সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৭-০৮ ১৮:২৮:৩০
সিলেটভিউ ডেস্ক :: ভারত, রাশিয়া, জাপানসহ প্রায় ২১টি দেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের শত্রুতা রয়েছে চীনের। দেশগুলোর বিভিন্ন অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে চীন। কোথাও সমুদ্র, কোথাও নদী, কোথাও বা জমি দাবি করে দেশটি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন না মেনে একাধিক ছোট-বড় দ্বীপ দখল এবং সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের অভিযোগ রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে। আসুন জেনে নেই কোন কোন দেশের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা রয়েছে চীনের—
ভারত: ভারত ও চীনের মধ্যে ১৯৬২ সালে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সীমানা নিয়ে বিরোধ থেকে সেই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। ওই যুদ্ধে চীনের কাছে পরাজিত হয়েছিল ভারত। চীন জয়ী হয়ে একতরফা যুদ্ধবিরতি জারি করে। আকসাই চীন দখলে রাখে কিন্তু অরুণাচল প্রদেশ ফিরিয়ে দেয়।
রাশিয়া: প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চল নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্ব। ১৯২৯ এবং ১৯৫৯ সালে দু’দেশের সামরিক সংঘাতও হয়। সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভ এবং চীনা চেয়ারম্যান মাওয়ের আমলের সীমান্ত সংঘর্ষে পিপলস লিবারেশন আর্মির প্রায় ৮০০ এবং রুশ ফৌজের ১০০ সেনা নিহত হয়েছিল।
জাপান: দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব চীন সাগরে জাপানের সেনকাকু এবং দিয়েউ দ্বীপের মালিকানা দাবি করছে চীন। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চলছে শত্রুতা।
ভিয়েতনাম: ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনাম আক্রমণ করেছিল চীন। প্রায় সাড়ে ৩ মাসের যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার ভিয়েতনাম যোদ্ধা এবং সমান সংখ্যক চীনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল।
নেপাল: উত্তর ও মধ্য সীমান্তে অন্তত ১২টি জায়গায় চীন সে দেশের জমি জবরদখল করেছে। রাস্তা বানানোর পাশাপাশি ছোট বাঁধ বানিয়ে নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়েছে।
ভুটান: আশির দশকেই ভুটানের কুলা কাংরি ও সন্নিহিত এলাকা দখল করেছে চীন। গাংখর ফুয়েনসাম শিখর এবং ডোকলামের অদূরে জিপমোচি এলাকায়ও ‘নজর’ রয়েছে দেশটির।
ব্রুনাই: স্প্র্যাটলি দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে চীনা দখলদারির প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্রুনাই। এ অঞ্চলে ব্রুনাইয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা লুইসা রিফসহ দু’টি দ্বীপে চীনের ‘নজর’ দীর্ঘদিনের।
ফিলিপাইন: স্প্র্যাটলির কালায়ান দ্বীপ সংলগ্ন সমুদ্রগর্ভ থেকে সত্তর দশকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন শুরু করে ফিলিপাইন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ দ্বীপ ফিলিপাইনের অংশ। কিন্তু চীনের হুমকিতে একাধিকবার কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে দেশটি।
সিঙ্গাপুর: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম সম্পদশালী এ রাষ্ট্রে মার্কিন নৌ-সেনার ঘাঁটি চীনের প্রতিহিংসার কারণ।
কম্বোডিয়া: চীনপন্থি খমের রুজ দল ১৯৭৫ সালে ক্ষমতা দখলের পরে কম্বোডিয়ায় প্রভাব শুরু হয়। সরাসরি চীনের সঙ্গে সীমান্ত না থাকলেও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত সমস্যায় একাধিকবার নাক গলিয়েছে চীন।
থাইল্যান্ড: মেকং নদীতে চীনা বাঁধ আন্তর্জাতিক জলবণ্টন নীতির পরিপন্থি বলে অভিযোগ করেছে থাইল্যান্ড। দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি দ্বীপ নিয়েও বিরোধ রয়েছে তাদের।
ইন্দোনেশিয়া: দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু অংশ এবং নাতুনা দ্বীপে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইন্দোনেশিয়ার জাহাজের মাছ এবং অন্য জৈব সম্পদ সংগ্রহ নিয়ে আপত্তি চীনের।
মালয়েশিয়া: দক্ষিণ চীন সাগরের পাঁচটি দ্বীপ মালয়েশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। এগুলোর অধিকার নিয়ে চীনের সঙ্গে মতভেদ রয়েছে দেশটির।
মঙ্গোলিয়া: রাশিয়া ও চীনের মধ্যবর্তী ‘বাফার দেশ’টিতে চীন তারই অংশ বলে মনে করে। এ ক্ষেত্রে তাদের উদাহরণ ত্রয়োদশ শতকের ইয়ান সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি।
লাওস: দেশটির উত্তর অংশের লাওতিয়ান অঞ্চলসহ কিছু এলাকাকে চীন তার উনান প্রদেশের অংশ বলে দাবি করে।
তাইওয়ান: চীনের বিরোধিতায় এখনো রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যপদ এবং ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি তাইওয়ান। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রের পুরো অংশই দাবি করে চীন।
উত্তর কোরিয়া: পাকতু পাহাড়, ইয়ালু ও তুমান নদী নিয়ে পুরোনো বিবাদ তাদের। তবুও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে উত্তর কোরিয়া সরকার প্রকাশ্যে চীনের বিরোধিতা করে না।
দক্ষিণ কোরিয়া: পঞ্চাশের দশকে কোরিয়ার গৃহযুদ্ধে চীনের অংশগ্রহণের সময় থেকেই শত্রুতা শুরু। পূর্ব চীন সাগরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে দু’দেশের টানাপড়েন চলছে এখনো।
তাজিকিস্তান: প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ বজায় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলেও। একাধিকবার সীমান্তে লালফৌজের অনুপ্রবেশেরও অভিযোগ আছে।
কাজাখস্তান: সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আরেক মুসলিম প্রজাতন্ত্র কাজাখস্তানের প্রায় ৩৪ হাজার বর্গকিলোমিটার দাবি করে চীন।
কিরগিজস্তান: ঐতিহাসিকভাবে সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের অন্তর্গত এ মুসলিম প্রজাতন্ত্রের পুরোটাই চীনের অংশ বলে দাবি করে দেশটি।
সৌজন্যে : জাগোনিউজ২৪
সিলেটভিউ২৪ডটকম/৮ জুলাই ২০২০/ডেস্ক/জিএসি