Sylhet View 24 PRINT

ওই রাতে আবরারকে পিটিয়ে হত্যাকারীরা 'মাতাল' ছিলেন

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০১৯-১০-০৯ ১৩:০১:৪১

সিলেটভিউ ডেস্ক :: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার সময় ছাত্রলীগের অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা 'মাতাল' ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে  সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির তদন্তে।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারের ওপর নির্যাতন কয়েক ঘণ্টা ধরে চললেও তখন হল প্রশাসন 'নির্লিপ্ত' ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনটি।

ছাত্রলীগের তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদের দাবি, তদন্তে দোষীদের শনাক্ত করতে তাঁরা ওই ভিডিও ফুটেজ বিবেচনায় নিয়েছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সাধারণ শিক্ষার্থী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা।' তাঁদের সুপারিশের ভিত্তিতেই ছাত্রলীগ  সোমবার বুয়েটের ১১ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে বলে দাবি করেন রিয়াদ।

রিয়াদ বলেন, 'সেদিন রাতে (রোববার) যারা এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছে তারা পূজায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা মদ্যপান করেছিলেন। তারা সবাই মারাত্মক রকমের ড্রাঙ্ক ছিলেন। তাদের মধ্যে মানবিকতা বলে কিছুই ছিল না। সেখান থেকে এসে তারা একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আবরারকে তার ১০১১ নম্বর রুম থেকে ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে গিয়ে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আবরারের মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটে।

তার ভাষ্যমতে, আবরারকে নির্যাতনের ওই কক্ষে তিন থেকে চারজন শিক্ষার্থী থাকেন। অন্যান্য রুমের কিছু লোক এই নির্যাতনে অংশ নিয়েছিলেন।

নির্যাতনের সময় বাইরে থেকে কেউ চিৎকার-আর্তনাদ শোনার খবর জানা গেছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যখন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তখন এগুলো বাইরে যায় না। তখন দরজা-জানালা বন্ধ থাকে বলে আমরা জানতে পেরেছি। নির্যাতনের একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে আবরার মোবাইলে তাঁর বন্ধু ও সহপাঠীদের সাহায্য চেয়ে সাড়া পাননি বলে দাবি এই ছাত্রলীগ নেতার।

তিনি বলেন, 'তদন্তে আরো পেয়েছি, ওই রাতে বার্সালোনার খেলা ছিল। পূজা থেকে এসে আবরারকে শারীরিক নির্যাতনের পর তারা বার্সেলোনার খেলা দেখতে চলে গিয়েছিলেন। আবরার এই ফাঁকে তাঁর এক বন্ধুকে ফোন করে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর বন্ধু তাঁকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেননি। তিনি আসলে এমন একটি অপমৃত্যুর মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারত।'

সোমবার আবরার হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী শুরু হয়  প্রতিবাদ-সমালোচনা। একপর্যায়ে ইয়াজ আল রিয়াদের সঙ্গে  সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদারকে দিয়ে এই তদন্ত কমিটি করে ছাত্রলীগ।

রিয়াদ বলেন, 'কমিটি করার পর আমরা তৎক্ষণাৎ সেখানে যাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সাধারণ শিক্ষার্থী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্বে যারা আছেন সবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করি।'

২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হলেও তার আগেই কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

হলের মধ্যে অন্য ছাত্রদের হাতে নির্যাতিত হয়ে আবরারের মৃত্যুর জন্য প্রশাসনের 'দায়িত্বহীনতা ও নির্লিপ্ততাকেও' দায়ী করেছেন ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ। তিনি বলেন, 'হলের মধ্যে রাতভর কয়েক ঘণ্টা ধরে একটা ছাত্রকে নির্যাতন করা হলেও প্রশাসন কেন বিষয়টি জানতে পারল না? হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষকরা তাহলে কী দায়িত্ব পালন করলেন? এই ঘটনায় প্রশাসন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁরা কোনোভাবেই এর দায়ভার এড়াতে পারেন না।'

ফেইসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারো মত প্রকাশে ছাত্রলীগ বাধা হতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন রিয়াদ।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, 'ছাত্রলীগ কখনও কারো ব্যক্তিগত মত প্রকাশে হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাখে না। এমনটি করার অধিকারও নেই। যার যার মত তিনি প্রকাশ করবেন। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কেউ যদি কারও মত প্রকাশের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে নিজের মতামত প্রকাশ করার। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেউ যদি কারও মত প্রকাশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অপকর্ম করে তাহলে ছাত্রলীগ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।'

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/০৯ অক্টোবর ২০১৯/মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.