আজ মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ইং

লাইফটাই শেষ হয়ে গেল: পাপিয়া

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০২-২৬ ১১:৫৮:০৬

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মাদক ব্যবসা, হোটেলে তরুণী সরবরাহ, অবৈধ অস্ত্র ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্লাকমেইলিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া এখন ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে। অবৈধ কর্মকাণ্ডে দাবিয়ে বেড়ানো এই নেত্রী এখন বিমর্ষ। ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কাও কাজ করছে তার মধ্যে।

পাপিয়ার মধ্যে অপরাধবোধ কাজ না করলেও এতটুকু বুঝতে পেরেছেন ইমেজে যে কালিমা পড়েছে তাতে তার ভবিষ্যত অন্ধকার।

সোমবার বিকালে ঢাকার হাকিম আদালতে তিন মামলার রিমান্ড শুনানির সময় তাকে উৎকণ্ঠিত দেখা গেছে। বিচারক পরিবর্তনের ফাঁকে এক আইনজীবীকে পাপিয়া বলেন, ‘আমার লাইফটাই শেষ হয়ে গেল!’

এদিন বেলা ৩টা ২৯ মিনিটে প্রথমে পুরুষ আসামিদের কাঠগড়ায় তোলা হয়। নারী পুলিশ সদস্যরা পাপিয়াসহ দুই নারী আসামিকে কাঠগড়ায় না নিয়ে আইনজীবীদের চেয়ারে বসানোর চেষ্টা করেন। তবে উপস্থিত আইনজীবীদের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত অপরাধ জগতের এই রাণীকে কাঠগড়ায় তোলা হয়।

কালো স্কার্ফ ও লেস দেয়া লিলেনের সালোয়ার কামিজ পরা পাপিয়া কাঠগড়ায় উঠে শুরুতে মাথা নিচু করে মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিছু সময় পর তাকে মুখ তুলে দুপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনেন। এ সময় তাকে খুবই বিমর্ষ দেখা যায়। আইনজীবীদের কথা বলার সময় মাঝে কয়েকবার স্বামী সুমনের সঙ্গেও আলাপ করেন পাপিয়া। তবে সুমন এবং তাদের দুই সহযোগীকে এসময় নির্বিকার দেখা গেছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন এ সময় আদালতকে বলেন, চাকরি দেয়ার নাম করে পাপিয়া বিভিন্ন লোককে ব্ল্যাকমেইল করত, নারীদের বিনোদনের কাজে লাগাত। বিত্তবানদের মনোরঞ্জনের জন্য বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে যেত আমন্ত্রণ করে। পরে সেসব নারীর সঙ্গে তাদের ছবি ও ভিডিও রেখে ব্ল্যাকমেইল, হয়রানি করত, অর্থ আদায় করত। এসব অপরাধের মূলহোতা পাপিয়া।

এরপর একজন আইনজীবী কাঠগড়ার সামনে এসে পাপিয়া এবং তার স্বামীকে বলেন, ‘আপনারা যদি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, তাহলে পুলিশের শেখানো কোনো কিছু বলবেন না।’

এ সময় পাপিয়াকে হতাশা প্রকাশে করে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কী অপরাধ করলাম!’

অন্য দুই মামলায় শুনানির জন্য নতুন হাকিম এজলাসে এসে আসন নিলে কিছুটা বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকাতে দেখা যায় পাপিয়াকে।

আদালত চলাকালে বিচারক পাপিয়াসহ অন্য আসামিদের কিছু জিজ্ঞাসা করেননি, তারা নিজে থেকে কোনো কথা বলেননি।

আদালত থেকে বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন পাপিয়া ও তার স্বামীকে। এ সময় পাপিয়া নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন। মাথায় ওড়না দেয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় পাপিয়ার স্বামী সুমন কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি পুলিশকে জিজ্ঞেস করেন পাপিয়ার সঙ্গে এমন আচরণের কারণ কী? পুলিশ সদস্যরা বলেন, ছবি তোলার সুযোগ দিতে হবে, চেহারা ঢাকা যাবে না।

এদিন পাপিয়াকে দেখতে আদালতে ভিড় করেন বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয় পাপিয়াকে। এর পর কাঠগড়ার পাশে একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। এ সময় পাপিয়াকে না দেখতে পেয়ে সেখানে উপস্থিত বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, ‘তাকে কাঠগড়ায় উঠানো হচ্ছে না কেন?’ বিচারক এজলাসে আসেন ৩টা ৪৫ মিনিটে। এর পর পাপিয়াকে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। ছবি তুলতে চাইলে আসামি শেখ তায়্যিবা এক সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি ছবি উঠাচ্ছেন কেন?’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ (২৮) চারজনকে আটক করে র‌্যাব-১। পাপিয়া নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।

সৌজন্যে : যুগান্তর

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন