Sylhet View 24 PRINT

আমি সংসদে দাঁড়ালেই ৩০০ এমপি উত্তেজিত হয় : সংসদে রুমিন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-০৬-১৬ ১৯:৩৭:২০

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানা দাবি করেছেন, তিনি সংসদে কথা বলার জন্য দাঁড়ালেই সরকার দলীয় তিনশ’ এমপি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, আমি আমার দলের কথা বলব, তারা তাদের কথা বলবেন। কিন্তু আমি ওঠে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পুরো সংসদ যদি উত্তেজিত হয়ে যায়, ৩০০ সদস্য যদি মারমুখী হয়ে যায় তাহলে আমি আমার বক্তব্য কিভাবে রাখব?

রোববার (১৬ জুন) জাতীয় সংসদের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সংসদের সভাপতিত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী বলেন, আমি আপনাকে বিনয়ে সঙ্গে অনুরোধ করব, আপনি এমন কোনো কথা বলবেন না যেটাতে অপর পক্ষ উত্তেজিত হবে এবং সংসদ পরিচালনায় ব্যত্যয় ঘটবে।

এরপর রুমিন বলেন, আমরা সংসদে আসার সময় সংসদ নেতা বলেছিলেন, আমরা আমাদের কথা বলতে পারব। সংসদ সদস্যরা ধৈর্যসহকারে সেটি শুনবেন। আমার প্রথম দিনের দুই মিনিটের বক্তব্য এক মিনিটও শান্তিতে বলতে পারিনি। একই ঘটনা আজকেও ঘটছে। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে কোন গণতন্ত্রের কথা আমরা বলি, কোন বাকস্বাধীতার কথা বলি, কোন সংসদের কথা আমরা বলি? এভাবে তো একটা সংসদ চলতে পারে না।

সম্পূরক বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা সরকারের সক্ষমতা ক্রমশ বাড়ার কথা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি এ সরকারের সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাজেটের মাত্র ৭৬ শতাংশ আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি। যে রাজস্ব আদায়ের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সেই রাজস্ব আমরা কখনই আদায় করতে পারি না।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ নির্বাচন কমিশন কী ধরনের নির্বাচন করেছে -স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। কী ধরনের নির্বাচন হয়েছে, এখানে যে সদস্যরা রয়েছেন তারা আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলুক সংবিধান অনুযায়ী জনগণের প্রত্যেক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন কি না।

তিনি বলেন, তারা কয়জন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুক। যদি বিবেক থেকে থাকে আপনাদের নিজেদের উত্তর নিজেই পেয়ে যাবেন। কী ধরনের নির্বাচনের মাধ্যমে এ সংসদে এসেছেন। আমাদেরকে কথা দেওয়া হয়েছিল, এ সংসদের আমাদের কথা বলতে দেওয়া হবে। এ জন্য এ সংসদ নির্বাচিত নয় জেনেও আমরা সংসদে যোগ দিয়েছি। কারণ, আমাদেরকে মিটিং করতে দেওয়া হয় না। ভেবেছিলাম সংসদে জনগণ, আমার দল নিয়ে কথা বলতে পারব। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য এ সংসদের সরকারি দলের এমপিদের এতটুকু ধৈর্য নেই আমার কথা শুনবার।

রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে আইন আছে, আদালত আছে। কিন্তু আইনের শাসন নেই। সে কারণে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে গত এক বছরে বিচার বর্হিভূত ৪৫০টি হত্যা হয়েছে। এ বিচার বর্হিভূত হত্যা কত জঘন্য ঘটনা, কোনো সভ্য রাষ্ট্রে তা চলতে পারে না। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের রিপোর্ট মতে, গত এক দশকে গুম হয়েছে ৬শ’ এর উপরে। আমার সুযোগ হয়, এ গুম হওয়া পরিবারের সঙ্গে বসার। তারা এখন শুধু লাশ চায়, যাতে একটু কবর দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গত এক মাসে মৃত্যু উপত্যকা বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৬৮টি। বাংলাদেশ এখন ধর্ষণের রঙ্গমঞ্চ। আমার দুঃখ লাগে স্পিকার এ সংসদের একজন নারী এমপিও এ নিয়ে কথা বলেন না। বাংলাদেশে এখন এক বছর থেকে শুরু করে ১০০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিত হচ্ছে। কিন্তু কোনো বিচার হয় না। কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত বা সুবিধাভোগী তারাই এ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত।

এ সময় সংসদে ধর্ষণের তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন তিনি। এছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইনের সমালোচনা করেন। মন্দ ঋণের তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটের টাকা কোথায় যায়, কার হাতে যায় তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।

বাংলাদেশে থেকে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা সম্পর্কে বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, এ টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি হয়। এ টাকায় কানাডায় বেগম পাড়া তৈরি হয়। পানামা পেপারে নাম আসে কিন্তু বিচার হয় না। এ দেশে গরিবের সোনা তামা হয়ে যায়। পাথর চুরি হয় যায় কিন্তু বিচার হয় না।



সৌজন্যে : জাগোনিউজ২৪

সিলেটভিউ ২৪ডটকম/১৬ জুন ২০১৯/গআচ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.