Sylhet View 24 PRINT

সৌদি সিংহাসন দখলের লড়াই, কি হচ্ছে অন্তরালে?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৬-০১ ২১:২৫:২৪

সিলেটভিউ ডেস্ক :: যুক্তরাষ্ট্রের একটি লবি গ্রুপের প্রচেষ্টা এবং ইউরোপীয় আইনপ্রণেতাদের অনুরোধে সৌদি আরবের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে একজন প্রিন্সকে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে। যিনি কোন অভিযোগ ছাড়াই দুই বছর যাবত আটক আছেন। সৌদি প্রিন্সদের ওপর যে দরপাকড় চলছে তারই অংশ হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন প্রিন্স সালমান বিন আবদুলআজিজ।

২০১৮ সাল থেকে  তিনি এবং তার পিতা গ্রেফতার আছেন। সৌদি আরবের কার্যত শাসক ও যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার সিংহাসন দখলের পথে কোন কাটাই রাখতে রাজি নয়। তাই সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্ধীই শুধু নয়, যাকেই তিনি ক্ষমতা দখলে চ্যালেঞ্জ ভাবছেন  তাকেই কারারুদ্ধ করছেন।

যুবরাজের বিপজ্জনক এ খেলায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন কারারুদ্ধ এক যুবরাজের সাবেক সহকারী ও উর্দ্ধতন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আলজাবরি। কিন্তু তার দুই সন্তান ও ভাইকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বর্তমানে কানাডায় থাকা এ কর্মকর্তার কাছে রাষ্ট্রীয় অনেক গোপন তথ্য আছে।

যুবরাজের ধরপাকড়ের অন্যতম টার্গেট প্রিন্স সালমান। প্যারিসে লেখাপড়া করা এ রাজপুত্র অনেকটাই রাজনীতিবিমুখ ছিলেন। তিনি দরিদ্র দেশগুলোতে অর্থায়নে ইতিমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছেন দানশীল হিসেবে। প্রিন্স সালমানের একজন সহকারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এটা শুধু অন্যায্য গ্রেফতারই নয়, প্রকাশ্য দিবালকে অপহরণ, এটা বলপূর্বক গুম।’

কয়েকটি সূত্র এএফপিকে জানায়, একবছর তাকে কাররুদ্ধ করে রাখার পর প্রিন্সকে একটি বিচ্ছিন্ন বাড়িতে তার বাবার সঙ্গে সাক্ষাত করতে দেয়া হয়, তারপর একটি গোপন বন্দী খানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে মার্চে। রহস্যজনকভাবে ওই বাড়িতে গত সপ্তাহে আবারও তার বাবার সঙ্গে তাকে সাক্ষত করানো হয়েছে। তাকে কেন গোপন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এটি অস্পষ্ট। পরিবারের কাছে তিনি ফোন দিতে পারলেও সেটি মনিটরিং করে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তবে তাকে রিয়াদের পার্শ্ববর্তী জেলখানা থেকে বের করে আনা ইঙ্গিত দেয় এ প্রিন্সকে মুক্ত করতে আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে সৌদি। যদিও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক প্রতিনিধি দল রিয়াদ সফরে গেলে তারা প্রিন্স সালমানকে মুক্তি দেয়ার ব্যাপারে সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়। এটি সৌদি-ইউরোপ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে এক চিঠিতে বলা হয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের  একটি সূত্র থেকে এএফপি জানায়, গত মে মাসে ওয়াশিংটন ভিত্তিক শীর্ষ লবি প্রতিষ্ঠান রবার্ট স্ট্রিক এর সনোরান পলিসি গ্রুপ প্রিন্স সালমানের মুক্তির ব্যাপারে কাজ করতে ২০ লাখ ডলারের চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করবে। স্ট্রিক এর সঙ্গে ডোনাল্ট ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে বলে জানা যায়। চুক্তিটি করেছে প্রিন্স সালমানের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হাশিম মোগল। প্রিন্সকে মুক্ত করার জন্য ২০ লাখ ডলার তিনি যোগাড় করেন।

যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সিংহাসন দখলের এ লড়াইয়ে বহু প্রিন্সই এখন কারাগারে আছে। গত মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয় সৌদি বাদশাহ সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ এবং ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফকে। ক্ষমতার উত্তরাধিকারী হওয়ার দাবিদার তারাও। কিন্তু তাদের ২০১৭ সালে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার ক্ষমতার প্রতিদ্বন্ধীদের আপাতত সরিয়ে দিলেও করোনা সংকট ও তেলের দরপতনকে ঘিরে বড় ধরণের অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে সৌদি আরব। সেই সঙ্গে যুবরাজের ইয়েমেন হামলার ব্যর্থতা তো রয়েছেই। সেখানে প্রতিবছর বিপুল অংকের অর্থ ব্যয় হচ্ছে সামরিক বাহিনী ও অস্ত্রের পেছনে। ফলে সামনে কোন প্রতিদ্বন্ধী না থাকলেও যুবরাজের ক্ষমতায় আরোহন কতটুকু সহজ হবে তা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বলে দেবে।

সৌজন্যে : এএফপি / কালের কণ্ঠ
সিলেটভিউ২৪ডটকম/০১ জুন ২০২০/ডেস্ক/ জিএসি

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.