Sylhet View 24 PRINT

যে তরুণীর বুদ্ধিতে আবিষ্কার হয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-২৬ ১৩:৪৯:৩৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এখন অন্যতম ভরসা। কয়েক মাস আগেও নির্মাতা সংস্থা বা বিক্রেতারা ভাবতে পারেননি, এর চাহিদা এমন আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে। কিন্তু জানেন কি, অর্ধশতক আগেও এর অস্তিত্বই ছিল না।

তার আগে হাত পরিষ্কার রাখার জন্য মানুষের প্রধান ভরসা ছিল সাবান-পানি। কিন্তু হাসপাতালের কাজের মধ্যে সবসময় সাবান আর পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া, কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ বলেও মনে হয়েছিল নার্সিংয়ের ছাত্রী লুপি হার্নান্ডেজের। জন্মসূত্রে ল্যাটিন আমেরিকান এই তরুণীর মনে হয়েছিল, এমন কিছু জিনিস যদি থাকত, যাতে দ্রুত হাত পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। পানি বা সাবান অপ্রতুল হলেও ব্যস্ততার মধ্যে যাতে হাত জীবাণুমুক্ত করা যায়, লুপির মূল লক্ষ্য ছিল সেটাই। এই প্রয়োজন থেকেই জন্ম নিল হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

আজ যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার উঠে এসেছে প্রয়োজনের তালিকার শীর্ষে, তার আবিষ্কারক সেবিকাই আজ বিস্মৃত। এমনকি তার সম্বন্ধে খুব বেশি তথ্যও পাওয়া যায় না। ১৯৬৬ সালে লুপি নার্সিংয়ের ছাত্রী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বেকার্সফিল্ড শহরে।

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ১০০ মাইল উত্তরে বেকার্সফিল্ড শহরের নামকরণ কর্নেল টমাস বেকারের নামে। উনিশ শতকে তিনি এই অঞ্চলে বসতি শুরু করেছিলেন। তাকে অনুসরণ করে এখানে জনবসতি বাড়ে। ফলে বেকারের এলাকা বোঝাতেই ‘বেকার্স ফিল্ড’। জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কৃষিতে সমৃদ্ধ এই শহরেই আবিষ্কৃত হয়েছিল স্যানিটাইজার। যাকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিচারে বৈপ্লবিক আবিষ্কার হিসেবে বলা যায়।

লুপির মনে হয়েছিল, হাতের কাছে সাবান এবং গরম পানি না থাকলে তার বিকল্প হতে পারে অ্যালকোহল। তার মাথায় আসে, যদি অ্যালকোহলকে জেল'র আকারে পেশ করা যায়, তা হলে কেমন হয়? নিজের ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে তিনি যোগাযোগ করেন এমন সংস্থার সঙ্গে, যারা পেটেন্টের ব্যাপারে সাহায্য করে। টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে তিনি তাদের সন্ধান পেয়েছিলেন। তাদের মাধ্যমেই পেটেন্ট নথিভুক্ত করেন লুপি।

৫৪ বছর আগে লুপি ভাবতেও পারেননি তার আবিষ্কার একদিন জীবাণু আতঙ্কে একমাত্র পৃথিবীর কাছে অন্ধের যষ্টি হয়ে দেখা দেবে। তবে প্রথমদিকে কিন্তু আমজনতার মধ্যে আদৌ পরিচিত ছিল না এর ব্যবহার। হ্যান্ড স্যানিটাইজার তখন মূলত ছিল ডাক্তার, নার্সসহ জনস্বাস্থ্য বিভাগ সংক্রান্ত লোকজনের ব্যবহার্য জিনিস।

ক্রমে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের প্রচলন শুরু হয় মার্কিন সেনাবিভাগে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আমজনতার মধ্যে এর ব্যবহার দ্রুত হারে বৃদ্ধি পায় ২০০৯ সালে। এইচ ওয়ান এন ওয়ান সংক্রান্ত মহামারির সময়। করোনার দৌলতে বিশ্ববাজারে লিকুইড সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাহিদা বেড়েছে ৪০০ শতাংশ। তবে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা এখনও বলেন, জীবাণুমুক্ত করার বিষয়ে যে কোনও সাবানের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

কিন্তু পানি ছাড়া তো আর সাবান ব্যবহারের উপায় নেই। তাই যেখানে পানি নেই, সেখানে স্যানিটাইজার বিকল্পহীন। ফলে এর অজ্ঞাত ও বিস্মৃত আবিষ্কারক নতুন করে উঠে এসেছেন আলোচনায়। অর্ধশতক আগের এক নার্সিংয়ের ছাত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতায় নতজানু জীবাণুত্রস্ত একুশ শতকের আধুনিক বিশ্ব।

সৌজন্যে : বিডি প্রতিদিন

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ মার্চ ২০২০ /মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.