Sylhet View 24 PRINT

স্বাধীনতা মানুষের মনের একটি খোলা জানলা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৬ ০০:৫১:১৯

আল-আমিন :: বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার ৪৮ তম বছর অতিক্রম করছে। দুই বছর পর বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে, ইহা বড় আনন্দের বিষয়। একটি জাতির জন্য স্বাধীনতার ইতিহাস যেমন গৌরবের, তেমনি বেদনার। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আজ আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই সব শহীদকে, যারা নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে এ দেশের ভবিষ্যৎকে সুন্দর করার জন্য স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়ে গেছেন। বিনম্র শ্রদ্ধা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সব সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধাকে।

একটি দেশের জন্য স্বাধীনতার ৪৮ বছর খুব বড় সময় নয়। অনেক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ এই সময়ে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে এগুচ্ছে। আমরা তরুন, আমরা স্বপ্ন দেখি, বাংলাদেশ একটি পুরোপুরিভাবে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশে উন্নত হবে। রাজনীতিবীদদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, জলবায়ুর পরিবর্তন, স্বাস্থ্য সেবা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবেলাসহ রাষ্ট্রের সবক্ষেত্রেই শতভাগ সফলতা আসবে। দেশকে উন্নতির শিখরে তুলে নেওয়ার জন্য নতুন নতুন উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে চলমান রেখে দেশের জনগণের অবস্থা শতভাগ উন্নত এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থাশীলতা বৃদ্ধি করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নত বিশ্বের কাতারে এবং উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিশ্বের কাছে রোল মডেল হবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশকে দেখার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, গনতন্ত্রের বাংলাদেশ, স্বাধীনতার বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ, তারুন্যের চোখে আগামীর উন্নয়নের বাংলাদেশ আমরা আশা করি।

দেশে তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশেরও বেশি। তরুণরা আগামী দিনের পথচলার শক্তি। দেশের ভালো মন্দ নির্ভর করে এই প্রজন্মের তরুণদের ওপর। এদেশের সরকার গঠন নির্ভর করে তরুন ভোটারের সমর্থনে।

আমরা তরুণ প্রজন্ম। আমরা চাই, নিকট ভবিষ্যতে দেশের গৃহহীন মানুষগুলো অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থানসহ অন্যান্য মৌলিক নাগরিক সুবিধা প্রাপ্ত হোক। একেকটি গ্রাম হোক উন্নত শহরে রুপান্তর। আমরা চাই উন্নয়ন ও শান্তিতে বহুবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ মাথা উচু করে সম্মান অর্জন করুক। নগর থেকে গ্রামে রাস্তাঘাট ব্রীজ কালবাট নির্মিত হোক। ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলে ওঠুক। বছরের পহেলা দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার ধারাবাহিকতা চলমান থাকুক।

অর্থনৈতিক অগ্রগতি, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার কারণে বতর্মান সরকারের নেতৃত্বের প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে। কোনো হামলা-হুমকি, আন্দোলনও বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে তার লক্ষ্য থেকে দূরে রাখতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। তাঁর রাজনৈতিক ভূমিকায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে নতুন মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে।

জনগণের আকাংক্ষা ও প্রত্যাশানুযায়ী এ দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বের সাফল্যে বাংলাদেশ আজ গৌরব জনক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় এদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান শতভাগ সমৃদ্ধ হবে।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শক্তি হিসেবে কাজ করেছিল তারুণ্য। তারুণ্যের মনে, শক্তিতে এবং ভাবনায় থাকে দেশপ্রেম। এই তারুণ্যের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। তরুণীরা সম্ভ্রম বিলিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। আজকের তরুণ আর একাত্তরের তরুণদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। একাত্তরের তরুনদের মধ্যে যেমন ছিল একতা, সাহস, ঐক্য। তেমনি এখানকার তরুণদের মধ্যে আছে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ছোঁয়া, শিক্ষা ও জ্ঞানভাণ্ডার এবং শক্তি। তরুনদের এই চেতনার মনোবল, উৎসাহ ও উদ্দীপনায় অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতার সংগ্রামের বিজয় ।

আমাদের বিশ্বাস, তারুন্যের নেতৃত্বের গুনাবলী দিয়েই আমাদের স্বাধীনতার সুফল বয়ে আনতে সক্ষম হবে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। আজকের তরুণরা শিক্ষা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেধা ও সাহস দিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য আগামীর বাংলাদেশ নির্মান করবে। উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশের তরুণরা সৃজনশীল ও সৃষ্টিশীল কাজে পারদর্শী ও দক্ষ।
আমরা দ্রুত উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হতে চলেছি। বাংলাদেশ আজকে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে স্বীকৃত।

আমরা চাই দেশের সকল নাগরিকের সুবিধা সুনিশ্চিত,অসহায়ের মানুষের সহায়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, তথ্য প্রযুক্তি প্রসারে হাতের মুঠোয় বিশ্ব, সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ, কৃষকের মুখে হাসি, উড়াল সেতু, মেট্রো রেল, পদ্মা সেতু, সুরমা সেতু, প্রশস্ত চারলেনের রাস্তা, গৃহহীনদের নিশ্চিত আবাসন, দরিদ্রের ঘরে বিনামূল্যের চাল, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্ত সম্মান, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার,সবার জন্য সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, স্বনির্ভর বাংলাদেশ, ভয়াবহ মাদক নির্মূল বাংলাদেশ, বয়স্ক ভাতা নিশ্চয়তা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। আমাদের বিশ্বাস, দেশ এগিয়ে যাবে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের মাথায় বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।

আমরা তরুণ, আমরা চাইনা পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হোক,চাইনা কর্ণফূলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণ কাজ বন্ধ হোক,চাইনা বন্ধ হোক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্মাণ। এখন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা দেশে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। মফস্বল এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং উপজেলা-জেলা হাসপাতালগুলোতে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা টেলিমেডিসিন সিস্টেমসহ চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষকদের জন্যে কৃষিকার্ড, ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার ব্যবস্থা হয়েছে। দেশে দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর সূচকে বাংলাদেশের সাফল্যে বিশ্বনেতৃবৃন্দ রীতিমতো অবাক হয়েছেন। যার স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাউথ সাউথ পুরস্কার, ইউএনএমডিজি পুরস্কার জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে জলসীমা চুক্তির বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পেরেছেন। স্থল সীমান্ত চুক্তি করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহু বছরের সীমানা বিরোধের নিষ্পত্তি করতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পাওয়া এবং এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এই সরকারের বিরাট সাফল্য। যে সাফল্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্র ফুটে ওঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এ বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে উন্নত দেশের মতো বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সুফল ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছে দেশের জনগণ। সরকারের জন্যে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। কিন্তু স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবে দৃশ্যমান হতে চলেছে এবং পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তিবান্ধব কৃষিনীতির কারণেই বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার প্রসার, নারী উন্নয়ন, শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য প্রশংসনীয়। জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিলেও এর উত্থান ঠেকানো গেছে। এ দেশের মানুষ ধর্মের নামে সহিংসতা সমর্থন করে না। এই শান্তির দ্বারা অব্যাহত থাকুক। গড়ে উঠুক রাজনৈতিক ঐকমত্য। সরকারও গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে অঙ্গীকারবদ্ধ। স্বাধীনতা অর্থবহ হয়ে ওঠবে আমাদের এই ঐক্যবদ্ধের জন্যে। আশা রাখি, আমাদের এই ঐক্যে ও শান্তির ভিত্তিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো দ্রুত কাটিয়ে ওঠে আমরা স্বাধীনতার সুফল দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে, প্রতিটি জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হবো।

দেশবাসীকে স্বাধীনতার শুভেচ্ছা।

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.