Sylhet View 24 PRINT

শীতলপাটির কাব্য

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৭-০৯ ২২:১২:৩৫

:: মাতুব্বর তোফায়েল হোসেন  ::

'এ ভরা বাদর
মাহ ভাদর
হে সখী হামারি দুখের নাহি ওর
শূণ্য মন্দির মোর"

বিদ্যাপতির পদ থেকে যে বিরহের আর্তনাদ ওঠে, কুশিয়ারা নদীর বুকের উপর তার অচঞ্চল প্রদর্শনী চলে। ভরা বর্ষার ভরা নদী, পাড়ের সমান বুক উঁচু করে পাটিবেতের শুকনো ছালের মতো ধূসর রঙের বিছানা পেতেছে। যেন শীতলপাটির বিছানা পাতা রৌদ্রোজ্জ্বল জলের উপর। খোলা বাতাস এসে শরীর জুড়ায়, নদীর জলের উপর থেকে আলো এসে চোখও জুড়ায়। এপাড় থেকে গড়াগড়ি দিয়ে ওপাড়ের প্রান্ত ছুঁয়ে শীতলের স্পর্শ নিতে চায় মন। শীতলপাটির শিল্প-বুননের ভাঁজ ধরে কতো কতো দিনের কতো রকম সব গল্প লেগে থাকে। পাটিকরের স্বপ্ন পাটি বেচে পয়সা রোজগারের। ক্রেতার চোখে শীতল বিছানায় বসে-ঘুমিয়ে জীবনকে আরেকটু উপভোগ্য করার স্বপ্ন। শীতল পাটির অনুপস্থিতিতে বিয়ের আসর থেকে কনে ফেলে বর উঠে যাবার ইতিহাসও লিখিত আছে এইদিকে। এইদিকে মানে শীতলপাটির দেশে, সিলেট অঞ্চলে।

নকশীকাঁথার মত এও আরেকটা শিল্প। কুটির শিল্প। গ্রামবাংলার মানুষের রোজকার যাপিত জীবনের অনুদঘাটিত ইতিহাসের ময়দান থেকে উঠে এসেছে শীতলপাটি। দুহাজার সতেরো সালের সাতাশে অক্টোবর ইউনেস্কো বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের শীতলপাটিকে বুননের ঐতিহ্যগত হস্তশিল্প হিসেবে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নিবর্স্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্বব্যপী এর একটা পরিচিতি হয়েছে বটে। তবে বাংলার লোকজ শিল্প ও ঐতিহ্যের লীলাভূমিতে বহু আগে থেকেই শীতলপাটির সুনাম ছড়িয়ে ছিলো। শীতলপাটির কাঁচামাল মূর্তা গাছ ক্ষুদ্রকায় বাশের মতো দেখতে এক প্রকার ঝোপ জাতীয় গাছ। ঝোপ-ঝাপের মতো অগোচরে বেড়ে ওঠে। কাশের মত যত্রতত্র। পাটি বানানো ছাড়া আর কোনো বিশেষ ব্যবহার নেই উদ্ভিদটির। ইদানিং গাছটির পরিকল্পিত চাষাবাদ শুরু হয়েছে পাটি বুননের জন্য।

সিলেটের যে অঞ্চলগুলোতে শীতল পাটি বানানোর ঐতিহ্য রয়েছে তার মধ্যে কুশিয়ারা নদীর তীর সংলগ্ন বালাগঞ্জের নাম রয়েছে সর্বাগ্রে। পাশাপাশি রয়েছে বিয়ানিবাজারের নাম। মানে ও গুনে এখানেই বিকশিত হয়েছে শীতলপাটি উৎকৃষ্টতম উপায়ে। ধূসর-সাদা শুকনো মুর্তার বেত থেকে রঙিন পাটিও তৈরি করা হয় রঙ লাগিয়ে, মনের মত নকশা চাপিয়ে মনোহর করার চেষ্টাও লক্ষণীয়। বিবাহ, খৎনা, আকিকা, নাইওর ইত্যাদি লৌকিক আচারে দামী উপহার হিসেবে শীতলপাটি এখনো প্রচলিত। দেশি-বিদেশি গুরত্বপূর্ণ কেউ এদিকে এলে উপহার হিসেবে হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় শীতলপাটি। এসি-ফ্যানের ঠান্ডায় অভ্যস্ত হাল জীবনের মাঝেও শীতলপাটির মাধুর্য ক্ষুণ্ন হতে পারে নি।

এবার দেখে নেয়া যাক এই পাটি তৈরি করার ঘরোয়া পদ্ধতিটিঃ
মুর্তা গাছ গোড়া থেকে কেটে কাণ্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। দু'একদিন পর পরিষ্কার কাণ্ডকে দা দিয়ে চেঁছে পাতা ও ডাল-পালা ফেলে দেয়া হয়। এরপর মাটিতে মাছকাটার বটি রেখে কাণ্ডটিকে চিরে লম্বালম্বি কমপক্ষে চারটি ফালি বের করা হয়। কাণ্ডের ভেতর ভাগে সাদা নরম অংশকে বলে ‘বুকা’। এই বুকা চেঁছে ফেলে দেয়া হয়। পাটিকরের লক্ষ্য থাকে মুর্তার ছাল থেকে যতোটা সম্ভব সরু ও পাতলা ‘বেতী’ তৈরী করে নেয়া। বেতী যতো সরু ও পাতলা হবে পাটি ততো নরম ও মসৃণ হবে।

বেতী তৈরী হওয়ার পর এক-একটি গুচ্ছ বিড়ার আকারে বাঁধা হয়। তারপর সেই বিড়া ঢেকচিতে পানির সঙ্গে ভাতের মাড় এবং আমড়া, জারুল ও গেওলা ইত্যাদি গাছের পাতা মিশিয়ে সিদ্ধ করা হয়। এর ফলে বেতী হয় মোলায়েম, মসৃণ ও চকচকে। রঙ্গীন নকশাদার পাটি তৈরীর জন্য সিদ্ধ করার সময় ভাতের মাড় ইত্যাদির সঙ্গে রঙের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে হয়। তারপর পাটিকর মাটিতে বসে কাপড় বোনার মতোই দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ-বরাবর বেতী স্থাপন ক’রে নেয়। এ সময় বেতীগুলোকে ঘন আঁট-সাঁট ক’রে বসানো হয় যাতে ফাঁক-ফোকর না থাকে।

বাংলার মাটির মাধুর্য বর্ণনায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ শীতলপাটিকে 'খাটি সোনা' কবিতায় এনেছিলেন এইভাবে--

চন্দনেরি গন্ধভরা,
শীতল করা, ক্লান্তি-হরা
যেখানে তার অঙ্গ রাখি
সেখানটিতেই শীতল পাটি।

আর পল্লী-কবি জসীমউদ্দীনের নকশিকাঁথার মাঠ কবিতায় ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি এসেছে কামরাঙ্গাপাটি নামে--
‘আসুক, আসুক বেটির দামান কিছুর চিন্তা নাইরে
আমার দরজায় বিছায়া থুইছি কামরাঙ্গাপাটি নারে।’

নকশীকাঁথা শীতলপাটির কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের এবং নিজস্ব ঘরানার কারুশিল্প। বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে এর প্রচলন তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। দুহাজার আট সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নকশিকাঁথার ভৌগোলিক স্বীকৃতি পায়। বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত হস্তশিল্প হিসেবে নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় নকশীকাঁথাকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। তবে আমাদের দেশের বিশ্ব স্বীকৃত ঐতিহ্য খুব একটা কম নয়। রুচিশীল জামদানির বুনন শিল্প, লোকজ বাউল গান, নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা, অতুলনীয় স্বাদের রুপালি ইলিশ, রসেভরা রসগোল্লা, সোনালী আঁশ পাটের জেনোম-কোড আবিষ্কার এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন বাংলাদেশের একান্ত নিজস্ব ঐতিহ্য হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণও বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

শীতলপাটির চাহিদা বর্তমানে পড়তির দিকে। মুর্তা গাছের চাষ কমে যাওয়ায় এবং প্লাস্টিকের মাদুর সহজলভ্য হওয়ায় শীতলপাটি বোনা ও বিক্রি কমে গেছে। মানুষ সচরাচর সস্তার দিকে ঝুকতে চায়। বসা এবং শোয়ার জন্য আধুনিক নানা উপায় ও উপকরণ উদ্ভাবনের কারনে সাধারনের ভেতর আগের মতো শীতলপাটির ব্যবহার নেই। দীর্ঘ সময় নিয়ে ধৈর্য্য ও যত্ন সহকারে শীতলপাটি তৈরির ব্যয়ভার তুলে আনতেই পাটিয়ালের কষ্ট হয়ে যায়। লোভনীয় লাভজনক না হওয়ায় এই পেশার লোকজন অন্য পেশার দিকে ঝুকছে।

বালাগঞ্জের সাংবাদিক কবি শাহাব উদ্দিন শাহিন কবিতায় শীতলপাটির কথা বলেছেন এভাবে--
''বালাগঞ্জে শীতলপাটি
শ্রেষ্ট উপহার
শীতলপাটি পেয়ে অতিথি
করেন অহংকার।
----- ----- ----- ----- ----- -----
বালাগঞ্জে আসেন যতো মন্ত্রী
কর্মকর্তা আর নেতা
উপহার হিসেবে শীতলপাটি
প্রয়োজন হয় না নকশীকাঁথা।''

কথিত আছে, একদা শীতলপাটি স্থান পেয়েছিল রানী ভিক্টোরিয়ার রাজপ্রাসাদেও। ব্যবসা কিংবা পর্যটন সূত্রে ভারতবর্ষে আসা বিদেশীরা এক সময় মসলিন, জামদানি, মসলা ইত্যাদির সঙ্গে নিয়ে যেতেন শীতলপাটি। মুঘলদের অন্দরমহলে মসলিনের পাশাপাশি শীতলপাটির বিশেষ কদর ছিল। অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি 'শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত" গ্রন্থে একটি বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছেন, '১৮৭৬–৭৭ খৃষ্টাব্দে শ্ৰীহট্ট হইতে ৩৯২৭ টাকা মূল্যের পাটি রপ্তানি হইয়াছিলো'। টাকার মানের হিসেবে সেই সময়ে পরিমানটা অবিশ্বাস্য রকম বড়। দেশের অনেক জেলায় মুর্তা গাছ পাওয়া গেলেও শীতলপাটির বেশির ভাগ শিল্পীই বৃহত্তম সিলেট বিভাগের বালাগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জের। সিলেট অঞ্চলের এ পাটির শতবর্ষী ঐতিহ্য রয়েছে। এখানকার একশ গ্রামের প্রায় চার হাজার পরিবার এ কারুশিল্পের সঙ্গে জড়িত। দক্ষিণবঙ্গের ঝালকাঠি জেলারও রয়েছে এই পাটির দীর্ঘ ঐতিহ্য। এছাড়া নোয়াখালি, ময়মনসিংহ এলাকায় কম-বেশি শীতলপাটির উৎপাদন হয়ে থাকে। যুগের হাওয়া আর মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে বাজার সংকুচিত হলেও গুনে-মানে শীতলপাটি রয়ে গেছে এখনো অকৃত্রিম-নিরেট-খাটি। ঘরের পুরুষ হাটে-বাজারে-মাঠে কাজ করতে গেলে বউ-ঝিদের হাতের ছোঁয়ায় বোনা হয়ে চলে শীতলপাটি। ঘরের ও বাইরের নানা আশ্বাস আর নৈরাশ্যের বাণী লিপিবদ্ধ থাকে শীতলপাটির ভাঁজে ভাঁজে। জায়নামাজ, শোবার বিছানা, খেতে বসার বিছানা, দরবার কক্ষের বিছানা ইত্যাদি নানা রকম ব্যবহার রয়েছে শীতলপাটির।

গরমে আরাম আর ঘরের শোভা বর্ধনে এই পাটির জুড়ি নেই। খালি পাটির উপর শুয়ে থাকলেও প্রশান্তির ঘুম নেমে আসে চোখে। এক সময় ঘরে ঘরে শোভা পেতো শীতলপাটি। বিক্রির উদ্দেশ্য ছাড়াও বোনা হতো বাড়ি বাড়ি। অবসর সময়ে যে কেউ শখের বশে বুনে চলতো শীতলপাটি। বিক্রির জন্য অথবা নিজের ব্যবহারের জন্য অনেকেই নিরিবিলি পরিবেশে সূক্ষ্ম হাতে বানাতে থাকতো দৃষ্টিনন্দন-শোভাবর্ধক ও আরামদায়ক বিছানা। আমরা বিভূতিভূষণের অভিযাত্রিক উপন্যাসের সামান্য অংশ এখানে তুলে ধরতে চাই--
'আবদুল লোকটা ভিকটোরিযান যুগের লোক, মহারাণীর ডায়মণ্ড জুবিলী দেখে এসেছে। বিলেতে বসে। কিন্তু ওকে দেখে কে ভাববে সে কথা ! আবদুল এখন পাহাড়ের ধারের ধানের ক্ষেতে ছোট্ট কুঁড়ের মধ্যে বসে পাহারা দেয়। আর শীতলপাটি বোনে।'

শীতলপাটি প্রিয়জনের সান্নিধ্যকে করে তোলে আরো রোমান্টিক এবং রোমাঞ্চকর। আরণ্যক বসু 'মনে থাকবে' কবিতায় পরের জন্মে প্রেমিকার জন্য উপহার সামগ্রীর বর্ণনা দিতে গিয়ে শীতলপাটিরও উল্লেখ করেন--

'পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?
বুকের মধ্যে মস্ত বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেবো;
সন্ধ্যে হলে বসবো তখন।'

বাজার অর্থনীতির জটিল হিসেবে না গিয়ে অন্তত এটুকু বলা যায় যে, শীতলপাটি আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষত বাঙালি সংস্কৃতির শত বছরের ঐতিহ্য। সস্তা আবেগের বিষয় নয় এটি। বরং দারুনভাবে উপযোগী এক সাংস্কৃতিক উপাদান। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে উপযোগী উপকরণ। শীতলপাটির ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্য-সচেতনতারও প্রতীক। অন্তত প্লাস্টিকের পাটির চেয়ে শীতলপাটি অনেক বেশি আরামদায়ক এবং স্বচ্ছন্দে ব্যবহারযোগ্য। পরিবেশবান্ধব তো বটেই। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে শীতলপাটি আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে মহিমান্বিত করেছে। এই শিল্পের টিকে থাকা ও প্রসার হওয়া নির্ভর করছে আমাদের আত্মোপলব্ধির উপর। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি দেশপ্রেমিক মানুষদেরও বুনন শিল্পের এই বিস্ময়কর ঐতিহ্যকে পরিচর্যার মাধ্যমে পরিশীলিত করে টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসা দরকার। আমরা আমাদের সংস্কৃতির অংশ, বিশ্বমঞ্চে গৌরব ছড়ানো শীতলপাটিকে বিলুপ্ত হতে দিতে পারি না। রাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক পরিচয় সাবলীলভাবে তুলে ধরে বিশ্ব-দরবারে আত্মমর্যাদা বাড়ানোর প্রতিটি উপায়কে আমরা অবলম্বন করতে চাই। এটি প্রতিটি সচেতন মানুষেরই মনের কথা সন্দেহ নেই। শীতলপাটির শীতল ছোঁয়ায় আমাদের শরীর জুড়ানোর মতো মনও হোক শীতল। সমৃদ্ধ হোক, বিকশিত হোক বাঙালির সংস্কৃতি, নিজস্ব পরিচয়কে সগৌরবে তুলে ধরে।

হাল আমলে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ডদল 'জলের গান' এর একটি গানে শীতলপাটি এসেছে উদার-রোমান্টিকতার প্রকাশ হয়ে--

'তোমার এক হাতে দেবো লাল টুকটুক বেলুন
আরেক হাতে সূঁচালো আলপিন
--- --- ---- ---- ---- ---- ---- ---- ---
উড়ো উড়ো মেঘপাখি - যাও যেথা খুশি
আমি তোমার জন্য পাঁজর জুড়ে
অচিনপাখি পুষি ।।

এসো, বোসো, আমার উঠানে
বুক ভরে নাও শ্বাস -
শীতলপাটি বিছিয়ে দেবো তালপাখার বাতাস।'

উদার ও মানবতাবাদী বাঙালি সংস্কৃতির বিশ্বব্যপী সুনাম রয়েছে। চর্যাপদের বাংলায়, বৈষ্ণব-বাউলের বাংলায় শীতলপাটি মনোরম গৃহ-বসবাসে এক উজ্জ্বল সংযোজন। আমাদের প্রেম ও বিরহে ঋতুচক্রের পালা বদলে গ্রীষ্মের তাপিত দুপর কিংবা বিকেলের অবসরে শীতলপাটি উপহার দেয় প্রাণ-জুড়ানো ঠান্ডার পরশ।

এই নিবন্ধের শুরুতে আমরা বিদ্যাপতির পদের বিরহাতুর অনুভব থেকে শীতলপাটির হাতছানি দেখেছিলাম। শেষ করবো প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে--

"অলস মাছির শব্দে ভ’রে থাকে সকালের বিষণ্ণ সময়,
পৃথিবীরে মায়াবী নদীর পারের দেশ ব’লে মনে হয়;
সকল পড়ন্ত রোদ চারিদিকে ছুটি পেয়ে জমিতেছে এইখানে এসে,
গ্রীষ্মের সমুদ্র থেকে চোখের ঘুমের গান আসিতেছে ভেসে,
এখানে পালঙ্কে শুয়ে কাটিবে অনেক দিন জেগে থেকে ঘুমাবার সাধ ভালোবেসে।"

লেখক :: সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.