আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকারীর জামিন, ক্ষোভের আগুন সারা আমেরিকায়

৩৩ সিটিতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৫-৩১ ১৬:৪৪:৫৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক বর্বরোচিতভাবে হত্যার প্রতিবাদ এবং এই হত্যাযজ্ঞে ডেরেক চোভিনের সাথে অংশ নেয়া অপর ৩ পুলিশ অফিসারকেও গ্রেফতার দাবিতে মিনিয়াপলিস সিটির ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সারা আমেরিকায়।

শনিবার পর্যন্ত ৫ দিনে বিক্ষোভ-কর্মসূচির সময় টহল পুলিশ এবং হোয়াইট হাউজের সামনে সিক্রেট পুলিশের দেড় শতাধিক গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ছাড়াও মিনিয়াপলিশ সিটির একটি পুলিশ স্টেশন পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শুক্র ও শনিবার দিনভর চলা বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩৩ সিটিতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে বিক্ষোভকারিদের। এ সময় কমপক্ষে ২২ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট সিটি পুলিশ প্রশাসন থেকে। সবচেয়ে বেশি গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে লস এঞ্জেলেস, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, ফিলাডেলফিয়া প্রভৃতি স্থানে।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রবিবার ভোররাত নাগাদ কারফিউ জারি করা হয়েছে ১৬ অঙ্গরাজ্যে। এছাড়া, পরিস্থিতি সামলাতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি, মিনেসোটা, জর্জিয়া, কলরাডো, কেন্টাকি, ডেনভারসহ বিভিন্ন স্থানে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার ভোররাত ৫টা পর্যন্ত কারফিউ ছিলো মিনিয়াপলিস সিটিতে। ফ্লয়েডকে গ্রেফতার করার পর রাস্তায় ফেলে দিয়ে হাঁটু দিয়ে তার গলা চেপে ধরার পর একেবারে নির্জীব না হওয়া পর্যন্ত  ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণকারিরা ফেসবুকে প্রচার করেন। সেই পুলিশ অফিসারকে তুমুল বিক্ষোভের মুখে শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তৃতীয় ডিগ্রির হত্যা মামলা (সর্বোচ্চ শাস্তি ২৫ বছর জেল) দায়ের করা হয়েছে। পরদিন শনিবার তাকে ৫ লাখ ডলার বন্ডে মিনেসোটার আদালত জামিন দিয়েছে। এতে সন্তুষ্ট নন বিক্ষোভকারিরা। তারা ডেরেকের সাথে থাকা আরও ৩ পুলিশ অফিসারকেও মামলায় অভিযুক্ত এবং গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ঐ ভিডিওতে দেখা গেছে, হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরে রাখা হয় ৮.৪৬ মিনিট। প্রথম ২.৫৩ মিনিটেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন ফ্লয়েড। নিস্তেজ হবার আগে বেশ কয়েকবার তিনি আকুতি জানান যে, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না"। কিন্তু ন্যূনতম সাড়া দেননি পুলিশ অফিসারেরা।

মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপলিস সিটির একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে কাজ করতেন জর্জ ফ্লয়েড। ২ মে সন্ধ্যায় সন্দেহভাজন একটি প্রতারণার ব্যাপারে (২০ ডলারের জাল নোট) কল পেয়ে পুলিশ তাকে ধরে। ধরার সময় কোন বাধা দেননি ফ্লয়েড। তা সত্ত্বেও হাতকড়া পরানোর পর তাকে ফেলে দিয়ে এমন নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ঘটনাটি কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের নগ্ন প্রকাশ ঘটেছে এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে সারা আমেরিকায়। এই আন্দোলন এখন বিবেকসম্পন্ন সকলকে বিক্ষুব্ধ করেছে। প্রতিটি কর্মসূচিতেই কৃষ্ণাঙ্গেও চেয়ে দ্বিগুণ শ্বেতাঙ্গ, হিসপ্যানিক এবং এশিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
 
সৌজন্যে : বিডি প্রতিদিন

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩১ মে ২০২০/ডেস্ক/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন