আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

করোনার কার্যকরি ভ্যাকসিন পেয়ে গেছে সিএসআইআরও'র বিজ্ঞানীরা!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০১ ২২:০২:২৩

সিলেটভিউ ডেস্ক :: কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস নিছক সাধারণ কোন ফ্লু ভাইরাস নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিনের গঠন বদলে প্রতিনিয়ত এই ভাইরাস নিজের চরিত্রই বদলে ফেলছে। এত বেশি নিজেকে বদলাচ্ছে এই ভাইরাস যে এর মতিগতি বোঝাই অসম্ভব হয় পড়ছে বিশ্বের বাঘা বাঘা ভাইরোলজিস্টদের কাছে। সংক্রমণ রুখার ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়াও তাই বিলম্বিত হচ্ছে। তবে আশার আলো এটাই যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েলে এই মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার উপায় আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা।

এবার অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স এজেন্সি দাবি করেছে, তারা করোনাভাইরাসকে রুখার কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির ফর্মূলা খুঁজে পেয়েছেন। কোভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য করোনভাইরাস ভ্যাকসিনগুলির পরীক্ষা শুরু করেছে।

কমনওয়েলথ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিচার্স অর্গানাইজেশনের (সিএসআইআরও) বিজ্ঞানীরা জিলংয়ে এজেন্সিটির উচ্চ-মাত্রার বায়োসিকিউরিটি সুবিধায় দুটি ভ্যাকসিন মানবদেহে টেস্ট ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ের কাজ করছেন।

প্রাক-ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে তিন মাস সময় লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইনোভিও ফার্মাসিউটিক্যালস থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য ভ্যাকসিনগুলি নিরাপদ এবং কার্যকর কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য প্রাণীর ব্যবহার করবে।

অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ২১ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৮৬০ জনে পৌঁছানোয় এই ট্রায়ালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার সংস্থাটির উপ-প্রধান মেডিক্যাল অফিসার পল কেলি জানিয়েছেন।

সিএসআইআরওর প্রধান নির্বাহী ড. ল্যারি মার্শাল এই পরীক্ষাটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

স্বাস্থ্য ও বায়োসিকিউরিটি ডিরেক্টর ডা. রব গ্রেনফেল বলেছেন, 'ভ্যাকসিন তৈরিতে কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি আবিষ্কার। সাধারণত এমন একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে এক থেকে দু'বছর সময় লাগে। আমরা মাত্র ৮ সপ্তাহের মধ্যে এটি সম্পন্ন করেছি, তাই এটি আসলেই খুব ভাল।'

ভ্যাকসিন প্রার্থীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে পরামর্শক্রমে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপার্ডনেস ইনোভেশনস দ্বারা সিএসআইআরওর প্রথম পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। তারা সিএসআইআরও পরীক্ষার আশা করে এমন লোকদের মধ্যে প্রথম ছিল।

ডা. গ্রেনফেল বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রার্থীদের একজনকে বিদেশেও পরীক্ষা করা হচ্ছে। যদি উভয় পরীক্ষায় এটি নিরাপদ এবং কার্যকর হিসাবে প্রমাণিত হয় তবে এটা মানবদেহে ব্যবহারের জন্য দ্রুত তৈরি করা হতে পারে। এই ধরণের পরীক্ষা আমাদের মানব অধ্যয়নের দিকে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস জোগানোর পক্ষে জরুরি।

সিএসআইআরও'র করোনভাইরাস এবং ভ্যাকসিনের কাজের নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক ট্রেভর ড্র বলেছেন, তারা জানুয়ারি থেকে সার্স কোভি -২ নিয়ে গবেষণা করছেন। এটার কারণেই কোভিড -১৯ রোগ হয়। আমরা বিশ্বব্যাপী এই জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার প্রেক্ষিতে ভ্যাকসিন তৈরি ও সেটার সুরক্ষার মাঝে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছি।

ডা. গ্রেনফেল কোভিড -১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি বলছিলেন, পরীক্ষা -নিরীক্ষা শেষে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে এটা ব্যবহারের উপযোগী হবে বলে আশা করছি। আমরা যে বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ব্যবহার করছি সেটা দেখে বিশ্বের অন্য যারা একই চেষ্টা করছে তারা আবাক হয়েছে।'

সৌজন্যে : ৭ নিউজ, কালেরকণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১ এপ্রিল ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন