আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এবার অনলাইনে তক্ষক বেচাকেনা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১০-০৮ ০০:২৬:২৭

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী তক্ষক ধরা, কেনা ও বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণির মানুষ তক্ষক সংগ্রহ করছেন।

আর তা বিক্রিতে এবার নতুন ও নিরাপদ পথ বেছে নিয়েছেন কেউ কেউ। আজ দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি বেচাকোন গ্রুপে হঠাৎ চোখ আটকে গেল। আলী হোসেন সাইদুল নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে বিক্রির উদ্দেশে একটি তক্ষকের ছবি পোস্ট করা হয়। এরপরই শুরু হয় সাইজ, ওজন আর দরদাম নিয়ে আলোচনা।

দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে ‘সেল বাজার সেল এ্যান্ড বাই অনলি বাংলাদেশ’ (Sell Bazar Sell And Buy Only Bangladesh) নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে একটি তক্ষকের ছবিসহ পোস্ট করেন আলী হোসেন সাইদুল। এরপর সেই ছবির নিচে তক্ষক কিনতে আগ্রহীরা কমেন্ট করতে শুরু করে। কেউ কেউ এর ওজন ও সাইজ জানতে চেয়েছেন। আবার কেউ কেউ ইনবক্সে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন। আব্দুলাহ আল মামুন নামের একজন লিখেছেন, কত ইঞ্চি, ওজন কত?। আবার সাইদুর রহমান সাগর নামের একজন লোকেশন জানতে চেয়ে কমেন্ট করেছেন। এর নিচে আলী হোসেন সাইদুল ইনবক্সে আসার অনুরোধ করেন। 

তবে অনেককেই আবার এর তীব্র সমালোচনাও করতে দেখা গেছে। মোহাম্মদ আর চৌধুরী নিশান লিখেছেন, ভাই পোস্ট রিমুভ করেন। এটা ইলিগ্যাল, আপনার জেলও হতে পারে। কেউ কেউ আবার এসব পোস্ট ওই গ্রুপে এপ্রোভাল দেওয়ায় গ্রুপ এডমিনদের দায়ী করেন। এর কিছুক্ষন পরেই তক্ষক বিক্রির এই পোস্টটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তক্ষক কর্ডটা পর্বের সরীসৃপ শ্রেণীর গ্যাকোনয়ডি (Gekkonidae) গোত্রের একটি (গিরগিটি/ টিকটিকি জাতীয়) প্রাণী। এর পিঠের দিক ধূসর, নীলচে- ধূসর, বা নীলচে বেগুনি-ধূসর হয়ে থাকে। সারা শরীরে থাকে লাল ও সাদাটে ধূসর ফোঁটা। পিঠের সাদা ফোঁটাগুলো পাশাপাশি ৭-৮টি সরু সারিতে বিন্যস্ত থাকে। কম বয়সী তক্ষকের লেজে পরপর গাঢ় নীল ও সাদা রংয়ের বলয় রয়েছে। মাথা অপেক্ষাকৃত বড়, নাক চোখা। চোখ দু’টো বড় বড়। লেজ সামান্য নোয়ানো। এরা দৈর্ঘে নাকের ডগা থেকে পা পর্যন্ত ১৭ সেমি এবং লেজও প্রায় ততটা লম্বা। তক্ষকের ডাক বেশ চড়া, স্পষ্ট ও অনেক দূর থেকে শুনা যায়। কক্কক্ আওয়াজ দিয়ে এর ডাক শুরু হয়, অতঃপর তক্ ক্কা আওয়াজে স্পষ্ট স্বরে কয়েকবার ডাকে। 

এরা কীট-পতঙ্গ, ঘরের টিকটিকি, ছোট পাখি ও ছোট সাপ খেয়ে থাকে। ছাঁদের পাশের ভাঙ্গা ফাঁক-ফোঁকরে বা গর্তে অথবা পুরানো গাছের খোড়লে বাস করে। অনেকে ভুলক্রমে তক্ষককে বিষাক্ত সরীসৃপ হিসেবে চিহ্নিত করে। আসলে এরা বিষাক্ত নয়। 

তক্ষককে মহামূল্যবান আখ্যা দিয়ে একটি বিশেষ চক্র এসব সংগ্রহ করছেন। এক শ্রেণীর কবিরাজ এর তেল বেদনা-নাশক, পৌরুষত্ব বাড়ানোসহ নানা রোগের ওষুধ হিসেবে বিক্রি করে থাকে বলে গুজব রয়েছে। এছাড়া 'বিদেশে এটির মূল্য কোটি টাকা' এমন গুজবও রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল পরিমানে তক্ষক জব্দ করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তবুও থামছেনা তক্ষক কেনাবেচা। কিছু ভ্রান্ত ধারণা থেকে এরা নিধন হচ্ছে এবং এক শ্রেণীর মানুষ এ থেকে মুনাফা আদায় করে নিচ্ছে।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন