Sylhet View 24 PRINT

৩৩০০ বছর পর ফারাওয়ের মমি খুলে যা দেখা গেল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০১-২৭ ১৪:২৫:২৮

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মিশরের এক রাজা ছিলেন তুতেনখামেন। মাত্র ৯ বছর রাজ্য শাসন করেও তিনি ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন। এ রাজাকে নিয়ে রহস্যের জট যেন খুলতেই চায় না! জানা যায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি শারীরিক অসুস্থায় মারা যান। তার এমন অকাল মৃত্যুর পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা আজও অজানা।

তবে তার সমাধি আবিষ্কারের পর মমির এক্স-রে করে জানা যায়, তার মাথার ফিছনের অংশে ছিল আঘাতের চিহ্ন। সেইসঙ্গে তার হাড়গুলোতে ছিল ফাটল। একদল গবেষকের অনুমান, রাজা তুতেনখামেনকে হত্যা করা হয়েছিল। আবার অনেকের দাবি, সিরিয়ার যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছিল এ ফারাওয়ের।

১৯৬৮ সালে যখন গবেষকরা তার মমি নিয়ে কাজ শুরু করেন; তখন তারা জানতে পারেন তুতেনখামেনের মাথায় ভারী পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। অনেক গবেষক ধারণা করেন, ঘোড়ার গাড়ি থেকে অসাবধানতাবশত পাথরের উপর পড়ে গিয়েই এ রাজার মৃত্যু হয়েছিল।

২০০৫ সালে গবেষক জাহি হাওয়াস বলেন, হত্যা বা অপমৃত্যু নয়; বরং যুবক রাজা তুতেনখামেনের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায়। ২০১০ সালের এক গবেষণায় গবেষকরা দাবি করেন, রাজার শরীরের রক্তে লোহিত রক্তকণিকার অভাব ছিল। ২০১৪ সালে তার ভার্চুয়াল অটোপ্সি করে দেখা হয়, তুতেনখামেনের বাম পায়ের একটি হাড়ের রোগ ছিল। সেটিও জিনগতই এবং ভাই-বোনের বিয়ে হওয়ার কারণেই, জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।

এ পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া বেশিরভাগ মমি চোর-ডাকাতদের হাত পড়ে নষ্ট হয়ে গেলেও যুবক ফারাওয়ের সমাধিটি ছিল অক্ষত। ইউরোপিয়ানদের কাছে তিনি কিং টুট নামে পরিচিত। সুখ্যাতি রয়েছে, তুতেনখামেন তার জীবদ্দশায় অনেক পুরনো রীতি ও প্রথা পাল্টে নতুন প্রথার প্রচলন ঘটান। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, সৌর দেবের পূজা বন্ধ করে চন্দ্রদেবের পূজার প্রথা প্রচলন।

তুতেনখামেনের সমাধি যখন উদ্ধার করা হয়; তখন সেটি ছিল মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরে। ১৯২২ সালের ৪ নভেম্বর তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কৃত হয়। সর্বপ্রথম তার সমাধিতে প্রবেশ করেন পুরাতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার এবং তার সঙ্গী লর্ড কারনাভান।

অনেক চেষ্টা করে ১৯২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, তারা সমাধির দরজা ভাঙেন। অবাক হয়ে যান মমির কফিন খুলে। স্বর্ণের তৈরি ৮টি কফিনের মধ্যে রাখা ছিল তার মমি। ইতিহাসে এমন মমির হদিস মেলেনি এখনও। প্রথম কফিনটি খোলার পর একে একে ৭টি ছোট-বড় কফিন খুলে অবশেষে তুতেনখামেনের মমি বের করেন গবেষকরা। সবগুলো কফিনেই স্বর্ণ, মণি-মুক্তার আবরণ ছিল।

একটি স্বর্ণের মুখোশ পরানো ছিল তুতেনখামেনের মুখে। তার বুকের উপর ছড়ানো ছিল শুকনো ফুলের পাপড়ি। গবেষকরা তুতেনখামেনের মমির ঠিক পাশেই একটি চিরকুট খুঁজে পান। তাতে লেখা ছিল- রাজার শান্তি বিনষ্টকারীদের মৃত্যু। তার সমাধির ওই ঘর থেকে পাওয়া যায়, মহামূল্যবান ধন-সম্পদ। এ ছাড়াও তুতেনখামেনের একটি সিলমোহরও ছিল। সাড়ে ৫ হাজারের বেশি হস্তশিল্প খুঁজে পাওয়া যায় তার সমাধিক্ষেত্রে।

কথিত রয়েছে, তার সমাধি নিয়ে যারেই গবেষণা করতে গিয়েছেন; তাদেরই না-কি রহস্যময়ভাবে মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নানা ব্যখ্যাও রয়েছে। ধারণা করা হয়, তুতেনখামেনের সমাধি না-কি অভিশপ্ত। এর কিছু উদাহরণও রয়েছে। রাজা তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের কাজে যারা জড়িত ছিলেন; তারা সবাই রহস্যময়ভাবে মারা গিয়েছেন। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, অভিশাপ নয় বরং হাজার বছরের বিষাক্ত জীবাণুর কারণেই মৃত্যু হয়েছে উদ্ধারকর্মীদের। তবে এ তথ্য মানতে নারাজ অন্যান্যরা।

২০১১ সালে তুতেনখামেনের সমাধি অন্যত্র সরানো হয়। যেহেতু তার সমাধি অভিশপ্ত হিসেবে বিবেচিত; তাই মন্ত্র পড়ে ১২ জন মিলে সরানো হয়েছিল তুতেনখামেনের কফিন। তবুও যুবক এ রাজার অকাল মৃত্যুর বিষয়ে জানতে গবেষকদের আগ্রহ রয়েছে তুঙ্গে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/মিআচৌ-২৫

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.