আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং
মুনজের অাহমদ চৌধুরী :: অামাদের শ্লীলতাহীন রাজনীতির অশ্রাব্যতা নিয়ে লিখতে ভাল লাগে না। বাংলাদেশটা দাড়িয়ে অাছে একটা ভাষার উপর। ভাষার অান্দোলন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের অাতুড়ঁঘর। অথচ, ভাষার দেশেই অশ্রাব্য অার মিথ্যে ভাষ্যে দাড়িয়ে থাকে মিথ্যচারী শাষক। রাজনীতি কেবল সেখানে কথা বলতে জানে ক্রোধ অার ক্ষমতার দম্ভের অক্ষরে। দেশ,জনগনের প্রতি অভিভাবকত্বের মমত্বের শব্দে কথা বলা এখনো শিখতে পারেনি চলতি রাজনীতি। বাক্যে বাক্যে উদ্ধত ভঙ্গিমা অার মিথ্যাচারের খেলা এ দেশের রাজনৈতিক চরিত্রগুলোর যেন লজ্জাস্থান নিবারক বস্ত্র।
বুধবার ভোররাতে অাচমকাই খুব অাদরের ছোটভাই,প্রিয় সংবাদপাঠক সাইদুল ইসলামের ফোন। তার অনুরোধ-ভাই,বিচার বিভাগের প্রতি শাষকদলের,সরকারের মন্ত্রীর অনায্যতা, অশ্লীলতা নিয়ে লিখুন। অামি তাকে বলছিলাম,ভাই এ বিষয়টি নিয়ে লিখতে হবে গ্রাম্য বড় বিচারকটির পৌরানিক পুনঃ পুনঃ প্রচারিত গল্পও। যিনি উপঢৌকন গ্রহন অার পানে ন্যায়হীনতায় কিছুটা ছিলেন টালমাটাল। সাইদুল বলল,তাহলে ভাই এ বিষয়টা না হয় উহ্য করে লিখুন।
উহ্য করে লিখতে গেলে দেখি মন্ত্রীবাহাদুর সার্ভভৌম একটি রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের প্রতি কী বেয়াদবীময়তায় ঊদ্ধত্বের অাঙ্গুল তুলেন। কী করে যে একজন জৈষ্ঠ্য রাজনীতিক,সিনিওর মন্ত্রী বলতে পারেন,"অাদালতের হাত সংসদ ছোঁয়ার মত লম্বা হয়নি" অামার ভাবতে লজ্জা হয়। অামার ভাবনাগুলো এই ভেবে লজ্জায় নত হয়,দেশটার বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা কোন মুখে সরকারগুলি বলে। একজন সৎ দরিদ্র অাইনজীবি পিতার সন্তান হয়ে
রাজনীতিকে নিজে দেখেছি স্লোগান,ব্যারিকেড,রোধ অবরোধের নিত্যদিনের বোধে। বিরক্ত জনগনের বিরক্তি অার বেদনার ভাষ্য হয়তো অবমাননা অবধি পৌছুঁতে পারে। তবুও বলি, এখনো অামাদের রন্দ্রে রন্দ্রে দুর্নীতি,প্রবঞ্চনা অার জনগনের সাথে নিপুন প্রতারনার নামধারী রাজনীতির চেয়ে বিচার বিভাগ হাজার গুন সৎ। শত গুন নৈতিক। রাজনীতির নীতিহীন মুখগুলো কতটা প্রবলতায় যে অনৈতিক,তার দুটি বেদনার কথা লিখে ই পাঠকের ধৈর্য্যচ্যুতির অবসান ঘটাচ্ছি।
বছর কয় অাগে যখন তত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় দিলেন অাদালত তখনওতো এ সরকার ক্ষমতায় ছিল। একই নেত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী,দলও। কই তখন তো অাদালতের অাদেশে অায়েশি হাসি হেসে রাজনৈতিক খায়েস পূরনের হাসি হেসেছিলেন মন্ত্রী বাহাদুরেররা। অাজ কেন তবে উদ্ধত্বমাখা এ অদ্ভুত বৈপরীত্য। সুবিধার দামে চরিত্র বদল দেশে দেশে জানি পুজিঁর রাজনীতির চরিত্রের দৌরাত্ব। কিন্তু এতটা নগ্নতায় পল্টি খাওয়া নীতির বিকৃতি নাপাক পাকিস্তানের মতো দেশেও বুঝিবা বিরলপ্রায়। বিচার মানি কিন্তু বিচারক তালগাছ সব অামার- এমন বৈপরিত্বের অদ্ভুত রাজনীতির নীতিহীন বৃত্তি বড়ো অাহত করে অামায়। অক্ষর সেখানে খুজেঁ হয়রান হয় শ্রাব্যতম ক্ষোভের প্রতিবাদের ভাষা।
অামরা বড়ো মানুষগুলোকে,প্রতিষ্টানগুলোকে ছোট করে নিজেদের ছোটলোকের চোখে দেখতে ভালবাসি স্বভাবের ক্ষুদ্রতায়। বিচার বিভাগও যদি অসভ্য রাজনীতির দেশে স্বাধীন কন্ঠে কথা না বলতে পারে,তাহলে কোথায় থাকল সংবিধানের মর্যাদাময়তা?
ভোট দিতে দেয়া হল বা না হল বাংলাদেশে বহু জনগন এখন তার এখন অার তোয়াক্কা করেন না। না করবার বাস্তবতা যে বিদ্যমান নয় তা বলা হবে মিথ্যাচার।
অাসলে দম্ভের বা অহংকারের দ্বারা চালিত মানুষগুলোর মতোন সরকারগুলোও কখনো তার প্রকৃত অবস্থান দেখতে পায় না।
না,রাজনীতির প্রতি বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই অামার,নেই বেদনাও। অাহত করে কেবল রাজনীতির নীতিহীন দম্ভ অার অাস্ফালনের অন্ধকারাচ্ছনতা। কী বিশাল শুন্যতায় সেখানে যে অনুপস্থিত ন্যায্যতা,অাহারে...।
বরঞ্চ হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে বিশ্বাস করি,রাজনীতির সুবিধা অার স্বার্থান্ধ গতিটি যেদিন পাল্টাবে সেদিন পাল্টাবে দিন। কেবল রাজনীতির ই সেই ক্ষমতা অাছে দুর্নীতি অার অনায্যতার দিনবদলের।
সুশাষন অার ন্যায় রাজনীতির নীতিহীন নগ্ন দুপুরে যে অাসবে না সেকথা জানি। সে সুর্যোদয় কেবল মাত্র অানতে পারে রাজনীতির ইতিবাচকতা ই ।
লেখক, লন্ডনবাসী সাংবাদিক,সদস্য রাইটার্স গীল্ড অব গ্রেট ব্রিটেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৯ আগস্ট ২০১৭/এমকে-এম