Sylhet View 24 PRINT

অনুপ্রেরণার আরেক নাম মেধাবী ইফতু

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৯-০৬ ০১:১৯:০৪

আবদুল্লা আল মাসুদ :: যারা শারিরীকভাবে অক্ষম সমাজে তাদেরকে বোঝা মনে করা হয়। কিন্তু তারা আর দশ জনের মত সমান সুযোগ পেলে এগিয়ে যেতে পারে সমানতালে। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিয়ানিয়ারিং বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ কবির (ইফতু)। যেন সে সমাজের আর দশ জনের অনুপ্রেরণার আরেক নাম। এ বিষয়ে লিখছেন আবদুল্লা আল মাসুদ।

নিজেকে যেভাবে প্রমাণ করা
সাধারণ আর দশটা ছেলেমেয়েদের মতো পায়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি তার। হাড়ের দুর্বালতার কারণে জন্মের ৭দিন পরেই পায়ে প্লাস্টার করতে হয়। আজও সেরে উঠেনি ব্যাধিটা। দুটি পা অক্ষম হয়ে হুইল চেয়ারই তার একমাত্র ভরসা। যার কারণে ৫ম শ্রেণী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত কোচিং কিংবা ক্লাসে মায়ের কোলে চড়েই যেতে হয়েছে। ২০০০ হাজার শিক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগীতা করে ৫৬ তম স্থান নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজিয়েটে ভর্তি হওয়া। ৫ম শ্রেণী, ৮ম শ্রেণী, এসএসসিতে জিপিএ ফাইভ এবং সবশেষে এইচএসসিতে গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পেয়ে শাবিতে ৩২১ তম ,কুয়েটে ১৩১৪তম এবং রুয়েটে ৫৫৬তম হয়ে বাবা-মায়ের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটাতে পেরেছে বলে মনে করে ইফতু।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে একজন দক্ষ প্রোগামার হওয়ায় লক্ষ্য। তবে সুযোগ পেলে মাইক্রোসফট, অ্যাপল কিংবা ফেসবুকে কাজ করতে চায় সে। আর বিদেশে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য প্রথম পছেন্দ আমেরিকা আর তা না হলে পাশর্^বর্তী রাষ্ট্র ভারতই আছে পছন্দের তালিকায়। ভারতকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়া। তবে শুধুমাত্র শারীরিকভাবে অক্ষম হলেই যারা সমাজে অবহেলা-বাঞ্চনার শিকার হয়। তাদের জন্যও কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে তার। একজন মানুষের মেধাই যে সবকিছু এ বিষয়টা সবার মধ্যে জাগ্রত করতে চায় সে।

অন্যদের জন্য পরামর্শ
সমাজের অবহেলিত আর দশজনের ব্যাপারে পরামর্শ দিতে গিয়ে ইফতু বলেন, সমাজ ততক্ষণ তোমাকে মেনে নেবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত তুমি নিজে কিছু করে দেখাতে না পারবে। আমাদের সমাজে অনেকে আছে যারা শারিরীক এবং মানসিকভাবে সুস্থ। কিন্তু তারা সমাজকে কোন কিছু না দিতে পারায় সমাজ তাদেরকে মনে রাখছে না। কিন্তু আমি শারিরীকভাবে অসুস্থ হলেও সমাজকে যখন ভালো কিছু দিতে পারবো তখন সমাজ আমাকে মনে রাখবে। তাই আমি বলবো, তুমি শারিরীকভাবে সম্পূর্ণ কি না সেদিকে না ভেবে নিজের যোগ্যতা অর্জন কর। তবে ততক্ষণ পর্যন্ত যে যাই বলে বলুক মাথা পেতে মেনে নাও।

পরিচয়
পুরো নাম ইমতিয়াজ কবির এবং ডাক নাম ইফতু । পৈতৃকবাড়ি নড়াইলের কালিয়া থানার জামরিলডাঙ্গা গ্রামে । তবে বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের শাইনিং এ্যাওয়ার্ড কিন্ডারগার্ডেনে নাসার্রী থেকে পঞ্চমশ্রেণী এবং চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ এবং সবশেষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এ্যান্ড ইঞ্জিয়ানিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়া। বাবা এনামুল কবির চট্টগ্রামের  এক প্রাইভেট কোম্পানীর কর্মাশিয়াল ম্যানেজার আর মাতা ইয়াসমিন নাহার চট্টগ্রাম কৃষ্ণকুমারী সিটি কর্পোরেশন স্কুলের শিক্ষিকা।



সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯/এএএম/এসডি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.