে তখন আলাদীনের চেড়াগ পাওয়ার মতই মুল্যবান হয়ে উঠে।
 এমন অবস্থায় পাশে থাকার জন্য এলাকার একটা মানুষকে মনের গহীন থেকেই  খোঁজতে থাকে তারা। এলকার একটা মানুষের অভাবে হতাশ হয় ওরা।

অথচ তাদের আশপাশেই  ভাটির অনেক সূর্যসন্তান এই নগরে নিজেদের আলো দ্বারা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন এখানকারই মানুষদের।
কিন্তু পরিচয়ের অভাবে তাদের কাছে নিজের কষ্টের কথাটি মুখ ফুটে বলার সুযোগটি তারা খোঁজে পাচ্ছিল না। নিজ এলাকার এই মানুষগুলোর সাথে পরিচিত হওয়ার ও ছিল না কোন মাধ্যম।

হঠাৎই নগরে এসে  পাড়াগাঁয়ের এই আবেগভরা অনুভূতিগুলো কে একসময়  অনুধাবন করে  ভাটির ই কিছু মহৎ হৃদয়।

আর  সেই অনুভূতিগুলো কে পুঁজি করে একদল মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী মানুষের   চিন্তার ফলস্বরূপ সিলেট থাকা ভাটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠন করা  হয়"  দিরাই ছাত্রকল্যাণ" নামে একটি সেচ্ছাসেবী সামাজিক  সংগঠন।


অনেক আগ থেকে কাজ করলেও মুলত ২০০০ সালের দিকেই সংগঠনটি তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।

সিলেট থাকা দিরাই’র সব শিক্ষার্থীদের একটি প্লাটফর্মের মধ্যে নিয়ে আসা,  সকল বিপদে সর্বদা পাশে থেকে একে অপরকে  সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠায় এলাকার জন্য কাজ করা সহ বেশকিছু মুলনীতিকে সামনে রেখে সংগঠনটির পথচলা।

প্রথমে গুটিকয়েক মানুষকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা সংগঠনটি বর্তমানে সিলেটে থাকা দিরাই’র  প্রায় সব শিক্ষার্থীদের একটি আবেগের নামে রুপ নিয়েছে।

 ছাত্রকল্যাণের  কিছু মুলনীতি রয়েছে যেগুলো সচরাচর অন্যসব সামাজিক সংগঠনগুলোতে পাওয়া যায় না। যেমন হিন্দু -মুসলিম জাতি বর্ণ নির্বিশেষে এর প্রতিটা সদস্য সমান সুযোগ সুবিধা পায়। সংখ্যালঘিষ্ঠ আর সংখ্যাঘরিষ্ট  শব্দগুলো এখানটায় এড়িয়ে যাওয়া হয়।  ছোট- বড় পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ মেনে চলা,সংগঠনের কোন সদস্য সমস্যায় পতিত হলে এড়িয়ে না গিয়ে গুরুত্বসহকারে শোনা এবং তা সমাধানের সর্বোচ্ছ চেষ্টা করা।  সমাজ,দেশ কিংবা ধর্মের সাথে সাংঘর্ষীক হয় এমন কোন বিষয় সংগঠনে প্রাধান্য না দেওয়া ইত্যাদি।

 ছাত্রকল্যাণের প্রতিটা সদস্যকেই এই নীতিগুলো মেনে চলতে হয়।   আর এই মুলনীতি গুলো মেনে চলার কারণে সংগঠনটি দিন দিন  একটি বৃহৎ  আকারে রুপ নিচ্ছে।  কেননা প্রায়ই দেখা যায় এরকম অনেক সংগঠন শুরু হওয়ার কিছুদিন পর সেটির আর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।  যার কারণ হলো সংগঠনের ভেতর নিজেদের মধ্যে কোন্দল, নেতৃত্বের লালসা,এবং সদস্যদের সংগঠনপ্রেমী না হওয়া।

ছাত্রকল্যানের সদস্যরা এই বিষয়গুলোকে সর্বদাই এড়িয়ে যায়। এখানে সংগঠনের নিয়মনীতি রক্ষার্থে মানমাত্র একবছর মেয়াদি  একটি কমিটি দেওয়া হয়। যাদের দ্বারা সংগঠন পরিচালিত হয়।  তবে দায়িত্বশীল ব্যক্তি আর দায়িত্ববিহীন ব্যক্তি এখানে সমানভাবে মুল্যায়িত হয়। কাউকেই হীন করে দেখা হয় না।  যেকারণে এই সংগঠনটিতে আদৌ নেতৃত্ব নিয়ে কোন দ্বন্দ দেখা যায় নি।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দেলুয়াল হোসেন মিশু বলেন, মুল যে বিষয়টার জন্য চারিদিকে  ছাত্রকল্যাণের এত সুনাম সেটা হচ্ছে, এর সদস্যরা একে -অন্যের প্রতি অনেক বেশি আন্তরিকতাপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে থাকেন।


সভাপতি রুবায়েত হাসান সাকিল বলেন, সাদ্যমত এলাকার মানুষের জন্য কাজ করা সহ বেশ কিছু ব্যতিক্রমধর্মী কাজ ছাত্রকল্যাণে হয়ে থাকে, যেগুলো এখানে আসা নতুনদের মাধে অন্যরকম এক ইতিবাচক  অনুভূতির জন্ম দেয়। এসময় তিনি ভাটির এই সংগঠন থেকে  ভবিষ্যতে নতুন কিছু চমক  আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন।


অবাক করার বিষয় হলো যে মানুষগুলোর ত্যাগের বিনিময়ে ছাত্রকল্যাণের জন্ম,এবং আজও যাদের পরিশ্রমেই ভাটির এই সংগঠনটি এতদূর এগিয়ে চলছে। সেই ত্যাগী মানুষগুলোকে এখনও  কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেখা যায় নি। অথচ পর্দার আড়ালে থাকা এই মানুষগুলোর মহৎ কর্মের  জন্যেই দেশ-বিদেশে ছাত্রকল্যাণের এত কদর।

এমন হেয়ালিপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললে,সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা সঞ্জয় চৌধুরী বলেন, হঠাৎই গ্রাম থেকে আসা পল্লীর একটা শিক্ষার্থী অচেনা এই শহরে নিজেদের খুব অসহায় মনে করে। তাদের সেই হতাশা আর শুণ্যতাকে দুর করার জন্যই এরকম একটা সংগঠন প্রয়োজন ছিল। যার দ্বারা একে অপরকে চিনবে -জানবে, বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে।  যেখানে সব মতাদর্শের মানুষ একই আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে উঠবে।

 সকলের ঐক্যবদ্ধের দ্বারা সাদ্য অনুযায়ী ভাটির মানুষের জন্য কাজ করে যাবে।  সঞ্জয় বলেন, মুলত  এই উদ্দেশ্যেই ছাত্রকল্যাণের জন্ম। অরাজনৈতিক সংগঠনটির সদস্যদের মধ্যে  নেতৃত্বের লালসা আদৌ দেখা যায় নি উল্লেখ করে তিনি বলেন,   আশা করি ভবিষ্যতেও দেখা যাবে না। সঞ্জয় আরো বলেন, যে উদ্দেশ্যে ছাত্রকল্যাণের যাত্রা,এখনও সংগঠনটি সে পথেই চলছে। এসময় তিনি জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি  নিজেদের সাদ্য অনুযায়ী  ভাটির মানুষের মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার জন্য দিরাই’র অনেক  মানুষের কাছেই ছাত্রকল্যাণ এখন আশির্বাদস্বরুপ।  আর সেজন্যই" সিলেটস্থ দিরাই   ছাত্রকল্যাণ পরিষদ " নামক সংগঠনটি  আজ অনেকের কাছেই একটি মডেল।

ছাত্রকল্যাণের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ঈদ,  পুঁজার মতো ধর্মীয় উৎসব  কিংবা  বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে দিরাইয়ের অসহায় দারিদ্র্য মানুষের মাধে  সাহায্য করা হয়।

এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে দিরাই’র  সকল বিদ্যালয়ের পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা দেওয়া হয়। সংগঠনটির সবশেষ হিসেব অনুযায়ী   ২০১৮ সালের  কুইজ প্রতিযোগিতায় দিরাই’র ৯ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা থেকে প্রায় ২৩০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
পরবর্তীতে দেশের বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।   দিরাই  উপজেলার মধ্যে  বেসরকারি উদ্যোগে  যেটি সবচেয়ে বড় কুইজ প্রতিযোগিতা।

ছাত্রকল্যাণের এমন তাক লাগানো কাজগুলো দেখে তাদের অনুসরণ করে সিলেটে এরকম অনেক সংগঠনের জন্ম হচ্ছে।  যাদের কাছে ভাটির এই সংগঠনটি অনুপ্রেরণার বাতিঘর  হিসেবে কাজ করছে। ভিন্ন মতের হয়েও সবাই একই সাঁড়িতে এসে কাজ করার জন্য , সদ্য জন্ম নেওয়া অনেক সংগঠনের কাছেই  দিরাই  ছাত্রকল্যাণ এখন  মডেল।

এসম্পর্কে সিলেট প্রেসক্লাব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলটিভির প্রধান সম্পাদক   সাংবাদিক আল-আজাদ বলেন,  অবহেলিত একটা মফস্বল  এলাকা থেকে এসে সিলেটের মত শহরে ছাত্রকল্যাণ দিরাই’র সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানবতার সেবায় যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, সত্যিই তা অনেকের কাছে মডেল। ছেলেদের এমন কাজ নিঃসন্দেহে প্রসংশার দাবিদার।



ছাত্রকল্যাণ শুধু অন্যের জন্যেই কাজ করে না। নিজ সংগঠনের সদস্যদের সর্বদা প্রফুল্ল রাখতে সংগঠনটি যথেষ্ট আন্তরিক। আর এজন্য  ছাত্রকল্যাণের পক্ষ থেকে   প্রতি বছর ফুটবল,  ক্রিকেট সহ বিনোদনমুলক বিভিন্ন  প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয় ।  সংগঠনের সদস্য ছাড়া ও দেশের খ্যাতনামা ক্রিয়াবিদরা এতে অংশ নেন।

এছাড়াও সমাজ - দেশ কিংবা জাতির প্রতি ভালবাসা আর দায়বদ্ধতার জাগয়া থেকে ছাত্র কল্যাণ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করে থাকে। গুণীজনদের স্বরণে সংগঠনটি নানা সময়ই আয়োজন করে সভা-সেমিনার ও আলোচনা সভার।  যেখানে আমন্ত্রিত করা হয় দেশের বিশিষ্টজনদেরকে।

আর এসব কাজ করতে সংগঠনটির সেচ্ছাশ্রম ছাড়াও ব্যয় হয় প্রচুর পরিমান অর্থ।
কালনীপাড়ের এই ছাত্রসংগঠণটির আয়ের উৎস বলতে এর সদস্যদের মাসিক চাঁদাই মুল।  এছাড়াও বিভিন্ন সমাজ সেবামুলক কাজ দেখে হৃদয়বান ব্যক্তি ও বহু প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ই তাদের পাশে দাড়ান। তাদের এই  বিশেষ অনুদানের অর্থেই সংগঠনটি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

২০০০ সালে গুটিকয়েক মহৎ হৃদয়ের হাত ধরে যাত্রা শুর করা ছাত্রকল্যাণে বর্তমানে সিলেটে থাকা দিরাই’র সকল শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। শহরে এসেই ছাত্রকল্যাণের সদস্যের খাতায় নিজেদের নাম লেখিয়ে নিচ্ছে দিরাই’র শিক্ষার্থীরা।

আর এভাবেই সকলের ভালবাসা আর আন্তরিকতায় অন্যদের কাছে মডেল হিসেবেই উপস্থাপিত হচ্ছে কালনী পাড়ের এই সংগঠনটি। এভাবেই মহৎ কার্জের দ্বারা পাড়াগাঁয়ের ছেলেদের ক্ষুদ্র থেকে বিশালাকার রুপ নেওয়া আজকের ছাত্র কল্যাণ ঠিকে থাকবে যুগ থেকে যুগান্তরে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৫ আগস্ট ২০১৯/মিআচ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন