আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

নারী পুলিশের প্রেমের ফাঁদে পড়ে চোর গ্রেফতার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-১০-১৩ ০১:৩০:১৪

এক বসত বাড়ির সব জিনিসপত্র চুরি করে গা ঢাকা দিয়েছিল চোর। পরে ওই চোরের মন চুরি করে তাকে ফাঁদে ফেললো এক নারী পুলিশ।

সেই নারী পুলিশের প্রেমের টোপে পা দিয়ে শেষ পর্যন্ত হাজতবাস হলো চুরির দায়ে অভিযুক্ত ওই যুবক আবদুল মণ্ডল (২৬)। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া সোনার গয়না, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। 

ঘটনাটি ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানা এলাকার। আগস্ট মাসের এগারো তারিখ বনগাঁ পূর্বপাড়ার রিনা মণ্ডলের বাড়িতে সিঁধ কাটে চোর। এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে ফিরে তিনি দেখেন, আলমারি ভেঙে সোনার গয়না, নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোর। সঙ্গে একটি মোবাইল ফোনও খোয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে বনগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। চোরের সন্ধানে নামে পুলিশও। 

তবে পুলিশেরই একাংশ বলেন, ডাকাত ধরার চেয়ে ছিঁচকে চোর ধরা নাকি ঢের কঠিন।

তবে এক্ষেত্রে চোর ধরার একটা সূত্র ছিল। সেটি হল, রিনাদেবীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া মোবাইলটি। তাই সেটিকেই ট্র্যাক করতে শুরু করে পুলিশ।

এই চুরির ঘটনার তদন্ত করার জন্য একটি বিশেষ দল তৈরি করেন বনগাঁ থানার আইসি। অবশেষে মাসখানেক আগে সন্ধান মেলে চুরি যাওয়া মোবাইলটির। সেটি ট্র্যাক করে পুলিশ তার নম্বরটি জানতে পারে। তারপরই নাটকীয় মোড় নেয় গোটা ঘটনা। ওই চোরকে বাগে আনতে প্রেমের টোপ দেয় পুলিশ। 

বনগাঁ থানা সূত্রে জানা যায়, এক নারী কনস্টেবল নিজের পরিচয় গোপন করে ওই চোরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রায় এক মাস তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবক আবদুলও নিজের পরিচয় গোপন রেখে ওই পুলিশকর্মীর সঙ্গে খোসমেজাজে গল্প চালিয়ে যান। ধীরে ধীরে আবদুলকে প্রেমের জালে জড়িয়ে নেন ওই পুলিশকর্মী। মঙ্গলবার আবদুলকে দেখা করতে বলেন তিনি।

উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'মঙ্গলবার লেডি কনস্টেবলের কথামতো বনগাঁ স্টেশনে তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন আবদুল। সেখানেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার থেকে রিনাদেবীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া মোবাইলটিও উদ্ধার হয়। গ্রেফতারের পর চুরির কথা স্বীকার করেন আবদুল। '

আবদুলকে জেরা করে চুরি যাওয়া গয়নারও সন্ধান পায় পুলিশ। আবদুল জানায়, বনগাঁ স্টেশন সংলগ্ন একটি সোনার দোকানে সেগুলো বিক্রি করেছিলেন তিনি। চুরির জিনিস কেনার দায়ে ওই দোকানের মালিক গৌরাঙ্গ সূত্রধরকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাদের বনগাঁ আদালতে হাজির করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। 

এই মামলায় সাফল্যের জন্য ওই নারী কনস্টেবলকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানিয়েছে জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন