আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং
৩১ বছর বয়সী এক নারী। আর এ বয়সে ৭০০ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
বিষয়টি অন্যরকম শোনা গেলেও নিজের জন্য এসব পরীক্ষা দেননি তিনি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী পুষ্পা এন এম নামের এই নারী ৭০০ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরীক্ষা দিতে সাহায্য করেছেন। লিখছেন তাদের হয়ে।
ভারতের বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এই পুষ্পা। ২০০৭ সালে বন্ধুর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কাজ করতে ইচ্ছুক হন তিনি।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তির হয়ে পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তাব দেন। পরিক্ষার্থী বলবেন আর পুষ্পা তার কথা শুনে শুনে লিখবেন।
পুষ্পাও এমন সামাজিক কর্মটিই যেন খুঁজছিলেন। এর পর থেকে পুষ্পা এই ১২ বছরে ৭০০ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীর হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধীদের হয়ে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০টি পরীক্ষা দেন পুষ্পা।
এ বিষয়ে পুষ্পা বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার চেয়ে তাদের পাশে এভাবে দাঁড়ানোকে আমি উত্তম মনে করি।
তবে এর জন্য তাকে অনেক সময় দিতে হয় ও কষ্ট করতে হয় বলে জানান পুষ্পা।
তিনি বলেন, যার হয়ে পরীক্ষা দেব তার সঙ্গে আগে ভাব জমাতে হয়। তার মানসিক বিষয়ে জ্ঞান নিতে হয়। তার দক্ষতা ও কথা বিনিময়ের সব বিষয় আগে শিখে নিতে হয়।
এসব বিষয় না জেনে ওই শারীরিক প্রতিবন্ধীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে গেলে ফলাফল ভালো হবে না বলে জানান তিনি। এসব বিষয়ে বেশ সতর্ক থাকেন পুষ্পা। কারণ তিনি মনে করেন, তার ওপর এসব পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যতের অনেকটা নির্ভর করে।
এমন সামাজিক কর্মে কেন জড়িত হলেন প্রশ্নে পুষ্পা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নিজের জীবনের কথা জানান।
তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বেতন দিতে না পারায় একবার পরীক্ষার হল থেকে বেরও করে দেয়া হয়েছিল আমাকে। ওই সময় পোলিও আক্রান্ত এক ব্যক্তি তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেন।
ওই প্রতিবন্ধীর সাহায্যে তিনি আবার পড়াশোনায় নিয়মিত হন।
পুষ্পা বলেন, এ ঘটনার পরই সিদ্ধান্ত নেই যে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব ও সুযোগ পেলেই কোনো প্রতিবন্ধীকে তার পরীক্ষা দিতে সাহায্য করব।
পুষ্পার এমন অভিনব সামাজিক কর্মের কারণে গত বছর রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে তিনি নারীশক্তি পুরস্কারে সম্মানিত হন।
সিলেটভিউ ২৪ডটকম/২১ মার্চ ২০১৯/গআচ
সৌজন্যে: যুগান্তর