আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ইং

শিবগঞ্জে একটি লাশ দাফন নিয়ে এতো ঝামেলা?

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৩-৩১ ১৩:০১:৫৫

সিলেটভিউ ডেস্ক :: ঢাকা থেকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে বগুড়ায় ফেরা ব্যবসায়ীর (৫০) মৃত্যুর পর তার লাশ কবর দেওয়া নিয়ে ঝামেলা বাধে। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের চেষ্টায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। পরে ওই ব্যক্তিকে কবর দিতে গিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার কুদরত এ খুদা লিখেছেন, ‘একটি লাশ দাফন করে এভাবে স্ট্যাটাস দিয়ে জানাতে হবে তা কখনো ভাবিনি। মানুষের মাঝে মানবিকতা জাগাতে এতটা গলদঘর্ম হতে হবে, তা কখনো জানা ছিল না।

সকাল থেকেই নানা বাধা-বিপত্তি আর নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে শনিবার রাত পৌনে ৮টার সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে পুলিশের উদ্যোগেই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হলো!!’

তিনি আরও লিখেন, ‘দাফন কাজে বাধা দেওয়ার খবর শোনা মাত্রই এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত দুই প্লাটুন স্পেশাল আর্মড ফোর্স প্রেরণ করা হয়।

কয়েকজন দুষ্ট লোক এলাকায় ভুল বুঝিয়ে কয়েক হাজার লোক জড়ো করেন!! শিবগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান মানুষকে বুঝিয়ে ঘরে ফেরান।’

এরপর দাফনে আরও বিপত্তির কথা লিখেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি লিখেন, ‘কিন্তু কবর খোড়ার লোক কোথায়??? শিবগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোস্তাফিজ আর এসআই আহসান আরও দুজনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন কবর খুড়তে!! অবশেষে লাশ দাফন হলো!!

একজন ব্যক্তি পেল তার মৃতদেহের সঠিক মর্যাদা। আমরা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দোয়া পড়লাম।’ দাফনের পর নিহত ব্যক্তির স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, ‘জানাজার সময় আমাদের কাউকে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি।’

শনিবার সকালে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহ গ্রামের এক ভাড়াবাসায় মারা যান ওই ব্যবসায়ী। তিনি কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের মুরইল দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা। তার মৃত্যুর পর ওই বাড়িটিসহ ১০টি বাড়ি লকডাউন করেও দেয় প্রশাসন।

এদিন সকালে বগুড়া জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, আইইডিসিআর পিপিই দিয়ে লাশ আবৃত করে দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ঢাকার এ ব্যবসায়ীর মৃত্যুর কারণ করোনাভাইরাস-এমন সন্দেহ হওয়ায় তার নাক থেকে নমুনা নিয়ে ঢাকায় পাঠাতে বলেছিলেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যাবতীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করছে।

উল্লেখ্য, সরকারি হিসেবে দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন; যাদের মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়ে গেছেন।

সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩১ মার্চ ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন