আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং
বিপ্লব কুমার পোদ্দার:: কাদঁছে মানবতা,মরছে নিরীহ মানুষ। কিছুটা হলেও অবশেষে মোদি সরকার হয়ত,সামান্য হলেও ভুল বুঝতে পেরেছে তাদের কাশ্মীর নীতি নিয়ে। ভারতের সাম্প্রতিক সীমানা সংক্রান্ত বিবৃতি নিয়ে খুব স্বস্তিদায়ক অবস্থায় নেই,বিশেষত অমিত শাহের উগ্রপন্থী বক্তব্যের জেরে। এর প্রমান মেলে এস জয়শংকরের চীনের বিদেশমন্ত্রীর কাছে অমিত শাহের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেয়া নিয়ে। হয়ত অাপাতদৃষ্টে কাশ্মীরের অবস্থা নিয়ন্ত্রনে মনে হলেও ভবিষ্যতই বলবে এটা নিরবতা না কি অাগামী দিনের অান্দোলনের পুর্ব প্রস্তুতি। নিঃসন্দেহে প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অজিত ডোবাল একজন দক্ষ ব্যাক্তি, তিনি যেমন ভারতকে দিয়েছেন অনেক কিছু,তেমনি প্রাপ্তির ঝুলিও কম নয়। কিন্তু, সাম্প্রতিক নীতিমালা ভারতকে নব্বই দশকের কোন এক পরাক্রমশালী দেশের অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে না তো? কাশ্মীর ইস্যু শুধু অাজ ভারতে বা অামাদের উপমহাদেশ নয়,উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডন সহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে। এমনকি হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভের ঝড়ের ব্যাপক শিকার হয়েছে লন্ডনন্থ ভারতীয় হাইকমিশন ভবন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ছাত্র হিসেবে অামি চাইব ভারত এবং ভারতমাতার সন্তানরা ভালো থাকুক,শান্তিতে থাকুক। অার এর জন্য ভারত পাকিস্তান উভয়েই যেন মানবতাকে গুরুত্ব দিয়ে কাশ্মীরে সন্মানজনক একটি বাস্তবসন্মত সমাধান খোজেঁ।
যে অাশংকা ছিল অনেক অাগেই তাই যেন অাজ সত্যি হতে চলেছে। অাসামের এনঅারসি ইস্যু নিয়ে যখন ঘুমিয়ে ছিল সারা বিশ্ব এমনকি অামার প্রিয় মাতৃভুুমি বাংলাদেশ,কোন অাগ্রহ দেখায়নি বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাবার।
অামি একজন মানবতার পুজারী হিসেবে
২০১৮ সালে ব্যারিষ্টার ইকবাল, ব্যারিষ্টার অালিমুল হক লিটন,শিক্ষাবিদ শাহ অালম, মেজর (অবঃ) শাহ অালম,ব্যারিষ্টার হাসনাৎ এবং সর্বপোরি সাংবাদিক মুনজের অাহমেদ,অাব্দুর রশীদ
সাইদুল ইসলাম সহ অন্যান্য মানবতাবাদী ব্যাক্তিবর্গকে নিয়ে ড.প্রসেনজিৎ বিশ্বাসকে প্রধান অতিথি করে এক সেমিনারের মাধ্যমে অামরা এনঅারসির অাগাম ভয়াবহতা ও নীলনকশা নিয়ে অালোকপাত করেছিলাম। যা অাজ অনেকটাই সত্যি। অার বাকী অংশটুকু শুধু সময়ের অপেক্ষা। বিজেপি অত্যান্ত সুকৌশলে বাঙালি জাতিকে হিন্দু অার মুসলমানে বিভক্ত করে লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে তার অভিষ্ট লক্ষে পৌছেই বাঙালীর ভোটের সমর্থনের প্রতিদান দিতে শুরু করল। যেখানে ১৯ লক্ষাধিক মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে রাষ্ট্রহীন পরিচয় নিয়ে বেচেঁ অাছে,অামাদের এই একবিংশ শতাব্দীর দাবী করা সভ্যতার বিশ্বে। অার এই পড়ার মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি পরিবারের সদস্য থেকে প্রাক্তন ভারতীয় বায়ু সেনার অফিসার,বিভিন্ন সেক্টরের গুনী মানুষ। যারা তাদের প্রিয় ভারতমাতাকে রক্ষার জন্য জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করেছেন,তাদের কর্মক্ষেত্রে। এমনকি, ভারতের লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা মি. অধির রঞ্জন চৌধুরীকে ক্ষুব্ধ কন্ঠে বলতে শোনা যায়,অামার নামও তুমি এনঅারসিতে ঢুকিয়ে দাও,কারন অামার বাবাও ছিলেন বাংলাদেশী। পশ্চিমবঙ্গ, অাসাম,ত্রিপুরা সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালীর অবদান একটু হিসেব করে দেখবেন কি ভারত সরকার।
জ্যোতি বসু,প্রনব মুখার্জী তাদের রক্তের ধমনীতে বাংলাদেশের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে। অাজ যদি ভারত সরকারকে প্রশ্ন করা হয়,অাপনার দেশের জনগন যখন বিদেশে গিয়ে পাচঁ থেকে দশ বছরের বিভিন্ন মেয়াদে অবস্থানের পরে সে সমস্ত দেশে নাগরিকত্ব গ্রহন করতে পারলে অাপনার দেশে অাপনি কেন দ্বিমুখী নীতি নিয়ে পঞ্চাশ বছর বা তার অাশপাশে থাকা নাগরিকদের সাথে এ কেমন হীন অাচরন!
ইতিমধ্যেই এনঅারসির ফলাফল হল বাবাকে খুজেঁ পায় নি তার সন্তানরা,পেয়েছে অাত্বহত্যা করা পিতার লাশ। কাদঁছে গর্ভধারিনী মা,কারন তার পরিবারের অন্য সবার কোন রকমে তালিকায় স্থান পেলেও স্থান পায় নি গর্ভধারিনী মা। তার কান্না থামাবে কে?
তবে পরিস্থিতি যেদিকে অাবর্তিত হচ্ছে, তাতে বিশ্ব বাঙালী যদি নতুন মঞ্চের কথা ঘোষনা করে,তাতেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।
অাপাতদৃষ্টে বাংলাদেশ সরকার শক্তিশালী অথবা প্রকৃত কোন বিরোধী দল বিহীন রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারলেও বৈদেশিক নীতি অামরা পিছিয়ে পড়ছি। অাজ যদি প্রকৃত বিরোধী দলের ছায়াতলে কোটি কোটি জনতার অাসাম এবং কাশ্মীর বিরোধী প্রতিবাদ সভা এবং বিক্ষোভ অামার দেশে অনুষ্ঠিত হত,তবে নিশ্চই বর্তমান সরকার দর কষাকষিতে অনেক জোরালো অবস্থানে থাকত। তাই দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থে গনতন্ত্রকে ফিরিয়ে অানা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দেয়া সময়ের বলিষ্ট দাবী। জয়ী হোক বিশ্ব মানবতা। নির্ভয়ে থাকুক,অামার মা-বোন ভাই অার বিশ্ব।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯/মিআচ