আজ বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ইং

করোনা আতঙ্কের মধ্যে মশা দেখাচ্ছে ডেঙ্গুর ভয়

সিলেটভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম, ২০২০-০৪-০৩ ০২:১২:৩৭

সিলেটভিউ ডেস্ক :: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে পুরো দেশ থম থমে। বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে বাসায় থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এদিকে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ঘরে থাকা এসব মানুষ। বিগত কয়েক দিনে মশার উৎপাত বেড়েই চলছে। বাসা বাড়িতে দিন রাত সমানভাবে কামড়াচ্ছে। একদিকে করোনা নিয়ে ভয়, অপর দিকে মশার উপদ্রবে নাকাল নগরবাসী।

বর্ষার আগেই মশা বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীকে তাড়া করছে গত মৌসুমের ডেঙ্গুর ভয়। দিনের আলো কমে গেলে ঘরে-বাইরে মশার গুনগুন শব্দ বেড়ে যায়। রাস্তা কিংবা বাড়ির ছাদে দাঁড়ালেই মাথার ওপর মশাদের জটলা দেখা যাচ্ছে। দেশে করোনা রোগী শনাক্তের পর থেকে মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এখনি মশা মারার উদ্যোগ না নিলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কয়েকদিন আগেও সরকার প্রধান মশার বিস্তার নিয়ে কথা বলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শীতের মৌসুম যেতে না যেতেই ঢাকার ২ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন একালায় মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। রাস্তাঘাট,বাসা-বাড়ি, অফিস- আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই মশার প্রকোপ দেখা দেয়। মশা নিধণকর্মীদেরকে প্রধান প্রধান সড়ক ও নামী এলাকায় ওষুধ বেশি পরিমানে ছিটাতে দেখা গেলেও নগরের অনুন্নত এলাকা, বস্তি, রাস্তার পাশের ময়লার ভাগাড়, ঝোপঝাড় ও বাসা বাড়ির আনাচে-কানাছে  ওষুধ ছিটাতে তেমন একটা দেখা যায়নি। সিটি করপোরেশন মশা নিধনে কাজ করলেও তা সন্তোষজনক নয়। ফলে দিনে দিনে বেড়েছে মশার সংখ্যা।

চলতি বছরের ১লা ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া ঢাকা ২ সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলরগণ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মশা নিধণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। ফলে নগরবাসী দিন পার করছেন নানা উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দ শাহীন জানান, অফিস বন্ধ থাকায় বাসায় বসে কাজ করতে হচ্ছে। বাসায় মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। দিন রাত সব সময় কামড়ায়। এতো মশা আগে কখনো দেখিনি। এখন ভয় কাজ করছে। করোনার ভয়ে বাসায় আছি। মশার ভয়ে যাবো কই। কয়েল কিংবা অ্যারোসল কোনটায় কাজ হচ্ছে না। গত বছর মশার কামড়ে যে পরিমান লোক ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে মারা গেছে। এবার যেন কি হয়।

বাড়িওয়ালা রেজাউল করিম বলেন, আমি বাড়ির মালিক। মোহাম্মদপুরেই ২টা বাড়ি ভাড়া দেই। সব সময় আমি নিজেই দেখাশুনা করি। সিটি নির্বাচনের পর থেকে মশা মারার ওষুধ ছিটাতে কাউকে দেখিনি। ভোটের সময় তো সবাই মশা নিধন করার কথা বলছেন। বাস্তবতা আমাদের সাথে প্রতারণা করছে সিটি করপোরেশন। হোল্ডি অনুযায়ী তো সব কর দিয়েই থাকি। তবুও কেন আমরা সেবা পাচ্ছি না। মশার কামড়ে আমার হাত পায়ে এলার্জি হয়ে গেছে। করোনার সংঙ্গে মশার আতঙ্কও বাড়ছে। রাজধানীর শেওড়া পাড়া, মিরপুর ১, কল্যানপুর, আদাবর ও মোহাম্মদপুর ঘুরে জানা যায়, এসব এলাকায় মশার ঘনত্ব অনেক বেশি।।সারাক্ষণ দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘরের ভেতরে রেহাই মিলছে না মশার কামড় থেকে। এসব এলাকায় ড্রেন ও খাল থাকায় সেখানে ময়লা আবর্জনা ও পলিথিনে পানি জমে থাকায় কিউলেস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এসব নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এগুলো মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যার ফলে ব্যাপকহারে মশার উপদ্রব বেড়েছে। দিনের বেলায় মশার উপদ্রবে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হয়। সন্ধ্যা নামলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়।

হাতিরঝিলের বাসিন্দা সুলতানা বেগম জানান, মশার কামড়ে অতিষ্ঠ তারা। স্কুল বন্ধ থাকায় সন্তানরা বাসায় থাকবে, এখন মশার কামড়ে বাসায় রাখতে পারছিনা।  হাত-পা শরীর চুলকায়। মশার ওষুধ দিতে তো দেখলাম না অনেক দিন। নিঃশ্বাসের সঙ্গে নাকে মুখে মশা ঢুকে যায়। কোনো কাজ করা যায় না। লেখাপড়া করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

সৌজন্যে : মানবজমিন

সিলেটভিউ২৪ডটকম/৩ এপ্রিল ২০২০/মিআচৌ

শেয়ার করুন

আপনার মতামত দিন