আজ শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ইং

যে আমলে রয়েছে জান্নাতের অঙ্গীকার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৯-২৮ ১৮:৪৫:৪০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ধৈর্যধারণ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন মানুষের দুইটি অনন্য গুণ। এ দুই গুণের অধিকারী ব্যক্তির জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। ধৈর্যধারণ ও কৃতজ্ঞতায় জান্নাতের অঙ্গীকারের বিষয়টি ফুটে উঠেছে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমরান বিন হাত্বান ও তাঁর স্ত্রীর জীবনে।

বিখ্যাত তাবেয়ী হজরত ইমরান বিন হাত্বান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি দেখতে যেমন ছিলেন কুৎসিত। আবার উচ্চতায় ছিলেন খাটো। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ছিলেন খুবই সুন্দরী।

একদিন তিনি বাড়ি এসে দেখলেন, তাঁর স্ত্রী নতুন কাপড় পড়ে আছেন আর তাকে আগের চেয়ে বেশি সুন্দর লাগছে। তিনি স্ত্রীর দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকালে স্ত্রী বলে উঠলেন-
‘যদি আল্লাহ চান তবে আমরা উভয়ে জান্নাতি হবো।’

হজরত ইমরান বিন হাত্বান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন, ‘তা কিভাবে?’

স্ত্রী তখন বললেন- ‘একজন সুন্দরী স্ত্রী পাওয়ায় আপনি আল্লাহর প্রতি শোকর-গুজার আছেন। আর আমি আপনার মতো দেখতে কুৎসিত স্বামী নিয়ে ধৈর্যধারণ করেছি। আর আল্লাহ তাআলা শোকর-গুজার তথা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারী বান্দার জন্য এবং ধৈর্যধারণকারী বান্দার জন্য জান্নাতের ওয়াদা দিয়েছেন।

কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও ধৈর্যধারণ

মানুষের জন্য যে কোনো বিষয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং ধৈর্যধারণ করা আবশ্যক। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেছেন-

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

‘যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর, তবে তোমাদেরকে আরও (পুরস্কার) বাড়িয়ে দেব আর যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৭)

তাই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে হজরত সোলাইমান আলাইহিস সালামের মতো দোয়া করা। যেভাবে হজরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের শক্তি সামর্থ চেয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন। আর তাহলো-

رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ

উচ্চারণ : রাব্বি আউযিনি আন আশকুরা নিমাতিকাল্লাতি আনআমতা আলাইয়্যা ওয়া আলা ওয়ালিদাইয়্যা ওয়া আন আমালা সালিহাং তারদাহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন।’ (সুরা নামল : আয়াত ১৯)

অর্থ : হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে তোমার দেয়া সেসব নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সামর্থ দাও। যেসব নেয়ামত তুমি আমাকে ও আমার বাবা-মাকে দান করেছ। আর আমি যাতে তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর।’

আবার কথা কিংবা কাজ যত কঠিন হোক না কেন, তাতে ধৈর্যধারণ করা জরুরি। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
কসম যুগের (সময়ের), নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং ধৈর্যধারণের উপদেশ দেয়।’ (সুরা আসর : আয়াত ১-৩)

কুরআনুল কারিমের এ ঘোষণা ও অঙ্গীকারের ফলেই বিখ্যাত তাবেয়ী হজরত ইমরান বিন হাত্বান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেদের জন্য জান্নাতের আশা প্রকাশ করেছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারী ও ধের্যধারণকারী বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমিন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০/ জাগোনিউজ২৪ / জিএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন