আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

চিকুনগুনিয়া : বেশি খেতে হবে তরল খাবার

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৭-০৭-১৩ ০০:৪৯:৩৩

চিকুনগুনিয়া এক ধরনের ভাইরাস জ্বর যা কিনা এডিস মশা দ্বারা বাহিত। চিকুনগুনিয়া শব্দটি এসেছে তানজিনিয়া থেকে। এ জ্বর সুস্থ স্বাভাবিক মানুষকে অনেকটা বাঁকিয়ে ফেলে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে এ সম্পর্কে প্রয়োজন সচেতনতা আর সতর্কতার। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। হোক সেটা ব্যক্তিগত, বেসরকারি কিংবা সরকারি উদ্যোগ। এমনকি  আমরা যে যে অবস্থানে আছি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে এক্ষেত্রে। এই এডিস মশা সাধারণ ফুলের টবে জমে থাকা পানি, এসির নিচে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি, যে কোনো অব্যবহৃত টয়লেট যেখানে রেগুলার ফ্ল্যাশ করা হয় না অর্থাৎ বদ্ধ পানিতে জন্মায়। তাই সচেতনতা বাড়াতে হবে। যাতে এডিস মশা না জন্মায় বা বংশবিস্তার না করে আর তাহলেই চিকুনগুনিয়ার প্রভাব বাড়বে না। এবার আসা যাক চিকুনগুনিয়া হলে রোগীর লক্ষণ কী হতে পারে। এ জ্বর অনেকটা ডেঙ্গু জ্বরের মতোই। তবে চিকুনগুনিয়া হলে ডেঙ্গু হেমোরেজিক Fever-এর মতো লক্ষণ থাকে না। শুরুটা হয় প্রচণ্ড জ্বর প্রায় ১০৪-১০৫ ডিগ্রির সঙ্গে প্রচণ্ড শরীর ব্যথা। জয়েন্টের তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, শরীর চুলকানি এবং Maculopapulad Rash থাকতে পারে। প্রথমে লালচে থাকলেও জ্বরের তীব্রতা কমলেও শরীর ব্যথা কারও কারও ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ থেকে বা কয়েক মাসও থাকতে পারে। শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই জ্বর হলে অবহেলা না করাই ভালো। চিকুনগুনিয়াতে পালস এবং ব্লাডপ্রেসার কমে যেতে পারে। Joints pain  বেশি যেমন Wrist joind ankle joint pain থাকতে পারে। তাই জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

চিকুনগুনিয়া যেহেতু ভাইরাল জ্বর, এন্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। সামান্য অবহেলাও অনেক সময় মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। রোগী শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাবেন, প্রচুর পানি বা তরল জাতীয় খাবার বেশি খাবেন। কারণ এ সময়টা তরল জাতীয় খাবার দেহের জন্য ভালো। এছাড়া  ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি খাবেন। অন্যদিকে শরীর চুলকালে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খাবেন।

একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আক্রান্ত রোগীকে মশারিতে রাখা জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে এ সময় রোগীকে মশা না কামড়ায়। এ মশা দিনে কামড়ায়। তাই চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে দিনের বেলায়ও মশারিতে রাখা ভালো। বিশ্রামে থাকতে হবে আর চিকুনগুনিয়া সংক্রান্ত রোগীর জন্য কর্মপরিবেশেরও সবাইকে সহানুভূতিশীল হতে হবে। এডিস মশা নিধনে নিজেদের সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে। মনে রাখবেন, প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

ডা. সহেলী আহমেদ সুইটি, সহকারী অধ্যাপক,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
এবং চেয়ারপারসন, সেভ লাইফ ফাউন্ডেশন।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন