আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন তবে...

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২১-০৪-১১ ২১:৪১:৩১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের ডায়াবেটিক এমন কোন বাধা নয়। প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি। ডায়াবেটিক রোগীরা রজমানের কমপক্ষে ৩ মাস পূর্বে ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নেবেন। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে রমজানের পূর্বে প্রস্তুতি নিয়ে যারা রোজা রাখেন তাদের হাইপো সহ অন্য জটিলতা রমজানের পূর্বের চেয়েও অনেক কম। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সহজে এবং নিরাপদে রোজা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে।

ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন কি না এটা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন। প্রশ্নটা খুবই সংগত। আল্লাহ পরম দয়ালু। মানুষের স্বাস্থ্যহানী হয় এমন কিছু থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। আল্লাহর আদেশ মানা যেমন জরুরী নিষেধ পালন করা তেমনি জরুরী। সুতরাং রোজা রাখার জন্য সব স্বাস্থ্য বিধি পালন করেও যদি স্বাস্থ্যহানী হওয়ার ভয় থাকে তবে তার রোজা রাখা সংগত নয়। সে ক্ষেত্রে ফিদিয়া বা কাযা রাখার বিধান আছে। আল্লাহ আমাদের মনের খবর রাখেন। নিয়তের উপর বিচার হবে। ছুতা খোঁজার কোন প্রয়োজন নেই। রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করা এমন কি প্রয়োজন হলে ইনসুলিন ইনজেকশন নেয়া যেতে পারে। ধর্ম বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আমরা জেনেছি এতে রোজার কোন ক্ষতি হয় না। সুতরাং এসব নিয়ম মেনে ডায়াবেটিক রোজাদার রোজা রাখতে পারবেন।

ব্রিটল ডায়াবেটিক এবং ডায়াবেটিসের সঙ্গে অধিক জটিলতা যাদের আছে তাদের রোজা রাখা ঠিক নয়। সন্দেহ থাকলে অভিজ্ঞ কিংবা ধর্মভীরু হক্কানী আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারেন। রোজা মানুষকে সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে  উদ্বুদধ করে। সুশৃঙ্খল জীবন ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য অপরিহার্য। ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখার আকাঙ্খা নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে আগে থেকে পরামর্শ করে সুগার কন্ট্রোল করে রাখলে রোজা রাখতে আরো বেশী সুবিধা হবে। সুতরাং এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, রোজা রাখার আকাঙ্খা ডায়াবেটিক রোগীর ডায়াবেটিক কন্ট্রোল এর ব্যাপারে আরো বেশী উদ্যোগী করবে।     
 
বিশেষভাবে জানা প্রয়োজন:  
১/ রমজান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত এবং নাজাতের
২/ রমজান আত্মশুদ্ধির এবং আত্মপোলব্ধির মাস
৩/ রমজানের সুশৃঙ্খল জীবন যাপন এবং ইবাদত বন্দেগী ডায়াবেটিক রোগীদের ওজন এবং সুগার কমাতে সহায়তা করে।
৪/ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। তবে ৩ মাস আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিতে হবে।
৫/ রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিকের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।
৬/রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিকের ওষুধ সমন্বয় করবেন না। এতে মারাত্মক পরিণতি হবে পারে।
৭/ রোজার সময় দিনে এবং রাতে সুগার মাপা উচিত, ইসলামী চিন্তাবিদের মতে, এতে রোজার কোন ক্ষতি হয় না।
৮/ সেহরীর খাবার সেহরীর শেষ সময়ের কিছু আগে খাওয়া উচিত। ইফতারের সময় বেশী চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না।
৯/ রোজার সময় দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগøাইসেমিয়া হতে পারে।  
১০/ রোজার সময় রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি (সম্ভব হলে ডাবের পানি), কম মিষ্টি রসালো ফল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।  
১১/ ডায়াবেটিক রোগীদের সার্বিক কল্যাণের জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু বান্ধব এবং প্রচার মাধ্যম গুলোতে এগিয়ে আসতে হবে।  

লেখক-অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন  
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান
এন্ডোক্রাইনোলজি (ডায়বেটিস এন্ড হরমোন) বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
শাহবাগ, ঢাকা।  

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১১ সেপ্টেম্বর ২০২১/ডেস্ক/জুনেদ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন