আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

আইএসের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জয়ার গল্প

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০১-১২ ০০:৪৩:৩৭

পশ্চিমা জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত ছিলেন ইংল্যান্ডে বড় হওয়া বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তরুণী জয়া চৌধুরি। বাংলাদেশের শহরগুলোর উঠতি বয়সী মেয়েদের মতোই জিন্স-শার্ট পছন্দ ছিলো তার। অথচ সেই জয়াই মাত্র ১৯ বছরে আটকে পড়েন ভয়ঙ্কর এক ফাঁদে। সেই ফাঁদের আরেক নাম ইসলামি উগ্রপন্থা যার পতাকা বয়ে নিয়ে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএসের শীর্ষ জঙ্গি হয়ে ওঠা জন জর্জলাস নামের এক মার্কিন মুসলিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন জয়া । শুধু তাই নয় গর্ভবতী অবস্থায় কোন এক মোহে জনের সঙ্গে চলে যান সিরিয়ায়। এমনকি ৭ জন ‘জিহাদী’র জন্ম দিতেও রাজি হয়ে গিয়েছিলেন জঙ্গি স্বামীর কথায়।

তবে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় যাওয়ার মাত্র এক মাস পরেই ভুল ভাঙ্গে জয়ার। নিজ চোখে আইএসের নৃশংসতা, যৌনদাসত্বের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে পালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন তিনি।

২০১৪ সালে জনকে ডিভোর্স দিয়ে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল এবং অন্ধকার সময়ের ইতি টানেন জয়া।

ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল এবং সানডে টাইমসে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, একটি মুসলিম ডেটিং ওয়েবসাইটে জনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় জয়ার। ওয়েস্ট লন্ডনে জয়ার কলেজের সহপাঠীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিলো আইএস অনুসারি। তাদের মাধ্যমেই তার সঙ্গে জঙ্গিবাদী জনের পরিচয় হয়। ২০০৩ সালে পরিচয় থেকে পরিণয়। ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের রোচডেলের টাউন হলে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই এই উগ্রপন্থী মুসলিমকে বিয়ে করেন তিনি। কারণ ততোদিনে প্রথমবারের মতো মা হতে চলেছেন জয়া। আমেরিকায় কর্মরত জন মাঝে মাঝে যুক্তরাজ্যে আসতো জয়ার সঙ্গে সময় কাটাতে।

সানডে টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জয়ার সঙ্গে জনের পরিচয়ের পর থেকেই বদলে যেতে থাকে সে। শুরু করে বোরকা পরা। পরিবারের সঙ্গে বাড়তে থাকে তার দূরত্ব। প্রতিবেশীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, বিয়ের শুরুতে বেশ অভাবেই সংসার করতে হয়েছে তাকে। এরপর হঠাৎ করেই এই দম্পতির হাতে কোথা থেকে যেনো প্রচুর টাকা চলে আসে। লন্ডনে বসবাস শুরু করে তারা। সেখানে উগ্রবাদী ইমাম শেখ আবু ইসা আল-রিফাই এর অন্ধ ভক্ত হয়ে যান দুজনে।

মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, জয়া যে জন জর্জলাসকে বিয়ে করেছিলেন সে এখন আইএসে বিদেশী জঙ্গি সরবরাহকারীদের শীর্ষস্থানীয় একজন। জনের বাবা মার্কিন বিমান বাহিনীর ডাক্তার টিমোথি জর্জলাস। যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর তাঁর ছেলেই ধর্মান্তরিত হয়ে উগ্রবাদী হয়ে উঠতে শুরু করে। শুরুর দিকে আল কায়দা অনুসারী জনকে ২০০৬ সালে গ্রেফতার করে এফবিআই। আমেরিকা-ইসরায়েলের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ওয়েবসাইটে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন