আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং
সিলেটভিউ ডেস্ক :: বাউল গানের বিশ্ব ঐতিহ্য যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে জাতীয় সংসদে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাউল গানের সঙ্গে সম্পৃক্তরা এমন কোনো কাজ করবেন না যা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আজকে বাউল গান বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে সেটা আমরা দেখব। তবে অহেতুক চুল কাটা বা বাউল গানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা এটা গ্রহণযোগ্য না।
বুধবার জাতীয় সংসদে হাসানুল হক ইনুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। রাজবাড়ী জেলার পাংশায় এক বাউলের চুল কেটে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাউল গানকে বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান করতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, সেটা আমরা অর্জন করেছি। বাউল গানের তো কোনো দোষ নেই। কিন্তু বাউল গান যারা করে বা ব্যক্তি বিশেষ সে যদি কোনো অপরাধে সম্পৃক্ত হয়, তাহলে আইন তার আপন গতিতে চলবে। আইনে যে ব্যবস্থা নেয়ার সেটা নেবে। এটার সঙ্গে গানের সম্পৃক্ততা নেই।
প্রশ্নকারীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনি কি এই নিশ্চয়তা দিতে পারবেন? যারা বাউল গান গাইছেন, আর বাউল গান গাইছেন বলেই যে তারা কেউ অপরাধ ছাড়া, অপরাধের ঊর্ধ্বে, কোনো অপরাধ করেন না বা করেননি। এটা তো ঠিক না। কে কি করছেন, ব্যক্তি বিশেষ, সেটার হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিশ্চয়ই কোনো অপরাধের সঙ্গে সংযুক্ত বলে বা অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কাজেই বিষয়টার সঙ্গে ঐতিহ্যের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং বলব এরা এমন কোনো কাজ যেন না করে, আজকে যে বাউল গান বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে, সেটা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সেই ধরনের কাজ যেন তারা না করেন। সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন করা দরকার এবং সচেতন হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে যখনই সামরিক সরকাররা ক্ষমতায় আসে তখন ঘোষণা দেয় আজ থেকে আমি রাষ্ট্রপতি হলাম। হলাম বলেই কাজ শুরু হয়ে যায়। পরিষ্কার করা শুরু হয়ে যায়। কেটে-কুটে ছাপ করে, কেউ সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে পরে দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে দামি গাড়ি নিয়ে চলছে। কেউ টি-শার্ট পড়ে নেমে গেল পরে দেখা যায় পেরিস থেকে স্যুটকোর্ট নিয়ে আসছে। এগুলো তো দেখেছি। এগুলো বেশি দিন থাকে না, ৬ মাস।
সংসদ নেতা বলেন, এখনও কেউ যদি কিছু করে থাকে, অপরাধ যদি করে আমরা দেখব যথাযথ ব্যবস্থা নেব। অহেতুক কারও চুলকাটা বা গানে প্রতিবন্ধকতা করা এটা মোটেই গ্রহণযোগ্য না।
তিনি বলেন, কুষ্টিয়ায় বাউলের ওই জায়গায় উন্নয়ন আওয়ামী লীগ সরকারই করে দিয়েছে। সেখানেও বাধা পেয়েছি। প্রথমবার করতে গেলাম, তখন অনেকেই বাধা দিয়েছে। ঝুপড়ি, টুপড়ি করে তারা ওভাবেই থাকবে। পরে সুন্দর করে ঘর করে দেয়া হয়েছে বাউল গানের ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য। সে কারণে তো বাউল গান বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ধনী, গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার ব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সামাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারে যেমন বহুমাত্রিক অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি প্রযুক্তি ব্যবহার করেই অপরাধীদের আইনের জালে ধরে ফেলা হচ্ছে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, আমাদের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দুর্নীতির মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা, গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের দুর্নীতির মামলাসহ অন্যান্য চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
সৌজন্যে :: যুগান্তর
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২২ জানুয়ারি ২০২০/জিএসি