আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

'যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়'

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৭-১৮ ০০:১৯:০৩

শামছুল হক মিলাদ :: লেখকরা লেখতে ভালোবাসেন, লেখা-লেখিতেই তাদের ধ্যান জ্ঞান। টানা লিখতে পারার অসম্ভব ক্ষমতা সব লেখকের হয়না। কিছুদিন লিখার পর অনেকেই থমকে দাঁড়ায়। লেখা-লেখির প্রতি গভীর অনুরাগ সবার তখন থাকে না। কিন্তু হুমায়ুন আহমেদের ছিলো। অনেক বেশি ছিলো। টানা ৪০ বছর বাংলা সাহিত্যে লিখে গেছেন। তার মধ্যে ৩০-৩৫ বছর ছিলেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়।  এতো লেখালেখির পর হুমায়ুন আহমদ বলতেন জীবন এতো ছোট কেনো।

শুধু লেখা-লেখি নয়, গান রচনায় দারুণ পারদর্শী ও ছিলেন হুমায়ুন আহমদ। নিজের নির্মিত প্রায় সব ছবিতেই হুমায়ুন আহমদ নিজের লেখা গান ব্যবহার করতেন। তার মধ্যে অন্যতম একটি ,\'যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়।\'

তুমি চলো এসো যদি মন কাঁদে, আমাদের মন কাঁদে তোমার জন্য। আরেকটা বর্ষা চলো গেলো ,নবধারা জলে ছায়ানট কিংবা পিচঢালা পথে তরুণ-তরুণীরা ভিজতে ভিজতে কাক ভেজা হয়ে গেলো। সবধারা জলে আত্নাশুদ্ধিতে তোমার লেখা গল্পের মতো করে অনেকেই শুদ্ধি হতে চাইলো। শুধু এই বর্ষায় তোমাকে পাওয়া গেলো না। সময়ের হিসেবে তোমায় ছাড়া এটি কততম বর্ষা? হিসেব কষতে চাই না, ভিতরটা যে ঢুকরে ওঠে।

জ্যেৎস্না হচ্ছে, নদীতে বান ডাকছে তুমি নেই ফিরবেনা আর কখনো এটাই সত্য -তবু মন কাঁদে তুমি ফিরো এসো এক বরষায়।

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ স্যার হুমায়ুন আহমদ, ১৯৪৮ সালের ১৩ ই নভেম্বর নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরির সূত্রে ঘুরে বেরিয়েছেন সারা দেশ জুড়ে। ঘুরে বেরানোর মতো নামটা পরির্বতন করেছেন দ্রুত। পিতা ফয়জুর রহমান নিজের নামের সাথে মিল রেখে রাখলেন শামসুর রহমান, তারপর কাজল, সেখানে স্থায়ী হয়নি দ্রুত পরির্বতনে হলেন হুমায়ুন আহমদ। স্কুলে পড়ালেখার সময়ে এই নামটার প্রতি বিরাগ জন্মেছিলো হুমায়ুনের। কারণটা মোঘল সম্রাট হুমায়ুনের বারবার শের শাহর হাতে পরাজিত হওয়া। অবশ্যে পরিণত হওয়ার সাথে সাথে এসব আর ঘ্রাস করেনি থাকে।

বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে অর্নাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পি. এইচ. ডি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলে স্থায়ী হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে।

সাহিত্য জগতে ডুবে থাকা এই মহান পুরুষ পরবর্তীতে অধ্যাপনা ছেড়ে ঝুঁকে পড়েন গল্প, উপন্যাস, নাটক, সায়েন্স ফিকশন, আর চলচ্চিত্রে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন