আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সংক্রামক ধরন, আতঙ্ক!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৮-০৩ ১২:০১:৪৮

সিলেটভিউ ডেস্ক :: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে নাকাল গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাসের ধ্বংসযজ্ঞে বিধ্বস্ত আমেরিকা, ব্রিটেন, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রাজিলের মতো দেশ।

বর্তমানে করোনাভাইরাসের ‘হটস্পটে’ বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত। দেশটিতে প্রতিদিনই ৫০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এরই মধ্যে এল আরও আতঙ্কের খবর। ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সংক্রামক ধরন ‘এ২এ’ হ্যাপ্লোটাইপ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশটিতে।

গত কয়েক দিন ধরে ভারতের বিজ্ঞানীরা করোনার ১,০০০টি জিনোম সিকোয়েন্স করে এ চিত্র পেয়েছেন। খবর এই সময়’র।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনার ‘এ২এ’ হ্যাপ্লোটাইপ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছে। তা ভারতে এসেছে মূলত ইউরোপ থেকে, করোনার উৎস চীন থেকে সরাসরি নয়।

ভারতে প্রথম জিনোম সিকোয়েন্স করে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। পরে ভাইরাল জিনোমে নজর রাখা শুরু করে হায়দরাবাদ ও নয়াদিল্লির সিএসআইআর’র দুই প্রতিষ্ঠান। অধিকাংশই একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের নমুনার ওপর সমীক্ষা করায় গোটা দেশের চিত্র উঠে আসছিল না।

এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব বায়োটেকনোলজি প্যান-ইন্ডিয়া কনসর্টিয়াম তৈরি করে। সমন্বয়ের দায়িত্বে কল্যাণীর এনআইবিএমজি। পশ্চিমবঙ্গে ন্যাসোফ্যারিঞ্জিয়াল এবং অরোফ্যারিঞ্জিয়াল সোয়াব নমুনা পাঠানোর দায়িত্বে নাইসেড ও আইপিজিএমইআর।

সব মিলিয়ে ভারতে পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণে ভাগ করে ১০টি রাজ্য থেকে নমুনা নেওয়া হয়। শনিবার সেই গবেষণার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন।

এনআইবিএমজি’র ডিরেক্টর সৌমিত্র দাস বলেন, ‘করোনা এ দেশে এসেছে মূলত দুটি পথ ধরে। একটি ইউরোপ, অন্যটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। ইউরোপ (ইতালি, ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড, গ্রিস) থেকে এসেছে ‘এ২এ’ ধরনটি, যাকে এখন ২০এ, ২০বি, ২০সি, তিনটি ভাগে আলাদা করা হয়েছে। আর চীন থেকে এসেছে ১৯এ/বি ধরন।’

তিনি বলেন, ‘শুরুতে মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে হ্যাপ্লোটাইপগুলোর বৈচিত্র চোখে পড়ছিল। কিন্তু জুনে গোটা দেশে মূলত এ২এ ধরনই ছড়িয়ে পড়ে।’

এপ্রিলের শেষে এনআইবিএমজিরই দুই অধ্যাপক নিধান বিশ্বাস এবং পার্থপ্রতিম মজুমদার ৫৫টি দেশের ৩,৬৩৬টি জিনোম সিকোয়েন্স পর্যালোচনা করে বলেছিলেন, ভাইরাসের স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিনে একটি মিউটেশনের (ডি৬১৪জি) জন্য মানুষের ফুসফুসের কোষে সহজে ঢুকে পড়ছে এ২এ ধরনের ভাইরাসটি।

এই গবেষণাতেও বলা হয়েছে, মানবদেহের অ্যাঞ্জিওটেনসিং কনভার্টিং এনজাইম-২ বা এসিই-২ রিসেপটরের সঙ্গে অনেক সহজে বাইন্ড করছে এ২এ। আরও একটি সম্ভাব্য কারণ, মিউটেশনের ফলে গঠনগত পরিবর্তন হওয়ায় সংক্রমণ ঘটানোর পর মানবকোষে বেশি সংখ্যায় ভাইরাস পার্টিকেলের জন্ম দিতে পারছে। অতি সংক্রামক সেই কারণেও।

দ্য হিন্দুর সোমবার সকালের তথ্যানুযায়ী, ভারতে করোনা শনাক্ত ১৮ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩ আগস্ট ২০২০/ডেস্ক/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন