আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

হাসপাতালে ৭০ বছরের বৃদ্ধকে ফেলে পালালেন স্বজনরা

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-২৯ ১৩:৫২:২৯

সিলেটভিউ ডেস্ক :: মিথ্যা পরিচয় ও ঠিকানা দিয়ে ৭০ বছরের গুরুতর অসুস্থ এক বৃদ্ধকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে পালিয়েছেন তার স্বজনরা।

গত চার দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছেন ওই বৃদ্ধ।

হাসপাতাল ও বাজিতপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ নাম-ঠিকানা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন ওই বৃদ্ধ উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মৃত পরশ চন্দ্র সাহার ছেলে প্রদীপ সাহা। বয়স দেয়া হয়েছে ৫৮ বছর। কিন্তু প্রকৃত অর্থে তার বয়স ৭০ বছরের বেশি হবে।

শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানায়। এর পর উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলমকে হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ নাম-ঠিকানার সূত্র ধরে স্বজনদের খুঁজে বের করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে এই ঠিকানার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

ওই উপপরিদর্শকের মতে, ভুল ঠিকানা দিয়ে স্বজনরা হয়তো পালিয়েছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বিপ্লব সাহা পরিচয়ে একজন পাঁচ দিন আগে ওই বৃদ্ধকে মুমূর্ষু অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তিনি রেজিস্ট্রারে ইংরেজিতে তার নামও বিপ্লব সাহা লিখেছেন এবং তার মোবাইল নম্বর লিখতে বললে তা না লিখেই সুযোগ বুঝে বৃদ্ধকে ফেলে চম্পট দেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি নিজের নামসহ রোগীর ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়েছেন।

তার মতে, সঙ্গে আসা লোকটি যে রোগীর নিকটাত্মীয় ছিলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

মুশফিকুর রহমান আরও জানান, এ অবস্থায় মুমূর্ষু ওই রোগীকে ২৫০ শয্যার কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরের কথা বললেও তিনি রাজি না হয়ে রেজিস্ট্রারে অঙ্গীকারপত্র দেন, রোগী মারা গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, এ বৃদ্ধকে নিয়ে তারা টেনশনে আছেন।

তিনি এ সময় আক্ষেপ করে বলেন, কোনো বয়স্ক লোকের প্রতি পরিবার ও স্বজনদের এমন অমানবিক আচরণ কখনও দেখিনি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, ওই বৃদ্ধ প্রকৃতপক্ষে স্ট্রোকের রোগী।

বর্তমানে তিনি শিশু ওয়ার্ডের একটি বেডে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তার পিঠ ও পেছনের দিকে ক্ষত হয়ে গেছে। সাধারণত এ ধরনের সমস্যার রোগীদের দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকার কারণে পিঠে এমন অবস্থা হয়ে থাকে।

ওই বৃদ্ধের কথাবার্তাও অসংলগ্ন। নাম বলতে না পারলেও বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে তিনি একবার কামালপুর আরেকবার সচারচর বলছেন।

সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান আরও জানান, ওই বৃদ্ধের উপযুক্ত চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

সৌজন্যে :যুগান্তর

সিলেটভিউ২৪ডটকম/২৯ মার্চ ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন