Sylhet View 24 PRINT

নুসরাত হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করল নুর-শামীম

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৪-১৫ ১২:২৪:৪৭


সিলেটভিউ ডেস্ক :: ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার এজহারভুক্ত দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।

রোববার (১৪ এপ্রিল) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন দু’জনে। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয় নুর ও শামীমকে। এরপর দু’জনের জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়, রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত চলে তা।

১টা ৫ মিনিটে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) তাহেরুল হক চৌহান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, পিবিআই এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার চার দিনের মধ্যে (১০-১৪ এপ্রিল) আমরা ঘটনার মূল নায়ক, যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আইনের মধ্যে থেকে আদালতের কাছে তাদের হাজির করেছেন। আদালত দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সিআরপিসির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আসামি দু’জন আদালতের কাছে তাদের স্বীকারোক্তি উপস্থাপন করেছেন। তারা পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন। একেবারে কিভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে, কারা ঘটিয়েছে, কোন আঙ্গিকে ঘটিয়েছে, বিষয়গুলো এসেছে। দ্রুত আপনারা জানবেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, তারা (নুর ও শামীম) অপরাধ স্বীকার করেছেন, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। এখানে কয়েকজন সংশ্লিষ্ট ছিল, পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে। তারা জেলখানা (কারাগারে বন্দি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা) থেকে হুকুম পেয়েছেন। এই বিষয়গুলোর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে।

হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তাহেরুল হক চৌহান বলেন, এখন পর্যন্ত ১৩ জনের কথা বলা হচ্ছে। আরও কিছু নাম বিচ্ছিন্নভাবে এসেছে। আমরা সেসব যাচাই-নিরীক্ষা করবো।পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহেরুল হক চৌহান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেনযে চারজন আগুন দিয়ে নুসরাতকে পুড়িয়েছে, তারা গ্রেফতার আছে কি-না, জানতে চাইলে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি দুই জনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিগগির ভালো খবর পাবেন।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।

পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যায়।

শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন সিরাজ উদদৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছে। এরমধ্যে সিরাজ উদদৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নুর উদ্দিনকে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে এবং শাহাদাত হোসেন শামীমকে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে মুক্তাগাছা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। নুসরাত হত্যা মামলার ২নং আসামি নুর উদ্দিন এবং শামীম ৩নং আসামি।

বাকি আসামিদের মধ্যে সিরাজ উদদৌলাসহ ১০ জন রিমান্ডে রয়েছেন। এরা হলেন- সিরাজ উদদৌলা (৭ দিন), জাবেদ হোসেন (৭ দিন), নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেন (৫ দিন রিমান্ড)। অপর আসামি আওয়ামী লীগের নেতা ও সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের রিমান্ড শুনানি সোমবার (১৫ এপ্রিল) হবে।

আদালতের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) গোলাম জিলানী বাংলানিউজকে বলেন, নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার নুর ও শামীমকে আদালতে নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ওসি মো. শাহ আলম।

সৌজন্যে: বাংলা নিউজ ২৪

সিলেটভিউ ২৪ডটকম/১৫ এপ্রিল ২০১৯/মিআচ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.