আজ শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ইং

এই ভাইরাসটি উপকারী?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-০৮ ১০:০৪:০৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মানুষ যখন করোনাভাইরাসের খপ্পর থেকে মুক্ত হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন যেচে খাদ্যপণ্যের মধ্যে ভাইরাসের প্রয়োগ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকরা। ‘উপকারী’ এই ভাইরাস নাকি খাদ্যপণ্যকে আরো নিরাপদ করে তুলবে।

বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়াকে শায়েস্তা করতে আরো ছোট জীবাণু কাজে লাগানোর লক্ষ্যে গবেষণা চলছে নেদারল্যান্ডসের ভাখেনিঙেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। মিকেরোস কম্পানি ব্যাকটেরিয়ার ফেজ তৈরি করেছে। ফেজ আসলে এমন ভাইরাস, যেগুলো নির্দিষ্ট গোত্রের ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে বাসা বেঁধে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। চিজ খাবারের এক প্রস্তুতকারক এমন ফেজ কাজে লাগিয়ে চিজকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করাচ্ছে।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, তরল ব্যাকটেরিয়া কালচারে ফেজ সৃষ্টি করা হয়। সেখানে দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে। ফেজ ব্যাকটেরিয়ার জাতশত্রু। লিস্টেরিয়া ও সালমোনেলা মোকাবেলা করতে ফেজ সরবরাহ করে মিকেরোস কম্পানি। ফেজ ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে তার মধ্যে নিজের ডিএনএ ঢুকিয়ে দেয়। ফলে ব্যাকটেরিয়াকে বাধ্য হয়ে ফেজের অসংখ্য নকল সৃষ্টি করতে হয়। সেই ফেজগুলোর চাপে ব্যাকটেরিয়া ফেটে যায়। তখন ফেজ বেরিয়ে এসে অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার ওপর হামলা চালায়।

এক খাদ্য প্রস্তুতকারকের সমস্যা সমাধানে ফেজ কাজে লাগানো যায় কি না, মিকেরোস কম্পানির কর্মীরা তা পরীক্ষা করছেন। একটি খাদ্যপণ্যের ওপর পানি স্প্রে করে দেখা হলো। অন্যটির ওপর ব্যাকটেরিয়ার ফেজ ঢেলে দেওয়া হলো। এবার ফেজের ক্ষমতা খতিয়ে দেখার পালা। বিশেষজ্ঞরা সেই খাদ্যপণ্যের নমুনা ব্যাকটেরিয়ার জন্য অত্যন্ত উর্বর এক পাত্রে রাখলেন। তারপর সেটি ২৪ ঘণ্টার জন্য ইনকুবেটরে রাখা হলো।

বিজ্ঞানীদলের প্রধান হাখেনস তাঁর ফেজগুলোর কার্যকারিতা সম্পর্কে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘এত সুনির্দিষ্ট প্রভাব ফেলে বলে ফেজ খুবই কার্যকর। অর্থাৎ এগুলো শুধু নির্দিষ্ট এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে। চিজ ও দইয়ের মতো খাদ্যপণ্যের মধ্যে ভালো ব্যাকটেরিয়ার ওপর হামলা চালায় না। সে কারণে নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে ফেজ কাজে লাগানো যায়।’

২৪ ঘণ্টা পর ইনকুবেটর থেকে প্লেটগুলো বের করে নেওয়া হলো। এর মধ্যে অনেকগুলো অনিয়ন্ত্রিত ব্যাকটেরিয়ার কলোনি আছে। কয়েকটি মাত্র ফেজের প্লেটের ওপর রাখা হয়েছে। সেটাই বা করার কী প্রয়োজন ছিল? স্টেফেন হাখেনস বলেন, ‘অনিয়ন্ত্রিত শ্রেণির তুলনায় সেগুলোর সংখ্যা দশ গুণ কম। দশ গুণ বেশি ফেজের প্রয়োজন হলে দশ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া সরিয়ে ফেলা যায়। প্রশ্ন হলো, কিসের প্রয়োজন রয়েছে? খাদ্যপণ্য শিল্প খাতে কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়। ফলে উচ্চ মাত্রায় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হয়। খাদ্যপণ্যে লিস্টেরিয়ার প্রবেশের আশঙ্কা অত্যন্ত কম। ৯০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়া সরিয়ে ফেললে সেই ঝুঁকি আরো কমে যায় এবং খাদ্যপণ্য আরো নিরাপদ হয়ে ওঠে।’ সূত্র : ডয়চে ভেলে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৮ জুলাই ২০২০/ডেস্ক/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন