Sylhet View 24 PRINT

ভারত-ছাড়ার নোটিস: বাংলাদেশি ছাত্রীর পক্ষে লড়বেন শিক্ষকরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২৮ ২০:২৩:০২

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ফেসবুকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করায় ভারত ছাড়ার নোটিসের বিরুদ্ধে কলকাতার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বাংলাদেশি ছাত্রীর পক্ষে নৈতিক ও আইনি সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।

বুধবার ওই ছাত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশি নিবন্ধকের আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে আসা নোটিসটি পান। এতে ১৫ দিনের মধ্যে তাকে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।-খবর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার

কুষ্টিয়ার মেয়ে আফসারা আনিকা মিম ২০১৮ সালে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কলাভবনের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইনে পড়তে পশ্চিবঙ্গে যান। তিনি এখন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

নোটিসটি পুনর্বিবেচনার জন্য বৃহস্পতিবার বন্ধুদের নিয়ে কলকাতায় বিদেশি নিবন্ধকের আঞ্চলিক কার্যালয়েও গিয়েছিলেন এই তরুণী।

বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে রয়েছে জানিয়েছেন সেখান কর্মকর্তারা। এক বন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ২০ বছর বয়সী এই তরুণীকে নিজের বক্তব্য কয়েকটি অফিসে লিখিতভাবে জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার খুঁজতে বৃহস্পতিবারই বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একটি অংশ কলকাতার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের দ্বারস্থ হয়েছেন।

এক অধ্যাপক বলেন, মেয়েটি কয়েকটা ছবি সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেছিল। তার ভিত্তিতে তাকে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে। আমরা এর মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা ওই ছাত্রীকে সব ধরনের সহায়তা দেব।

আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, আফসারাকে দেয়া নোটিসকে আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে। কারণ তাতে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে তার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।

তিনি বলেন, ওই আদেশ ও তার ফেইসবুক পোস্ট আমি ভালভাবে খতিয়ে দেখেছি। আদেশে এমন কোনো নির্দিষ্ট কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ নেই যা দিয়ে প্রমাণিত হয় ওই ছাত্রী সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করেছেন।

‘মন্তব্য করা তার অধিকার এবং এর জন্য কেন্দ্র থেকে তাকে দেশ ছাড়তে বলা খুবই অস্পষ্ট একটা কারণ। এমনকি ওই নোটিস দেয়ার আগে তাকে নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়নি।’

বিক্ষোভের ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করার পর থেকে ওই ছাত্রী সামাজিকমাধ্যমে ট্রলের শিকার হচ্ছেন। খবরে বলা হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশি আঞ্চলিক নিবন্ধন কার্যালয় গত ১৪ ফেব্রুয়ারির তারিখে তাকে ভারত-ছাড়ার চিঠি পাঠিয়েছে।

নোটিসে বলা হয়, স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ভারতে পড়তে এসে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী আফসারা আনিকা মিম তার ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন।

গত ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। বিশ্ব ভারতীর এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধুদের কোনো আন্দোলনে যদি বিদেশি শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে কিংবা মন্তব্য করতে না পারেন, তবে এ কেমন গণতান্ত্রিক দেশে আমরা বসবাস করছি?

বুধবার ভারত-ছাড়ার নোটিশটি পাওয়ার পর তার শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন এই চারুকলার শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, আমি এখনো বুঝতে পারছি না যে আমি এমন কী ভুল করেছি যে এমন শাস্তি দিতে হবে। বিক্ষোভ র‌্যালিতে আমার অনেক বন্ধু অংশগ্রহণ করেছেন। সেই আগ্রহ থেকে কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি।

‘কিন্তু যখন দেখলাম একটি বিশেষ গোষ্ঠী তা নিয়ে ট্রল করছেন, তখন আমার ফেসবুক অকার্যকর করে দিয়েছি। সত্যিকার অর্থে আমি নিরপরাধ।’

আফসারা বলেন, চিঠি পাওয়ার পর আমার ওপর যেন কবরের অন্ধকার নেমে এসেছে। আমি বিশ্বভারতীতে পড়তে ভারতে আসি। একজন শিল্পী হওয়াই আমার স্বপ্ন। এখন আমার কী হবে, তা জানি না।

তার এক বন্ধু বলেন, সে কোনো বিক্ষোভে অংশ নেয়নি। কেবল কিছু ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে। তা কিছু ডানপন্থীর চোখে পড়ে যায়। তারা তাকে নিয়ে ট্রল করেন এবং বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি করেন।

তার ওই বন্ধু বলেন, তাকে রাষ্ট্রীবিরোধী আখ্যা দিয়ে অন্তত আড়াইশ ফেসবুক পোস্ট দেয়া হয়েছে। এক শিক্ষক বলেন, তাকে কোনো সাক্ষাৎকার কিংবা কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি। ১৪ তারিখে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

সৌজন্যে : যুগান্তর
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০/জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.