আজ শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ইং

মাড় না ফেললে বাঁচবে ৫০ লাখ টন চাল

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২০ ২১:০৫:০৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: রান্নার পর ভাতের মাড় না ফেললে বছরে ৫০ লাখ টন চাল সাশ্রয় হবে। রান্না করা চালের শতকরা ১৪ ভাগ মাড়ের সঙ্গে ফেলে দেশের মানুষ। বর্তমানে ছয়জন যে পরিমাণ ভাত খান, মাড়সহ রান্না করা সেই পরিমাণ চালের ভাত সাতজনে খেতে পারবেন। এমন তথ্য দিয়েছেন কৃষিবিদ, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানীসহ কৃষি কর্মকর্তারা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট (আইডিইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন : খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তাঁরা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, ‘বর্তমানে দেশে প্রায় তিন কোটি ৮০ লাখ টন ধান উৎপাদন হচ্ছে। মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে প্রায় চার কোটি ৩২ মেট্রিক টন। আমাদের দেশের মানুষ ভাত রান্না করে মাড় ফেলে দেন। ওই মাড়ের সঙ্গে ভাতের পুষ্টি ও খাদ্যগুণের একটি বড় অংশই ফেলে দেওয়া হচ্ছে। মাড় যাতে ফেলতে না হয়, এমন পদ্ধতিতে রান্না করার আহ্বান জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাত হোসেন সরকার।

আইডিইবির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন কৃষিবিদ এম আমিনুল আহসান আমিন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচলক ড. মো. আবদুল মুঈদ, হাউজ ব্লিডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম উদ্দিন, অর্থনীতিবিদ ড. মো. আসাদুজ্জামান, কৃষি তথ্য সাভিসের পরিচালক মো. আসাদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিজেএফের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কাওসার রহমান।

কৃষিবিদ আমিনুল আহসান বলেন, ‘আগে আমরা ঢেকিছাটা চালের ভাত খেতাম। ওই চালের খাদ্যগুণ অনেক বেশি। বর্তমানে চাল দেখতে সুন্দর ও সরু। এতে চালের ওপরের একটি অংশ ফেলে দিতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হচ্ছে ভাত রান্নার পদ্ধতিতে। বর্তমানে দেশের মানুষ যে পদ্ধতিতে ভাত রান্না করছেন, এতে চালের খাদ্যমান ও গুণ অনেক ফেলে দিতে হচ্ছে। মাড়সহ রান্নার পদ্ধতি বের করতে হবে আমাদের। এতে বছরে ৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল সাশ্রয় হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খড়া ইত্যাদির কারণে শুধু কৃষিই নয়, মানুষের চিরচেনা স্বাভাবিক জীবন প্রবাহই আজ ব্যহত। দেশের ৪০শতাংশ লোক কৃষির সাথে সরসরি জড়িত। ভবিষ্যৎ মেধাবী জাতি গঠনে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত জরুরি।’

সেমিনারে আলোচকরা আরো বলেন, ‘কার্বন নিঃস্বরণ বন্ধ করতে হবে। খাদ্যের গুণগত মান বিচার না করে শুধু স্বাদের ওপর প্রাধান্য না দেয়া। খাদ্যভ্যাস ও রান্নভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমরা ঠিক কোন কোন সমস্যায় পড়তে কৃষি খাতে আগে থেকেই নির্ধারণ করে সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছে। খাদ্য নিরাপত্তা আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত।’

‌সৌজন্যে : এন টিভি
সিলেটভিউ২৪ডটকম/২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০/জিএসি

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন