Sylhet View 24 PRINT

দাদা-দাদির বলা গল্পেই আমি মুসলিম হওয়ার অনুপ্রেরণা পাই

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-০২ ১২:১২:১৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: অ্যাঞ্জেলা মুরি। আমেরিকান বংশোদ্ভূত আইরিশ নাগরিক। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে আমেরিকায়। জন্মসূত্রে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হলেও পারিবারিক ধর্মবিশ্বাসে কখনো আশ্বস্ত হতে পারেননি। তাই কৈশোর থেকে ধর্মকেন্দ্রিক আত্মপরিচয়ের সংকট অনুভব করতেন। সে থেকেই অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে জানতে শুরু করেন। অবশেষে ইসলামী বিশ্বাস ও মূল্যবোধে আশ্বস্ত হন এবং ২০১৬ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। সায়েন্স অ্যান্ড ফেইথ ডটকমে প্রকাশিত ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে তাঁর আত্মকথার চুম্বকাংশ প্রকাশ করা হলো

আমি অ্যাঞ্জেলা। সত্যি বলতে আমি জানি না, ঠিক কখন ইসলামের পথে আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমি একজন আমেরিকান হিসেবে বেড়ে উঠি। আমি বেড়ে উঠি অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে, যার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত নয়। তার পরও আমরা ছিলাম অনেক বেশি ভাববাদী। আমার দাদা-দাদি সব সময় আমাকে স্রষ্টা সম্পর্কে বলতেন। সত্যি বলতে ধর্মীয় গল্প শুনে শুনে আমি বড় হয়েছি। ১০ বছর বয়সে অন্য আমেরিকান শিশুদের মতো আমাকেও ক্যাথলিক বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হয়। আমার ধারণা, তাঁরা চিন্তা করেন এই বয়সে স্কুলে পাঠালে আমরা আরো বেশি আমেরিকান হয়ে উঠব। দুই বছর আমি ক্যাথলিক আবাসিক স্কুলে ছিলাম। তবে তা আমার চিন্তায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। শুধু একটি জিনিস আমার কাছে পরিষ্কার হয়। তা হলো, আমি ক্যাথলিক নই।

কৈশোর পার করার পর মানুষ আমার কাছে জানতে চাইত, তোমার ধর্ম কী? আমি উত্তর দিতাম, আমি ঠিক জানি না। আমরা ভাববাদী ছিলাম; কিন্তু আমাদের কোনো পরিচয় ছিল না। এটি আমাদের জীবনাচারের অংশ ছিল শুধু। বড়রা বলতেন, আমাদের জীবন প্রার্থনায় কাটানো উচিত। প্রতিটি পদক্ষেপ প্রার্থনায় পরিণত করা দরকার। এরপর বিবেকই তোমাকে পরিচালিত করবে। আমাদের এই ভাবাদর্শের কোনো নামের প্রয়োজন নেই। তবে আমি সত্যি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যেতাম যখন মানুষ জানতে চাইত আমার ধর্ম কী?

আমি অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে পড়তে শুরু করি। ধর্মবিষয়ক সব কিছুই পড়ছিলাম। কোনো ধর্ম সম্পর্কে কোনো তথ্য পেলে আমি তা যাচাই করে দেখতাম। এটি কী? কিন্তু আমার ভঙ্গি ছিল এমন, এটি আমার চিন্তায় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না। দিনে আমি যতবারই প্রার্থনা করি না কেন, তা আমাকে স্রষ্টা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে না। এভাবেই সময় পার হচ্ছিল। কিছুদিন পর একজন মুসলমানের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমরা ইসলাম সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা শুরু করি। আমি ইসলামের নানা বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করতাম। তবে তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট না থেকে নিজেও সে সম্পর্কে পড়তাম। অনলাইনে আমি ইসলাম সম্পর্কে প্রচুর পড়লাম। আমি অনুভব করলাম আমার চিন্তায় পরিবর্তন আসছে। আমার দাদা-দাদির মুখে যা শুনেছিলাম তার সঙ্গে ইসলামের অনেক মিল খুঁজে পেলাম। আমি ইসলাম সম্পর্কে আমার অধ্যয়ন অব্যাহত রাখলাম।

একদিন আমি একটি মুদি দোকানে গেলাম। সেখানে একটি ঝুড়ি দেখতে পেলাম। মানুষ তাতে বই রেখে যেত আর মুদি দোকানদার তা বিক্রি করে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দিতেন। আমি বইয়ের সারিগুলো দেখতে লাগলাম। আমার অল্পতে মুগ্ধ হওয়ার স্বভাব। তাই আমি সব বই কিনে নিয়ে এলাম এবং তা একে একে পড়তে লাগলাম। আমার কেনা বইগুলোর ভেতর কোরআনেরও একটি কপি ছিল। আমি কোরআন পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তা পড়তেও শুরু করলাম। আমি কিছুটা চিন্তিত ছিলাম। কারণ আমার দাদা-দাদি আমাকে যা শোনাতেন তার সঙ্গে মিল যেমন খুঁজে পেলাম, তেমন অমিলও খুঁজে পেলাম। তবে সব মিলিয়ে আমি বিস্মিত হয়ে ভাবি, এটিই তো আমি সারা জীবন খুঁজেছি এবং এটি এমন সুন্দর করে আর কেউ বলেনি। কোরআন আমার বিশ্বাস ও বোধে পরিবর্তন আনল। আমি স্বস্তি ও প্রশান্তি খুঁজে পেলাম। অবশেষে ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলাম। আলহামদুলিল্লাহ!

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মিআচ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.