Sylhet View 24 PRINT

অনুমান করেই দেওয়া হয় খাদ্যপণ্যের মেয়াদ!

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-১৮ ১০:৩৩:৩৮

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মোড়কজাত খাদ্যপণ্যের গায়ে মেয়াদ ও উৎপাদনের তারিখ নির্ধারণে পণ্য পরীক্ষা করার নিয়ম হলেও তা মানছে না অনেক কোম্পানি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কেবল অনুমানের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয় পণ্যের মেয়াদ। এমনকী অনেক কোম্পানির ‘সেলফ লাইফ স্টাডি’ করার সুবিধা পর্যন্ত নেই। তাই কীসের ভিত্তিতে পণ্যে মেয়াদ নির্ধারণ করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। আগামী ৭ মার্চের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যপণ্যের মেয়াদ নির্ধারণে বৈজ্ঞানিক কোনও নীতিমালা নেই। তবে যার যার উৎপাদিত খাদ্য কোম্পানিগুলো নিজ নিজ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করলেই পণ্যটি কতদিন পর্যন্ত খাবার উপযোগী থাকবে, অর্থাৎ ‘সেলফ লাইফ স্টাডি’ কতদিন, তা জানতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যপণ্যের মেয়াদের জায়গায় ‘ইউজ বিফোর’, ‘সেল বাই’, ‘এক্সপায়ারস অন’—এই ধরনের কয়েকটি টার্ম ব্যবহার করা হতো। এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হতো। এ অবস্থায় খাদ্য অপচয় রোধসহ জনমনে বিভ্রান্তি দূর করতে ব্যবসায়ীদের শুধু ‘বেস্ট ইফ ইউজড বাই’ (অর্থাৎ সর্বোচ্চ যে তারিখের মধ্যে ব্যবহার করা নিরাপদ) উল্লেখ করার আহ্বান জানায় এফডিএ।

এফডিএ-এর মতে, যেখানে পণ্য উৎপাদনকারীরা ভুল তথ্য দিয়ে লেবেল বানায় না, সেখানে মেয়াদের প্রয়োজন নেই। কারণ, পণ্য উৎপাদকের এই তারিখ প্রদর্শনের জন্য কোনও অনুমোদন নিতে হয় না। নিজেদের পণ্য নিজেদেরই পরীক্ষা করে তারিখ দিতে হয়।

মেয়াদ নির্ধারণে বৈজ্ঞানিক কোনও গাইডলাইন না থাকায় দেশে খাদ্যপণ্যের মেয়াদ অনুমান করেই বসানো হচ্ছে বলে জানাচ্ছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখতে সব প্রতিষ্ঠানের কাছে মেয়াদ পরীক্ষার তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে জরিমানাসহ পণ্য উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুব কবীর।

তিনি বাংলা গণমাধ্যকে বলেন, ‘খাদ্যপণ্যের মেয়াদ ঠিক করা গবেষণার বিষয়। বাইরে থেকে গাইডলাইন নেওয়া যায়। যেমন বিস্কুটের আর্দ্রতা কখন পরিবর্তন হবে, কখন ড্যাম হবে, কখন ফাঙ্গাস আক্রান্ত হবে—এটা সব বিজ্ঞানী জানেন। বিদেশে কোম্পানিগুলো নিজেদের ল্যাবে এসব টেস্ট করে। আমাদের কয়েকটি বড় কোম্পানির নিজস্ব ল্যাব আছে। এই দুই-একটা কোম্পানি ছাড়া বাংলাদেশে সবাই আন্দাজে মেয়াদ দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এবার যখন প্রতিবেদন চেয়েছি, এবার তারা ধরা খাবে। যদি কোনও উৎপাদনকারী পরীক্ষা করে বিস্কুটের তারিখ দেয় তাহলে তার পুরা গবেষণার কাগজ থাকার কথা। কী পরীক্ষা করেছে এবং তার ফল কী, সবই থাকার কথা। প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেবো। এক্ষেত্রে জরিমানার সুযোগ আছে এবং উৎপাদন বন্ধ করে দেবো আমরা।’কোনও দেশের কর্তৃপক্ষ এই মেয়াদ নির্ধারণের গাইডলাইন দেয় না উল্লেখ করে মাহাবুব কবীর বলেন, ‘উৎপাদনকারীদের নিজেদেরই এই পরীক্ষা করে তারিখ নির্ধারণ করতে হয়।’

তবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) দাবি, কোম্পানিগুলোর খাদ্যপণ্য পরীক্ষা করার সুযোগ-সুবিধা আছে। তা না হলে বিএসটিআই লাইসেন্স দেয় না।

প্রতিষ্ঠানটির সার্টিফিকেশন মার্ক (সিএম) উইংয়ের পরিচালক সাজ্জাদুল বারী বাংলা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনও কোম্পানি তাদের প্রোডাক্টের সেলফ লাইফ কীভাবে দেবে, এটা তাদের ওপর নির্ভর করে। এটা আমরা দিই না। একটি মুড়ির মেয়াদ কেউ তিন মাস দেয়, আবার কেউ দেয় এক বছর। যার যে পণ্য যতদিন টেকে সেই বৈজ্ঞানিক নিয়ম অনুযায়ী তারিখ দেয় তারা।’

তবে মনিটরিং করার মতো প্রতিষ্ঠান নেই বলে স্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘পণ্য টেস্টের ল্যাবরেটরি থাকতে হয়। তা না হলে তো আমরা লাইসেন্স দিই না।’

বিস্কুট কিংবা রুটিতে কীভাবে মেয়াদ দেওয়া হয় জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড মেন্যুফেকচারার অ্যাসসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভুঁইয়া এই বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।

সৌজন্যে : বাংলা ট্রিবিউন

সিলেটভিউ২৪ডটকম/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০/মিআচৌ

সম্পাদক : মো. শাহ্ দিদার আলম চৌধুরী
উপ-সম্পাদক : মশিউর রহমান চৌধুরী
✉ sylhetview24@gmail.com ☎ ০১৬১৬-৪৪০ ০৯৫ (বিজ্ঞাপন), ০১৭৯১-৫৬৭ ৩৮৭ (নিউজ)
নেহার মার্কেট, লেভেল-৪, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.