Sylhet View 24 PRINT

বিজেপিতে যোগ দিয়েই মমতার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার অর্জুনের

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-১৪ ১৪:৩৫:৩৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর সেই জল্পনা আরও বেড়ে যায়। সেই জল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই শেষ পর্যন্ত মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন অর্জুন সিংহ।
জল্পনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। অবশেষে বিজেপিতে যোগ দিলেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বিজেপির দফতরে মুকুল রায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়-এর উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।

অর্জুন সিংহের ইচ্ছা ছিল ব্যারাকপুর থেকে লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার। দীনেশ ত্রিবেদী প্রার্থী হন তা কোনওদিনই চাননি অর্জুন। আর এ নিয়েই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে ভাটপাড়ার এই বিধায়কের।

বিষয়টি আঁচ করেই কিছুদিন আগেই অর্জুনকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মাঝে বেশ কিছুদিন চুপচাপই ছিলেন ভাটপাড়ার এই বিধায়ক। কিন্তু, গত মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরই রীতিমতো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অর্জুন। তালিকায় অর্জুনের নাম তো ছিলই না, উল্টে ব্যারাকপুর থেকে প্রার্থী করা হয় দীনেশ ত্রিবেদীকেই। আর প্রার্থী তালিকা দেখার পরই ফের সরব হন অর্জুন। নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেন বিজেপির সঙ্গে।

তৃণমূলের কয়েকজন বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তার ইঙ্গিত মেলে বুধবার তৃণমূল নেত্রীর কথাতেই। গতকালই দলীয় সাংসদদের নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকেই দলনেত্রী বলেন, ‘‘দু’একজনের প্রার্থী হওয়ার লোভ আছে। যারা যেতে চায়, তারা গেলে তো বেঁচে যাই। কে গেল, ওরা কাকে নিল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি অনেককে বলে দিয়েছি, যা। মুক্ত করে দিচ্ছি। টাকা নিয়ে যারা দল ভাঙায় তাদের নিন্দা করি।’’

এরই মাঝে বুধবার রাতেই দিল্লি চলে যান অর্জুন সিংহ।  সূত্রের খবর, শুধু ব্যারাকপুর থেকে প্রার্থী হওয়াই নয়, আরও বৃহত্তর দায়িত্বের প্রতিশ্রুতি বিজেপি থেকে আদায় করে নিতে চান অর্জুন সিংহ। আর সেই দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্জুন।

এক সময় তৃণমূলে যে মুকুল রায়ের সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্ক ছিল কার্যত অহি-নকুল, এ দিন সেই মুকুল রায়ের পাশে বসেই এ দিন তৃণমূলকে আক্রমণ করেন অর্জুন। তৃণমূল নেন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেন অর্জুন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যখন মোদীজির নেতৃত্বে সেনাবাহিনী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে, তখন মমতার কিছু মন্তব্য বেশ দুঃখজনক।’’ অর্জুন বলেন, ‘‘ যে কথা মমতা বলেছেন, তাতে আমি খুবই মর্মাহত। সেই ঘটনার পরই তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। এই দলের সঙ্গে কাজ করা আর সম্ভব নয়, তা তখনই বুঝে গিয়েছিলাম।’’  অর্জুন আরও বলেন, ‘‘৩০ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু, পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার পর মমতা যে মন্তব্য করেছেন তা মেনে নেওয়া সম্ভব হল না।’’ এ দিকে অর্জুনের দলত্যাগ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী। তিনি বলেন, ‘‘কে এল, কে গেল তা  নিয়ে আমরা ভাবিত নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন, তা আমি পালন করব। কয়েক জনের দলত্যাগ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বা রাজ্যের সাধারণ মানুষ ভাবিত নন।’’

অর্জুনের পাশাপাশি মমতাকে এ দিন আক্রমণ করেন মুকুল রায়ও। একাধিক তৃণমূল নেতার বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে মুকুলের মন্তব্য, ‘‘এটা  তো ট্রেলার চলছে, আসল সিনেমা এখনও বাকি।’’ অর্জুনের দলত্যাগ প্রসঙ্গে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরীও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যে রাজনৈতিক নোংরা খেলায় 'দিদি' কংগ্রেস দল ভাঙলো, সেই একই খেলায় 'দিদি'র দল ভাঙছে বিজেপি। আমি অনেক আগে বলেছিলাম যে 'দিদি'কেও একদিন একই খেলার শিকার হতে হবে।’’ মমতাকে আরও কটাক্ষ করেন তিনি বলেন, 'দিদি' আপনার রাজনৈতিক পাপ আপনাকে ছাড়বে না।
সিলেটভিউ ২৪ডটকম/১৪ মার্চ ২০১৯/এমএইচআর

সৌজন্যেঃ আনন্দবাজার

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.