আজ শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

ভয়াল কালরাত স্মরণে এক মিনিট অন্ধকারে দেশ

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৩-২৬ ০০:৫২:০৮

এক মিনিট ব্ল্যাকআউটের মধ্য দিয়ে দেশবাসী গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে ২৫ মার্চের কালরাতকে। ১৯৭১ সালের এই দিনে নিরীহ-নিরস্ত্র বাঙালির ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল পাকিস্তানি দানবরা। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে পাকিস্তানি হায়েনারা হত্যা করেছিল বাঙালি নারী-পুরুষ-শিশুকে। ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণ করতে গত রাতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সব আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

এ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২৫ মার্চের রাত বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভীষিকাময় কালরাত। সেই রাতটিকে স্মরণ করতে ঢাকাসহ সারা দেশে ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করা হয়। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আগামী প্রজন্মকে সেদিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানাতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, আলো জ্বেলে আমরা যেমন স্মরণ করি তেমনই পুরো দেশকে অন্ধকার করে দেওয়া ‘কালরাত’র ভয়াবহতা বুঝতে আমাদের সহায়তা করবে। কী ভীষণ বিভীষিকা ছিল সেদিন।

জরুরি স্থাপনা ও চলমান যানবাহন ছাড়া সারা দেশে এই প্রতীকী ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই এক মিনিট সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি ছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৫ মার্চ কালরাতের গণহত্যা সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।  মোমবাতি প্রজ্বালন, আলোচনা সভা, নাটকসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কালরাত স্মরণ করা হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডি রবীন্দ্র সরোবর, মানিক মিয়া এভিনিউ, শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন স্থানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কালরাতের ভয়াবহতা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়।

আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ২৫ মার্চ রাতে যে নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল তার ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যন্ত গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শাসম বাহিনী।

 তাদের সহযোগিতায়ই ঘরে ঘরে চলে হত্যাযজ্ঞ। শুধু ২৫ মার্চ রাতেই ঘুমন্ত বাঙালি নারী-পুরুষের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয় অর্ধলাখ নিরস্ত্র মানুষকে। ওই ৯ মাস দেশের গ্রামগঞ্জে ছিল লাশের স্তূপ। এই সময়ে সারা দেশে ৩০ লাখের বেশি নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকলে পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে পাকিস্তানি সরকার যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন