আজ বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ইং

অতিরিক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি হয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-১০-২৮ ১২:৪৩:৩০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মহামারি করোনা সংক্রমণে সারা বিশ্বের মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই মহামারি মানুষকে কেবল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিধি মেনে চলতে শিখিয়েছে তা নয়, আজকের সময়ে জীবনযাত্রার পরিবর্তনও করেছে। বর্তমান সময়ে, ঘন ঘন হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং বারবার হাত ধোয়া বর্তমানে জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিবর্তন। তবে হাতের ত্বকের কোনও ক্ষতি না করে কীভাবে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত তা জেনে রাখা প্রয়োজন।

বার বার সাবান পানি দিয়ে হাত ধুলে কিংবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করলেও মুশকিল হচ্ছে। ত্বকের নানা অসুখ নিয়ে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকেই। ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ আবার ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাই ভারসাম্য মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎকরা।

স্যানিটাইজার ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করে যে স্যানিটাইজারের অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার ত্বকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আবার অনেকে মনে করেন যে স্যানিটাইজার আপনার ত্বকে ক্ষতি করে দিলেও এটি আপনার সুরক্ষার অন্যতম বৃহত্তম অস্ত্র।

সাধারণ হ্যান্ড স্যানিটাইজারগুলোতে উচ্চ মাত্রায় ইথাইল অ্যালকোহল এবং আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল রয়েছে। এর বাইরে এটিতে একটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ট্রাইক্লোসানও পাওয়া যায়। এই তিনটি উপাদন ভাইরাসকে হত্যা করতে কার্যকর হলেও এটি আপনার ত্বকেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

বার বার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিসিনের চিকিৎসকরা। বাজারে চলতি অনেক স্যানিটাইজারেই গুণমানের সমস্যা রয়েছে। সাধারণত ৬৫-৭০ শতাংশ অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে সেটি ভাইরাসনাশক হতে পারে।

গোসলের যে সাবানের গুণমান ভাল, তা দিয়ে হাত ধুলে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই কম। কিন্তু ডিটারজেন্ট বা কাপড় কাচার সাবান দিয়ে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে অনেকেই হয়তো হাত ধুচ্ছেন। সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে উঠছে তখনই।'

অ্যালকোহল-যুক্ত স্যানিটাইজার হাতের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব ধ্বংস করে দেয়। গ্লাভসের ভুল ব্যবহারেও সংক্রমণ বাড়ছে।

অতিরিক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহারের ফলে হাত শুকিয়ে যাচ্ছে বা খসখস করছে অনেকের। এছাড়া হাতে চুলকানি, চামড়া উঠে যাচ্ছে, চামড়া লাল হয়ে গুটি গুটি লাল রঙের র‌্যাশ এসব সমস্যাগুলো দেখা যাচ্ছে।

হাতের ত্বকে যে কেরাটিনোসাইট রয়েছে, তাতে লিপিডের স্তর থাকে। যে কোনও সাবান বা অ্যালকোহলে বার বার হাত ধুলে লিপিডের স্তর উঠে যেতে পারে, বিশেষ করে কড়া ডিটারজেন্ট হাতে লাগলে হাত শুকিয়ে যায়। ফলে ত্বকের যে আসল কাজ অর্থাৎ সুরক্ষা বা বেরিয়ার ফাংশন, তাতে ব্যাঘাত ঘটে।

অ্যালকোহল-যুক্ত স্যানিটাইজার হাতের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব ধ্বংস করে দেয় বলে ত্বক শুকিয়ে গিয়ে সমস্যা হয়।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে শরীরের দিকে খেয়াল রাখা দরকার। বিশেষ করে নখ বড় রাখা যাবে না। সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার পর ভাল কোনও ময়শ্চারাইজার (মেডিকেটেড) ব্যবহার করতে হবে। তবে খাবার খাওয়ার আগে কখনওই নয়।

সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে হাত মুছে নিতে হবে পরিষ্কার কোনও কাপড়ে। ময়শ্চারাইজার না থাকলে পেট্রলিয়াম জেলি বা তরল প্যারাফিন বেসড অথবা নরম প্যারাফিন বেসড ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সুতির গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।

ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা তৃতীয় বিশ্বের দেশে সকলের পক্ষে সম্ভব নয়, সে ক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

গবেষণা অনুসারে, আপনি যদি ২০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে সাবান এবং জল দিয়ে আপনার হাত ধুতে পারেন, তবে এটি হাত স্যানিটাইজিংয়ের মতোই কার্যকর। সুতরাং, যখন আপনার কাছে পানি এবং সাবান থাকার প্রয়োজন, আপনার হাত স্যানিটাইজ ব্যবহার করা এড়ানো উচিত।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৮ অক্টোবর ২০২০/ঢাকাটাইমস/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন