আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

মারকাজ থেকে করোনায় আক্রান্ত ৭৬০০, সনাক্ত করতে ঘুম হারাম ভারতের!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০২ ১৮:০৬:১২

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে, এর পেছনে অন্যতম কারণ দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের তবলিগ জামাত। মারকাজ প্রধান মাওলানা সাদ কান্দলভি সরকারের নির্দেশ অমান্য করে জমায়েত করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে সেটা নিয়ে ঘুম হারাম কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, দেশের অন্তত ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন নিজামউদ্দিনে যোগ দেওয়া মানুষজন। তাদের মধ্যে সমাবেশে যোগ দেওয়া দেশ-বিদেশের হাজার দু'য়েক এবং তাদের সংস্পর্শে আসা লোকজন মিলিয়ে সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি মানুষকে শনাক্ত করাই এখন কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের কাছে অগ্নিপরীক্ষা।

বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২৩টি রাজ্যে প্রায় ৮৫০ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। সবাইকেই কোয়রেন্টিন করা হয়েছে। এ ছাড়া দিল্লি ও বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে ভর্তি কয়েক হাজার মানুষ। এখনও অনেকের রিপোর্ট আসেনি। তবলিগ জামাতের যোগসূত্রে বিভিন্ন রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের।

তবলিগ জামাতে যোগ দিয়েছিলেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে ছিলেন বিদেশের বহু প্রতিনিধি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এই সমাবেশে যোগ দেওয়া এবং তাদের সংস্পর্শে আসা লোকজন মিলিয়ে মোট সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার ৬০০। এর মধ্যে আবার বিদেশির সংখ্যা ১ হাজার ৩০৬ জন। এদের সবাইকে চিহ্নিত করে টেস্ট করানো সম্ভব হলে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সংকট মোকাবেলায় কী পন্থা নেওয়া হয়েছে?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, নিজামউদ্দিন মসজিদকে ফাঁকা করে দিয়ে এরই মধ্যে সেখানে জীবাণুমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দা, দোকানদার, বাইরে থেকে কাজ করতে আসা সবাইকেই স্ক্রিনিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো বিন্দুমাত্র উপসর্গ ধরা পড়লেও তাঁদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই কাজও শুরু হয়েছে গেছে। বাফার এরিয়া ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ আরও দু'কিলোমিটার ব্যাসার্ধ এলাকার বাসিন্দাদের পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাজ্যগুলিকে আগেই তবলিগ জামাত নিয়ে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গেও সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী জামাতে যোগ দেওয়া সদস্য এবং তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি রাজ্যগুলিতেও একই ভাবে চিহ্নিতকরণ ও সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আজ থেকেই সব রাজ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিহ্নিতদের স্ক্রিনিং শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন তবলিগ জামাতের একটি ধর্মীয় সমাবেশ শুরু হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও কিরগিজস্তানের প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই আয়োজনে অংশ নেন। ১৫ মার্চ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরও অনেকে সেখানে থেকে যান। পরে করোনা ছড়িয়ে পড়লে মসজিদটি খালি করে দেওয়া হয়।

ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ৮৫০ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। তবলিগ জামাতের যোগসূত্রে বিভিন্ন রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৯ জনের।

সৌজন্যে : আনন্দবাজার, কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২ এপ্রিল ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন