আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

আজ অনন্ত বিজয়ের মৃত্যুবার্ষিকী

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৮-০৫-১২ ১২:৩৬:২৯

মনির হোসাইন ::
"একদিন মৃত্যু এসে যদি দূর নক্ষত্রের তলে
অচেনা ঘাসের বুকে আমারে ঘুমায়ে যেতে বলে,
তবুও সেই ঘাস এই বাংলার অবিরল ঘাসের মতন
মউরীর মৃদু গন্ধে রবে,"

দিন, সপ্তাহ, পাক্ষিক-মাস থেকে বছর গড়ায়। দিনপঞ্জি বদলায়। নতুন আরেকটি বছরের সূচনা হয়। পুরাতন দিনগুলি একটি ফ্রেমে জমা হয়। এক কোনে পরে  থাকে। পুরাতন সম্পর্কগুলি ফিকে থেকে ফিকেতর হয়ে আসে। বিগত হওয়া প্রিয়জন ধীরে ধীরে ঝাপসা থেকে ঝাপসাতর হয়ে উঠে। স্মৃতি ক্রমশ দূরে সরে যায়। মুখ মুখচ্ছবিগুলি ক্রমশ কেমন যেনো চেনাজানা মানুষ থেকে অচেনা, দূরের অচিন মনে হয়! অথচ এইতো সেদিন একসাথে কতো কি না করেছি। এই সেদিন! ক্যালেন্ডারের হিসেবেও এই ক’দিন আগে। বছর হিসেবে করলে আজ থেকে তিন বছর আগে। সময় পরিক্রমায় খুব বেশি দিন নয়। এই তিন বছরে পৃথিবীতে আহামরি কোনো পরিবর্তন হয়নি। পরিবর্তন হয়নি মঙ্গল-চাঁদেও। যায়নি ক্যান্সারের মতো মারণব্যাধিকে পুরোপুরি নির্মূল করা। যায়নি ডেঙ্গুর কার্যকরী প্রতিষেধক পাওয়া। বরং পুরাতন রোগব্যধিগুলো আবার ফিরে ফিরে আসছে। কলেরাও মাঝেমধ্যে দেখা দেয়। দেশে পোলিও-গলগণ্ড কিংবা রাতকানা এইসব রোগও মাঝেমধ্যে আবার নানান অঞ্চলে দেখা দিচ্ছে। বাড়ছে ডায়াবেটিস, হৃদরোগও। সারা পৃথিবীতেই এখন আর আগের মতো কাজ করছে না জীবানুর বিরুদ্ধে দেওয়া এন্টিবায়োটিক। শরীর এন্টিবায়োটিকরোধী ক্ষমতা অর্জন করছে। সেই সাথে বিশ্বও আগের মতোই বিছিন্ন যুদ্ধাবস্থা জারি আছে। আছে জোর জবরদখলের লড়াই। মারণঘাতি যুদ্ধে হুকুম করছে মানুষ, লড়ছেও মানুষ। মরছে মানুষ, মারছেও মানুষ!

"আমরা মৃত্যুর আগে কি বুঝতে চাই আর? জান না কি আহা,
সব রাঙা কামনার শিয়রে যে দেওয়ালের মতো এসে জাগে
ধূসর মৃত্যুর মুখ;"

তিন বছরের পরিসংখ্যানে স্বদেশের দিকে তাকালে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনা। যা পড়ে তা সবকিছুকে ছাপিয়ে দেখি সর্বত্র ধর্মের বাড়বাড়ন্ত। চারিদিকে ধর্মের উদগ্র উল্লম্ফন। রাষ্ট্রকে স্বাধীনতা পরবর্তী এরকম রূপে আর কখনও এভাবে দেখা যায়নি। যেমনটা দেখা দিয়েছে রাজীব হায়দার থেকে অভিজিৎ-অনন্তদের হত্যার পর পর। এঁদের তরতাজা রক্তে এই রাষ্ট্র ধর্মকে ভয়ানক অস্ত্র করে, পুঁজি করে আগ্রাসী রূপ দিয়েছে। চারিদিকে আজ ধর্মীয় কদর্যতা-উগ্রতা। ধর্মীয় ঢামাঢোল-করতালের বেঢপ বাদ্যবাদিতে আর এইসব মেধাবীদের অকালবোধনের শব্দ টের পাওয়া যায় না। কোথাও কোনো হাহাকার নেই। নেই কোনো ক্রন্দন। কোনো রোগ নয়, জ্বরা নয় যে লোকটা সেই কাকভোর উঠে অসুস্থ বাবাকে দেখাশোনা করে নাস্তাদি সেরে অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে বাসা থেকে একশো গজ দূরের শৈশবের দিঘির পাশেই খুন হলো তাঁকে আজ আর এই ধর্মরাষ্ট্র মনে করতে চায়না। মেনে নেওয়া তো দূরে থাক, শ্রদ্ধা সে তো ঘৃণার কষ্টিপাথরে ধুলোয় লুঠোচ্ছে! আজ এই সময়ে তাঁকে-তাঁদেরকে ভিন্নমতালম্বী-নাস্তিককে ঘৃণাসূচক করে তোলে, গালাগাল করে, নানান ধরণের কদর্য আখ্যা দিয়ে এই রাষ্ট্র ধর্মের বরমাল্য মাথায় নিয়ে এক কল্পিত ধর্মরাজ্যের স্বপ্নে বিভোর হয়েছে। সেখানে আর যাই হোক ভিন্নমতালম্বী-নাস্তিকেরা স্তান নেই। তাঁদের এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলে জায়গা নেই। ভিনদেশি রোহিঙ্গাও মানবিকতা পায়। নাস্তিক নিধর্মী বেশে এই বঙ্গদেশে স্তান নেই! কুকুর-বেড়ালেদেরও সেই ধর্ম অধিকৃত দেশে জায়গা আছে, নেই শুধু অভিজিৎদের, স্থান নেই অনন্তদের!

"মানুষের মৃত্যু হ’লে তবুও মানব
থেকে যায়; অতীতের থেকে উঠে আজকের মানুষের কাছে..."

এই ধূসর মৃত্যুর রঙ নিয়ে যে অভিজ্ঞান তা অনন্ত বিজয় দাশ ভালো করে উপলব্দিজাত না হলেও তখন নাস্তিক হত্যার ধরণ দেখে বোধকরি ভালো বুঝে নিয়েছিলেন। অভিজিৎ রায় হত্যার পর পর যেসব আলামত স্পষ্ট হয়ে ওঠেছিলো তা হলো যেভাবেই হোক আগে তাঁকে বেঁচেবর্তে থাকার চেষ্টা করতে হবে। এই ফাঁকফোকরে যেভাবেই হোক দেশ ছাড়ার চেষ্টাটা করে যেতে হবে। এই যে, বেঁচেবর্তে থাকা সেটা কীভাবে সম্ভব? যেখানে আততায়ী নিয়ত শাণ দিচ্ছে রামদা-ছুরি সেখানে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায় জানা ছিল না! তাঁরও না, আমরা যারা তাঁর বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত জনেরা তাদেরও কারও ভালো জানা ছিলো না। আমরা তখন পথ ভুলে অন্ধের মতো পথ হাতড়ে হাতড়ে কোথায় যেনো চলে গিয়েছি। জানিনা! তাঁর ব্যাংক শেষে, আমাদের কাজকাম শেষে সন্ধ্যের আগে আগে আমরা যখন চা-সিঙ্গারার ছলে এইসব ভয়াল মৃত্যুগন্ধী আলাপ করতাম তখন আমাদের আর খুব একটা কথা বলার মতো কিছু আর থাকতো না। আমরা নিজেরা কেউই ভালো জানতাম না যে, এখন এই অবস্থায় কি করা যায়। আমরা দেখেছি আমাদের চোখের সামনে একে একে থাবাবাবা, অভিজিৎ রায় ওয়াশিকুর বাবুকে নির্মমভাবে খুন হতে। শুধুই দেখেছি! ততোদিনে অবশ্য দেশের লোকেদেরও ধর্মের বিকার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। চাগাড় দেওয়া ধর্মের জিকিরে আমরাও এই ধর্মনগরীকে (সিলেট) কেমন সন্দেহের চোখে তাকাই। অবাক না হলেও ভীত হই। সন্ত্রস্তা কাজ করে! আশপাশে লোকজন দেখলে ফিসফাস করে কথা বলি। ভিড়বাট্টায় পায়ে পা রেখে হাঁটি। ভ-আতঙ্কে একে অন্যের দিকে তাকাই। সন্দেহ নিয়ে সামনে চলি। কিন্তু এ থেকে উত্তরণ দূরে থাক অনন্ত বিজয় দাশকেও আর আমরা ঠিক ভালো বুঝতেও পারিনা। বুঝাতে গেলেও আর ঠিকঠাক বুঝানো যায় না। চাকুরি, ক্যারিয়ার অন্যদিকে অসুস্থ বাবা, মা সব মিলিয়ে নিজেকে নিয়ে এতো এতো ভাবার সময় কই!

"ওরা সব ওই পথে-তবু
মধ্যবিত্তমদির জগতে
আমরা বেদনাহীন-অন্তহীন বেদনার পথে।”

নগর মধ্যবিত্ত জীবনের নানান জটিলতা তখন আমাদের সবারই কমবেশ আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এইরকম একটা ভয়াল সময়েও আমরা খুব ভালো কিছু করে উঠতে পারিনি। আমরা জানি আজ না হোক কাল অনন্ত বিজয়ের ওপর আক্রমণ-হামলা হবে। কিন্তু আমাদের করণীয় কী? আমরা ঠিক জানিনা। জানেননা অনন্ত বিজয় দাশও। শুধু বিহ্বল চোখে বিহ্বল সময়কে বয়ে যেতে দেখি। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাতের দিকে অগ্রসর হতে হতে তাঁকে বলি, সাবধানে যান, দেখেশুনে যান। নাকি এগিয়ে দেবো? আনমনা ধূসর চোখে অনন্ত বিজয় হয়তো সিগারেটে শেষ টান দিতে দিতে বলেন, দুরো না বা! এখনও চারিদিক সরগরম আছে। অতো টেনশন কইরো না!
শুক্রবারে যখন নতুন দোকানের তেহারি টাইপ অদ্ভুত কিছু একটা খাচ্ছি, তখন হয়তো তিনি ফিসিফিস করে বললেন, আজ ফারাবিকে দেখেছি। সে মেবি আমাকে ফলো করতে করতে এসেছে। আমি শিউর না। কিন্তু সে আমাকে দেখেছে আমি নিশ্চিত। কারণ আমাকে দেখেই সে মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিয়েছে। আমি তাকে একটু দূর থেকে ফলো করছিলাম বুঝতে পেরেই বোধহয় সে তড়িঘড়ি রিকশা নিয়ে এয়ারপোর্টের রাস্তা ধরে চলে গেলো। ততক্ষণে আমাদের আর খাবার খুব একটা ভালো লাগছে না। কি খাচ্ছি আর স্বাদ ভালো পাচ্ছিনা। লেবু চিপছি বা সালাদ নিচ্ছি অযথাই। সবকিছু বিস্বাদ ঠেকতেছে!
পরের দিন বা অন্য কোন দিন যখন কোনো বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করতে করতে পরিচিত গলিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানতে টানতে বিহ্বলতাকে মনেপ্রাণে সরিয়ে ভালোমন্দ আলাপ করছি, তখন হয়তো কেউ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো, আমাকে চিনেছেন? আপনি তো অমুক, মাস্টারি করেন। আমাকে চিনেন নি? না চিনিনি। চিনতে পারিনি! দেখা গেলো অনন্ত বিজয় হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছেন। বুঝতে না বুঝতেই আবার চলেও গিয়েছে। কিছু বুঝলে? হ্যাঁ-না মাঝামাঝি যখন ভাবছি তখন হয়তো মনে পড়লো আগের সপ্তাহের চা খাওয়ার কথা। বেশ অন্ধকার। আর বৃষ্টি। ঝুম বৃষ্টি। দরগার এক ফাস্ট ফুডে আটকা পড়েছি। চা-সিগারেট ফুঁকছি। এরমধ্যেই হুড়মুড় করে দু’তিন জন এসে ঢুকলো। গায়ে গা ঘেঁষে আছে। আগুন চাইলো। কেমন যেনো অনাহূত মনে হলো! সিগারেটখোর তো নয়ই!

সুইডেন এম্বাসিতে যেদিন ভিসা রিফিউজ করবে সেদিন ভূমিকম্পে ঢাকা নগরী বেশ আতঙ্কিত। আমরাও। আমি আর অনন্ত বিজয় দাশ। আগের দিন রাত্রেই আমরা রওয়ানা দিয়েছিলাম। স্বভাবতই খুব ভোরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সকালের প্রাত্যক্রিয়া সেরে ক্ষুধা সত্ত্বেও নাস্তা আর ঠিক ভালো গিলতে পারছিনা। কেউই না। আমার আবার জ্বর। চোখেমুখ লাল হয়ে আছে। তার ওপর রাত জাগা। যদিও এসবে তাঁর বেশ খেয়াল আছে। নানাভাবে সেসব জিজ্ঞেসও করছেন। কিন্তু সব মিলিয়ে ভেতরে ভেতরে একটা চাপা অস্থির-যন্ত্রণা কাজ করছে। আশপাশ ঠিক আর আমরা ভালো দেখছি না। পারতপক্ষে কেউ কারও দিকে বেশিক্ষণ তাকাচ্ছিও না। অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে যে যার মতো যেনো সিএনজি ভ্রমণ করছি! সময় যেনো আর কাটে না। এর আগে যখন ভিসা ইন্টারভিউ ছিলো সে সময় এতোটা অস্থিরতা ছিলোনা। অনন্ত বিজয় তখন এম্বাসিতে ইন্টার্ভিউ দিতে ঢুকেছেন আর আমি আমার পরিচিত এক ফ্রেন্ডকে ঢেকে এনে আশেপাশেই আড্ডা দিচ্ছি। আজ মনে হচ্ছে সময় ফুরোতেই চাচ্ছে না। আর সব কাগজপত্র পেতে পেতে বিকেলও হবে। আসলেই সব পেতে পেতে প্রায় তিনটে হয়ে গিয়েছিলো! এতক্ষণ কই কিভাবে সময় কাটাবো সেসব চিন্তা আর আমাদের মাথায় নেই। পেয়ারা খেতে খেতে যখন আশেপাশ তাকিয়ে দেখি যে ফেউ লেগেছে, তখন ভিসা সেন্টারের পাশঘেষা ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলির ভিড়ে ভিড়ে হাঁটতে থাকি। ভূমিকম্প আর জঙ্গিতাঙ্ক মিলে যা দশা হয়েছিল তা আজও ভাবলে পরে কেমন যেনো অস্থির হয়ে যাই!

"...এইখানে; এইখানে মৃণালিনী ঘোষালের শব
ভাসিতেছে চিরদিনঃ নীল লালা রুপালী নীরব।"

ভিসা রিফিউজড হওয়ার পর যখন আপিল করার সব প্রসেস হচ্ছে ঠিক তার আগে বা পরেই একদিন অনন্ত বেশ হন্তদন্ত হয়ে ম্যাসের দরজায় খটখট আওয়াজ করেন। বুঝতে পারি কে হতে পারে। এ আওয়াজ তো খুব পরিচিত। রুমে ঢুকে বলেন লুঙ্গি ছেড়ে প্যান্ট পরো। কিছু খেতে হবে। বেশ ক্ষিধে লেগেছে। বিকেল তখনো খুব বেশি হয়নি। আমার খাওয়া হয়ে গেলে সাধারণত আর কিছু খাইনা জেনেও তাঁর সাথে কিছু একটা খেতে হবে, এ জানা কথা। না হলে খাবেন না। যেই হোক তাঁর সাথে কিছু একটা খেতে হবে। একা তাঁর মুখে কিছু রোচে না! কিছু একটা খেতে খেতে হিম হয়ে সব শুনি। মোটরবাইক বাসা অবধি রেকি করেছে। অবশ্য ধরা পড়তে পড়তে পালিয়েও এসেছে। বিদ্যুৎ নেই, এই ফাঁকেই কোনো এক সন্ধ্যেয় হেলমেট পরিহিত দু’জন তাঁদের বাসার গেইটে নক করে। বলে, জিন্দাবাজারের পরিচিত কোনো এক ইলেক্ট্রনিকসের দোকান থেকে তারা এসেছে। দোকান থেকে বাকি টাকার জন্য নাকি তাগাদা দিতে এসেছে। অথচ বাকি টাকায় কিছু কেনা তো দূরে থাক এইরকম কোনো ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য তাঁদের ভাই-বোনের কেউই মাস ছ’য়েকের মধ্যে কেনেননি। নাম কি, আর ভেতরে আসেন বলতে না বলতেই বিদ্যুৎ এসে পরে। আর বিদ্যুৎ আসতে না আসতেই মোটরবাইক স্টার্ট দিয়ে পলায়ণ করে। শুনি। ভাষাহীন বোবা আমরা। কী করা কর্তব্য কেউই জানিনা। আরও ঘনিষ্ঠ এক দু’জনকে আমি বলি। তাঁরাও শুনে একদম বিমুঢ়! আমরা কেউই জানিনা তাঁকে কীভাবে, কী করলে তাঁর ভালো হবে! শুধু তাঁর হেঁয়ালিকে শেষ সময়ে বড় নিদারুণ কৌতুক বলে মনে হতো। যখন বলতেন, আমাকে সবাই মিলে কুপিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে দাও। তবে মেবি আমাকে এরা ভিসা দিবে! এতে যদি বেঁচে যাই!
ঘোর-বেঘোর আর আতঙ্কিত হয়ে আমরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে ঝোড়ো মেঘলা বিষাদময় প্রকৃতির ঘনঘটা দেখে হাতের মোবাইলে সময় দেখতে দেখতে আসন্ন বিপদ টের পেয়েই কীনা কে জানে যে যার গন্তব্যের দিকে ধীরে ধীরে, কখনওবা বেজায় জোরে হাঁটছি। আর অনন্ত বিজয় দাশ তখন মহাপ্রস্থানের দিকে হেঁটে চলেছেন। আর কোনো পিছুটান নেই! অভিজিৎ পানে ধেয়ে যাচ্ছেন… কে আর রোধে! কার এমন সাধ্যি আছে আর…!

"...অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয় -
আরো এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
ক্লান্ত ক্লান্ত করে;
লাশ কাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই,
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হয়ে শূয়ে আছে টেবিলের ‘পরে।"

লেখক: প্রবাসী ব্লগার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিল, সিলেট।

@

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন